‘জাম্পার পাইয়া বহুত খুশি অইছি’

‘গ্রামে বিকেলের মধ্যেই শীত পড়া শুরু অয়। তাই জাম্পার (সোয়েটার) পাইয়া বহুত খুশি অইছি। রাইতে এটা গায়ে দিয়া ঘুমাইতে পারমু।’
প্রথম আলো ট্রাস্টের সোয়েটার পেয়ে এভাবেই নিজের অভিব্যক্তি জানালেন রিনা বেগম (৫৫)।
তিনি কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার ভুবনঘর গ্রামের বাসিন্দা।
মুরাদনগরের দুটি গ্রামে গতকাল বুধবার দুস্থ শীতার্ত ব্যক্তিদের মধ্যে ২৭৫টি সোয়েটার বিতরণ করা হয়। একই দিন নীলফামারীর জলঢাকা উপজেলায় ৮০টি কম্বল বিতরণ করা হয়। প্রথম আলো ট্রাস্টের উদ্যোগে এ পর্যন্ত এক হাজার ৮১০টি কম্বল ও ২৭৫টি সোয়েটার বিতরণ করা হলো।
দুস্থ ব্যক্তিদের কাছে শীতবস্ত্র পৌঁছে দেওয়ার জন্য প্রথম আলো ট্রাস্টের ত্রাণ তহবিলে বিভিন্ন ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠানের অর্থ ও শীতবস্ত্র সহায়তা অব্যাহত রয়েছে। গতকাল বুধবার পর্যন্ত ত্রাণ তহবিলে জমা পড়েছে আট লাখ পাঁচ হাজার টাকা, এক হাজার ২১৫টি কম্বল ও ৪৩৩টি সোয়েটার। গতকাল তহবিলে প্রক্সি জিএসএম (ইস্টার্ন প্লাজা) ১৫ হাজার টাকা ও ৫৫টি কম্বল ও নিউট্রেনস লজিস্টিক লিমিটেডের কাজী শামসুল আলম ৩৬টি কম্বল দিয়েছেন।
কুমিল্লা: গতকাল দুপুরে জেলার মুরাদনগর উপজেলার ভুবনঘর গ্রামে ১৫০ জন ও বিকেলে কোড়েরপাড় গ্রামে ১২৫ জন নারী-পুরুষ ও শিশুকে সোয়েটার দেওয়া হয়। সোয়েটার কারখানা উলেন অ্যান্ড উল লিমিটেডের সহযোগিতায় এই সোয়েটার বিতরণ করা হয়। এর আগেও প্রতিষ্ঠানটি প্রথম আলো ট্রাস্টে ১০০টি সোয়েটার দেয়।
সোয়েটার বিতরণের সময় উপস্থিত ছিলেন প্রথম আলোর সহযোগী সম্পাদক ও ট্রাস্টের সদস্য আব্দুল কাইয়ুম। তিনি বলেন, প্রথম আলো মানবতার সেবায় শুরু থেকেই কাজ করে যাচ্ছে। শীত, আইলাদুর্গত এলাকাসহ দরিদ্র মানুষের পক্ষে সংবাদ পরিবেশনসহ নানাভাবে সাহায্য-সহযোগিতা করে যাচ্ছে। এই সামাজিক আন্দোলন অব্যাহত থাকবে।
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন কুমিল্লা বন্ধুসভার উপদেষ্টা দিলনাশি মোহসেন, উলেন অ্যান্ড উল লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক তারেক আবদুল্লাহ, প্রথম আলোর কুমিল্লা কার্যালয়ের নিজস্ব প্রতিবেদক গাজীউল হক প্রমুখ।
নীলফামারী: জলঢাকা উপজেলার বালাগ্রাম ইউনিয়নের শালন গ্রাম বটতলা রেজিস্টার্ড প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে কম্বল বিতরণ করা হয়। ৮০ জন হতদরিদ্র নারী-পুরুষকে প্রথম আলো ট্রাস্টের কম্বল দেওয়া হয়।
শীতার্তদের হাতে কম্বল তুলে দেন জলঢাকার চাওড়াডাঙ্গী গ্রামে অবস্থিত অনাথ শিশুদের বিদ্যালয় চাঁদমণির প্রতিষ্ঠাতা পিজিরুল আলম। তিনি প্রথম আলোর শিক্ষাক্ষেত্রে সহায়তা প্রদান, মেধাবী শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনা, এসিডদগ্ধ নারী ও শীতার্তদের পাশে দাঁড়ানোসহ সব উদ্যোগের প্রশংসা করেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন ওই বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক অশনি কুমার রায়, বন্ধুসভার সহসভাপতি রিফাত আরা প্রধান, প্রথম আলোর নীলফামারী প্রতিনিধি মীর মাহমুদুল হাসান প্রমুখ।
কম্বল পেয়ে বিজলীর ডাঙ্গা গ্রামের মোমেনা বেগম (৮৫) বলেন, ‘বাও মোর খুব কষ্ট, কেথাও নাই। তোমরা মোক কম্বল খান দিয়া খুব উপকার কইরলেন।’
এর আগে বন্ধুসভার সদস্যরা বালাগ্রাম ইউনিয়নের আরাজি দেশীবাই, বিজলীর ডাঙ্গা, শালনগ্রাম, চাওড়াডাঙ্গী গোলনা কালীগঞ্জ ইউনিয়নের কালীগঞ্জ এলাকার বাড়ি বাড়ি গিয়ে দুস্থ ব্যক্তিদের তালিকা তৈরি করেন।

No comments

Powered by Blogger.