রাজধানীকে ভিক্ষুকমুক্ত করার উদ্যোগ by এস এম আববাস

আগামী ৩১ জানুয়ারির মধ্যে (বুধবার বা বৃহস্পতিবার) গুলশান, বনানী ও ধানমন্ডি ভিক্ষুকমুক্ত এলাকা ঘোষণা করবে সরকার। পুরো রাজধানী ভিক্ষুকমুক্ত করতেই এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন ভিক্ষুক পুনর্বাসন প্রকল্পের পরিচালক আবদুল মাবুদ বাংলানিউজকে বলেন, জানুয়ারিতেই রাজধানীর ভিআইপি এলাকাকে (গুলশান, বনানী ও ধানমণ্ডি) ভিক্ষুকমুক্ত ঘোষণা করা হবে। পর্যায়ক্রমে পুরো রাজধানীকেই ভিক্ষুকমুক্ত করা উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ভবঘুরে ও নিরাশ্রয় ব্যক্তি (পুনর্বাসন) আইনের আলোকেই এ কর্মসূচি হাতে নেওয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি।
প্রকল্প পরিচালক আরো বলেন, ময়মনসিংহে ভিক্ষুকদের পুনর্বাসন করা হলেও পরবর্তীতে তারা আবার রাজধানীতে ফিরে এসেছেন। রাজধানীকে ভিক্ষুকমুক্ত করা না গেলে তাদের পুনর্বাসন করা কিংবা দেশের অন্য কোথাও ভিক্ষুকমুক্ত করা সম্ভব হবে না। তাই প্রাথমিকভাবে রাজধানীকে ভিক্ষুকমুক্ত করা হবে।

প্রকল্প পরিচালক জানান, রাজধানীকে ভিক্ষুকমুক্ত করতে একটি স্টিয়ারিং কমিটি গঠন করা হয়েছে। আন্ত:মন্ত্রণালয় বৈঠকও হয়েছে। এ কাজে ম্যাজিস্ট্রেটরা নিয়োজিত থাকবেন।

সংবিধানের ১৫ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী রাষ্ট্রের সব নাগরিকের জন্য বাসস্থানের ব্যবস্থা করার জন্য সচেষ্ট থাকার কথা। সে লক্ষ্যে বর্তমান সরকার ভবঘুরে ও নিরাশ্রয় ব্যক্তি (পুনর্বাসন) আইন’২০১১ জাতীয় সংসদে পাস করে।

আইন অনুযায়ী নিরাশ্রয়দের আশ্রয় দিতে গত বাজেটে ২২ হাজার ৭৫০ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। ভিক্ষুক পুনর্বাসন প্রকল্পও হাতে নেয় সরকার। প্রকল্পের আওতায় নগরীর ১০ হাজার ভিক্ষুকের ওপর জরিপ চালানো হয়। জরিপের আওতায় এসব ভিক্ষুকদের মধ্য থেকে ২ হাজার ভিক্ষুককে ঢাকা, ময়মনসিংহ, বরিশাল ও জামালপুরে পুনর্বাসনের উদ্যোগ নেওয়া হয়। কিন্তু এ কার্যক্রমে ব্যর্থ হয় সরকার। প্রকল্প বাস্তবায়নে দুর্নীতি ও অর্থনৈতিক অনিয়মের অভিযোগও ওঠে। 

গত ১২ নভেম্বর প্রকল্পের অর্থিক দুর্নীতি খতিয়ে দেখতে সমাজকল্যাণ বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কামিটি তিন সদস্যের উপ-কমিটি গঠন করে। এ উপ-কমিটিকে দুই মাসের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিল করতে নির্দেশ দেওয়া হয়।

উপ-কমিটির এ উদ্যোগের পর প্রকল্পটিকে গতিশীল ও কার্যকর করতে পুরো রাজধানীকে ভিক্ষুকমুক্ত করার উদ্যোগ নেওয়া হয়।

প্রসঙ্গত: আইন অনুযায়ী ভবঘুরে ও নিরাশ্রয় ব্যক্তিকে আশ্রয়দানের জন্য সরকারি অভ্যর্থনাকেন্দ্র এবং সরকারি বা বেসরকারি আশ্রয়কেন্দ্র প্রতিষ্ঠার কথা বলা হয়েছে। ঢাকা ও ঢাকার বাইরের জেলায় এক বা একাধিক সরকারি আশ্রয়কেন্দ্র স্থাপন এবং বেসরকারি আশ্রয়কেন্দ্রের নিয়ন্ত্রণ, তত্ত্বাবধান ও পরিচালনা করার নীতিও গ্রহণ করা হয়েছে। বর্তমানে দেশে এ ধরনের ছয়টি আশ্রয়কেন্দ্র রয়েছে, যার প্রধানটির অবস্থান রাজধানীর মিরপুরে।

No comments

Powered by Blogger.