ধর্ষকদের পক্ষে লড়বেন না ভারতের আইনজীবীরা- সেই ছাত্রীর নামে ধর্ষণবিরোধী আইনের নামকরণের প্রস্তাব



ভারতের নয়াদিল্লিতে গণধর্ষণের শিকার হয়ে মৃত্যুবরণকারী সেই ছাত্রীর নামে ধর্ষণবিরোধী নতুন আইনের নামকরণ করার প্রস্তাব করেছেন দেশটির শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী শশী থারুর।
এ জন্য তিনি সেই ছাত্রীর নাম প্রকাশের আহ্বান জানিয়েছেন। তবে কেন্দ্রীয় সরকার বলছে, ভারতে ব্যক্তিবিশেষের নামে আইনের নামকরণের বিধান নেই।
সেই ছাত্রীর নাম প্রকাশের জন্য শশী থারুর আহ্বান জানানোর পর ছাত্রীটির স্বজনেরা বলেছেন শশী থারুরের প্রস্তাবে তাঁদের আপত্তি নেই। দেশটিতে ধর্ষণবিরোধী প্রস্তাবিত নতুন আইনটির নামকরণ ওই তরুণীর নামানুসারে হতে পারে বলে মন্ত্রী মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, মা-বাবার আপত্তি না থাকলে নতুন আইনটিতে সেই ছাত্রীর নাম যুক্ত করে তাঁর প্রতি সম্মান জানানো উচিত। তাঁর নাম এখনো গোপন রাখার বিষয়টি ‘বিস্ময়কর’। তিনি একজন মানুষ ছিলেন, কেবল একটি প্রতীক নয়। সম্মান জানানোর সুবিধার্থেই তাঁর নাম প্রকাশ করা উচিত।
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা এ ব্যাপারে বলেন, ভারতে এখন পর্যন্ত কোনো ব্যক্তির নামানুসারে কোনো আইনের নামকরণ হয়নি। ধর্ষণবিরোধী নতুন আইনের বিষয়টি জাতীয় বিবেচনায় দেখতে হবে।
২৩ বছর বয়সী ওই ছাত্রীর বাবা ও ভাই বলেন, শশী থারুরের প্রস্তাবে তাঁদের কোনো আপত্তি নেই। আইনের নামকরণের উদ্দেশে ওই ছাত্রীর নাম জনসমক্ষে প্রকাশ করা যেতে পারে। এটি হবে তাঁর প্রতি সম্মান প্রদর্শন।
নয়াদিল্লিতে একটি চলন্ত বাসে গত ১৬ ডিসেম্বর গণধর্ষণের শিকার ওই তরুণী সিঙ্গাপুরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত সপ্তাহে মারা যান। ওই ঘটনায় দেশজুড়ে ব্যাপক প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ হয়। ওই গণধর্ষণে জড়িত থাকার অভিযোগে ছয় তরুণকে ইতিমধ্যে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
সুপ্রিম কোর্টের ইতিবাচক সাড়া: ধর্ষণের মামলা দ্রুত নিষ্পত্তির লক্ষ্যে একটি জনহিতকর মামলার (পিআইএল) শুনানির ব্যাপারে ভারতীয় সুপ্রিম কোর্ট গতকাল বুধবার সম্মতি দিয়েছেন। সাবেক প্রশাসনিক কর্মকর্তা প্রমীলা শঙ্কর ওই পিআইএল দায়ের করেন। এতে কোনো ধর্ষণের ঘটনা তদন্তে নারী পুলিশসদস্যদের এবং বিচারকাজে নারী বিচারকদের নিযুক্ত করার আবেদন জানানো হয়।
মৃত্যুদণ্ড ও খোজাকরণের প্রস্তাব: ধর্ষণবিরোধী কঠোর আইন প্রণয়নের জন্য ভারতজুড়ে দাবির পরিপ্রেক্ষিতে প্রথম রাজ্য হিসেবে তামিলনাড়ু তৎপর হয়েছে। নারীর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধে রাজ্যটির সরকার ১৩ দফা-সংবলিত একটি পরিকল্পনা নিয়েছে। নারী নিগ্রহকারীদের মৃত্যুদণ্ড ও খোজাকরণের মতো কঠোর শাস্তির বিধান রাখার জন্য রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী জয়ললিতা গত মঙ্গলবার প্রস্তাব করেছেন।
আইনজীবীদের অবস্থান: আলোচিত সেই গণধর্ষণে জড়িত থাকার অভিযোগে যে ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে, তাদের সহায়তা থেকে বিরত থাকার ঘোষণা দিয়েছেন নয়াদিল্লির সাকেত জেলা আদালতের আইনজীবীরা। ওই আদালতে আজ বৃহস্পতিবার থেকে গণধর্ষণের মামলাটির শুনানি শুরু হওয়ার কথা রয়েছে। স্থানীয় বার কাউন্সিলের সদস্য ও আইনজীবী সঞ্জয় কুমার বলেন, কোনো আইনজীবী ওই ধর্ষণকারীদের পক্ষে দাঁড়াবেন না। এএফপি, বিবিসি, পিটিআই ও দ্য হিন্দু।

No comments

Powered by Blogger.