দক্ষিণের ইনিংসে শুধুই এনামুল

কিছু করার ছিল না সৌম্য সরকারের। আবু জায়েদের দুর্দান্ত ইয়র্কার ঠেকানোর বৃথা চেষ্টা করে হয়ে গেলেন বোল্ড। ইনিংসের মাত্র চতুর্থ ওভার, স্কোরবোর্ডে ৬। ওই অবস্থায় প্রথম উইকেটের পতনে প্রাইম ব্যাংক দক্ষিণাঞ্চলের শুরুটা একটু নড়বড়ে হয়ে গেলেও এনামুল হক বিজয়ের ৭৪ রানের ইনিংসে দিন শেষে অবস্থা খুব একটা খারাপ নয় তাদের।
২৪৮ রান হয়তো এমন কিছু নয়, তবে শেষবেলায় ইসলামী ব্যাংক পূর্বাঞ্চলের একটা উইকেট তুলে নেওয়ার তৃপ্তি তো যোগ হয়েছে এর সঙ্গে। অবশেষে বিসিএলে সুযোগ পাওয়া শাহরিয়ার নাফীসকে এলবিডব্লু করে ১২ রানেই থামিয়ে দিয়েছেন সোহাগ গাজী। তাঁকে হারিয়ে প্রথম দিন শেষে পূর্বাঞ্চলের রান ৫০।
দক্ষিণাঞ্চলের হয়ে এনামুল একাই লড়ে গেছেন অনেকটা সময়। শুরুতেই সৌম্য; এরপর ইমরুল, মিঠুন, তুষার ও জিয়ার বিদায়ের সাক্ষী হয়েছেন অন্য প্রান্তে দাঁড়িয়ে। অবশ্য তাতে এনামুলের সতীর্থ ব্যাটসম্যানদের যতটা না ভুল ছিল, তার চেয়ে বেশি কৃতিত্ব পূর্বাঞ্চলের বোলারদের। নতুন বলে তাপস বৈশ্য যথেষ্টই নিয়ন্ত্রণ রাখতে পেরেছেন। নাবিল সামাদ-ইয়াসিন আরাফাতদের ঘূর্ণিও সমস্যায় ফেলেছে দক্ষিণাঞ্চলের ব্যাটসম্যানদের। আরাফাতের কথা আলাদাভাবে বলতে হয়। প্রথম ম্যাচে দলের বাইরে ছিলেন, দ্বিতীয় ম্যাচে সুযোগ পেয়েই ১৫ ওভারে ৫০ রানে ৪ উইকেট, যার মধ্যে আছে সবচেয়ে মূল্যবান এনামুলেরটাও।
ডিপ এক্সট্রা কাভারে তাপসের ক্যাচ হওয়ার আগে ১৫১ বলে রান করেছেন ৭৪, ১১টি চারে যার ৪৪-ই বাউন্ডারিতে। ছক্কা নেই একটিও, সেটা মারার খুব একটা চেষ্টাও করেননি এনামুল। দলের ১৫৪ রানে ড্রেসিংরুমে ফেরার আগে চতুর্থ উইকেটে তুষারের (৩১) সঙ্গে তাঁর ৬১-ই দলের পক্ষে সর্বোচ্চ জুটি।
এনামুলের আউটের পর ইনিংস ধরে রাখার আর কাউকে খুঁজে পাওয়া গেল না দক্ষিণাঞ্চলে। দলের ১৫৪ রানে এনামুল গেলেন, এরপর ১৭৪ আর ১৭৮-এ সোহাগ-তাপস ঘোষও। শেষ ৫ উইকেট পড়ল মাত্র ৯৪ রানে। এর মধ্যে কামরুল-রবিউলের শেষ উইকেট জুটিতেই ৫২। কৃতিত্বটা শেষ ব্যাটসম্যান রবিউলেরই বেশি। ৩০ বলে ৩৯ রান করে অপরাজিত থাকলেন। শুধু এটুকুতেই নয়, ‘ব্যাটসম্যান’ রবিউলকে চেনা গেল তাঁর দুই বাউন্ডারি আর চার ছক্কায়ও। চার ছক্কার দুটিই মেরেছেন জায়েদের করা ইনিংসের ৭১তম ওভারে। বাকি দুই ছক্কা অলক ও আরাফাতের বলে।
জায়েদ নিয়েছেন প্রথম উইকেট, তাপস বৈশ্য ফিরিয়েছেন শেষ ব্যাটসম্যান কামরুল ইসলামকে। দক্ষিণের মাঝের ৮ উইকেটই গেছে পুবের স্পিনারদের দখলে। আরাফাত-নাবিলের নেওয়া ৬ উইকেটের বাইরে একটি করে উইকেট পেয়েছেন অলক আর ফয়সালও।

সংক্ষিপ্ত স্কোর
প্রাইম ব্যাংক দক্ষিণাঞ্চল ১ম ইনিংস: ৭৩ ওভারে ২৪৮ (ইমরুল ২০, সৌম্য ০, এনামুল ৭৪, মিঠুন ২, তুষার ৩১, জিয়াউর ৮, তাপস ঘোষ ৭, সোহাগ ১৮, রাজ্জাক ১৪, কামরুল ১৬, রবিউল ৩৯*; তাপস বৈশ্য ১/২৫, জায়েদ ১/৬০, অলক ১/২৫, নাবিল ২/৪৬, ইয়াসিন ৪/৫০, ফয়সাল ১/২৭)।
ইসলামী ব্যাংক পূর্বাঞ্চল ১ম ইনিংস: ১৫ ওভারে ৫০/১ (শাহরিয়ার ১২, নাফিস ১৭*, রাজিন ৪*; রবিউল ০/১৬, কামরুল ০/১৪, সোহাগ ১/৩, রাজ্জাক ০/১, তাপস ঘোষ ০/০)।

No comments

Powered by Blogger.