জামাটাও তাঁর সোনায় মোড়া

দামি গাড়ি বা অন্য কোনো জিনিসের প্রতি টান নেই। টান শুধু স্বর্ণালংকারে। তাই গায়ে রাশি রাশি স্বর্ণালংকার পরে ঘুরে বেড়ান। নাম তাঁর দত্ত ফুগে। বাড়ি ভারতের মহারাষ্ট্রের পুনেতে। লোকজন তাঁকে স্বর্ণমানব হিসেবেই চেনে। তাঁর পরনের স্বর্ণালংকারের ওজন প্রায় ১০ কেজি।
কয়েক কেজি স্বর্ণালংকার পরার অভ্যাসের কারণে প্রয়াত আইনপ্রণেতা রমেশ ওয়ানজালে পুনে শহরে প্রথম স্বর্ণমানব হিসেবে পরিচিতি পান। গত বছরের জুনে ব্যবসায়ী সম্রাট মোজে (৩০) গায়ে সাড়ে আট কেজি স্বর্ণালংকার পরে ঘুরে বেড়ানো শুরু করেন। তাঁকে লোকজন ডাকে দ্বিতীয় স্বর্ণমানব নামে। এবার আবির্ভূত হলেন দত্ত। দত্ত (৪২) শরীরে শুধু নানা অলংকারই পরেন না, গায়ের জামাটাও বানিয়ে নিয়েছেন স্বর্ণ দিয়ে।
দত্তের জামায় সেলাই করা আছে প্রায় সাড়ে তিন কেজি স্বর্ণ। এর বাইরে চেন, ব্রেসলেট, কানের দুল, গলার হারসহ অলংকার আছে ছয় থেকে সাড়ে ছয় কেজি ওজনের। কয়েক বছর ধরে অলংকার পরলেও স্বর্ণ দিয়ে জামাটা তৈরির ধারণাটা তাঁর নতুন। সব মিলিয়ে তাঁর গায়ে স্বর্ণ থাকে সোয়া তিন কোটির রুপি মূল্যের। শুধু জামার দামই এক কোটি ২৭ লাখ রুপি।
পেশায় ফিন্যান্স ব্রোকার দত্তের স্ত্রী সীমা ফুগে একজন সমাজসেবক। রাজনীতি করেন কেন্দ্রীয় কৃষিমন্ত্রী শারদ পাওয়ারের নেতৃত্বাধীন ন্যাশনালিস্ট কংগ্রেস পার্টির (এনসিপি)। দত্ত বলেন, 'আমি একজন মারাঠি। স্বর্ণালংকার পরার প্রতি মারাঠীদের সবসময়ই আকর্ষণ আছে। আমিও এর বাইরে নই।'
এত স্বর্ণালংকার আছে, তা সত্ত্বেও জামাটা কেন স্বর্ণ দিয়ে বানানো হলো- এমন প্রশ্নের জবাবে ফুগে বলেন, 'অন্য অনেকের মতো অডির মতো দামি গাড়ি বা অন্য কোনো জিনিসের প্রতি আমার আকর্ষণ নেই। আমার পয়সা আছে। তা আমি স্বর্ণের পেছনে বিনিয়োগ করতে চাইছিলাম। এমন কিছু করতে চাইছিলাম যাতে লোকে আমাকে স্বর্ণমানব বলে চেনে। এক মাস আগে একটি স্বর্ণালংকারের দোকানে গিয়েই জামার বিষয়টা মাথায় আসে।'
দত্ত জানান, জামাটি তৈরি করা হয়েছে ভেলভেট কাপড় দিয়ে। ওপরে সেলাই করা হয়েছে বিভিন্ন অলংকার। এটা এমনভাবে তৈরি করা হয়েছে যাতে সাধারণ জামার মতো ভাঁজ করে আলমারিতেও রাখা যায়। ২২ ক্যারেটের স্বর্ণগুলো জামায় সেলাই করতে ১৭ দিন লেগেছে। তৈরি করেছেন পুনের শীর্ষস্থানীয় একটি জুয়েলারি শপ। দত্ত বলেন, 'জামাটি আমি আজীবন পরতে চাই।'
দত্তের আরো একটি ইচ্ছা আছে। তা হচ্ছে ভবিষ্যতে এনসিপির টিকিটে পুনের শিরুর আসন থেকে লোকসভা নির্বাচনে প্রার্থী হওয়া। তবে সম্পদের প্রাচুর্য প্রদর্শনের স্বভাবের কারণে এনসিপি এর আগে ওয়ানজালে ও মোজেকে নির্বাচনে মনোনয়ন দেয়নি।
এনসিপির মতো একটি দল, যারা সম্পদের প্রাচুর্য বা দম্ভ প্রদর্শন পছন্দ করেন না, তাঁদের কর্মী হয়ে স্ত্রী সীমা তাঁর এই জামা পরার বিষয়টি সমর্থন করেন কিনা_এমন প্রশ্নের জবাবে দত্ত বলেন, 'তিনি (স্ত্রী) সমাজসেবায় নিয়োজিত বলে এনসিপির কর্মী হতে পেরেছেন। নিজের অধিকারের বিষয়ে আমি সচেতন। স্বর্ণমানব হওয়ার ইচ্ছেটা আমার সবসময়ই ছিল। হয়েছিও।' তবে স্বামীর একেবারেই বিপরীত স্বভাব সীমার। অলংকারবর্জিত সাধাসিধে সাজে থাকতেই তাঁর ভালো লাগে। সূত্র : গালফ নিউজ।

No comments

Powered by Blogger.