তোফায়েলের মন্ত্রীত্ব প্রত্যাখান ষড়যন্ত্রের অংশ বলে আশরাফের অভিযোগ by শামীম খান

আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য তোফায়েল আহমেদের মন্ত্রীত্বের প্রস্তাব প্রত্যাখান বড় ধরনের ষড়যন্ত্রের অংশ বলে অভিযোগ করেছেন দলের সাধারণ সম্পাদক ও স্থানীয় সরকারমন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম।

শুধু তাই নয়, প্রথম আলো সম্পাদক মতিউর রহমানসহ অনেকের সঙ্গে আলোচনা করে তোফায়েল আহমেদ এ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে আশরাফ দলের কার্যনির্বাহী সংসদের সভায় জানিয়েছেন।
শনিবার রাতে আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে গণভবনে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।

সভা শেষে আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সংসদের একাধিক নেতার সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জনা যায়।

সূত্র জানায়, দলের উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য তোফায়েল আহমেদ মন্ত্রী সভায় যোগদানের প্রস্তাব প্রত্যাখান করায় সৈয়দ আশরাফ ক্ষোভ প্রকাশ করেন।

এ সময় আশরাফ বলেছেন, তোফায়েল আহমেদ মন্ত্রীত্ব প্রত্যাখান করে ঠিক করেননি। তিনি দলকে কলঙ্কিত করেছেন। এটা একটা বড় ষড়যন্ত্রের অংশ।

কারণ এর আগে তোফায়েল আহমেদ প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর রহমানের সঙ্গে একটি ডিনারে অংশ নিয়েছিলেন। এ বিষয়ে তোফায়েল আহমেদ আরও অনেকের সঙ্গে কথা বলেছেন। তাদের সঙ্গে কথা বলেই এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এটা একটি ষড়যন্ত্রের অংশ।

সভায় আশরাফ আরও বলেছেন, মন্ত্রীত্বের প্রস্তাব প্রত্যাখান করে তিনি (তোফায়েল আহমেদ) প্রাথমিকভাবে বাহবা পেলেও কলঙ্কজনক অধ্যায় সৃষ্টি করেছেন। দলের জন্য ক্ষতি করেছেন। মন্ত্রী হওয়া শুধু সম্মানের না, এটা দায়িত্বও বটে। দায়িত্ব না নিয়ে তিনি ভোটারদের অপমানিত ও বঞ্চিত করেছেন।

এসময় আশরাফ পদ্মাসেতু প্রসঙ্গে বলেছেন, পদ্মাসেতু আমাদের করতেই হবে। এ ব্যাপারে আমাদের সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে হবে। ড. ইউনুসের ষড়যন্ত্রে পদ্মাসেতু বন্ধ হয়ে যেতে পারে না।

অর্থমন্ত্রীর প্রসঙ্গে সৈয়দ আশরাফ বলেছেন, মুহিত সাহেবের বয়স হয়েছে। তিনি উল্টা-পাল্টা কথা বলছেন।

সৈয়দ আশরাফ অর্থ উপদেষ্টা ড. মশিউর রহমানকে তিন মাসের ছুটি দেওয়ার কথা বলেন।

এ সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, মুহিত সাহেবের বয়স হয়েছে। কিন্তু উনি তো আমাদের ছেড়ে যেতে চান না।

অর্থ উপদেষ্টাকে ছুটি দিলেই সব সমস্যা সমাধান হবে না। মশিউর রহমান চলে গেলে সব সমস্যা সমাধান হয়ে যাবে এর নিশ্চয়তা কোথায়।

সভায় দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল-আলম হানিফ, দলের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মাহমুদুর রহমান মান্না, সুলতান মুহাম্মদ মনসুর ও সাবেক অর্থমন্ত্রী অধ্যাপক আবু সাঈদের নাম উল্লেখ করে বলেন, তারা বিভিন্ন জায়গায় সরকার ও দলের বিরুদ্ধে নানা কথা বলছেন। এটা দলের গঠনতন্ত্র বিরোধী। তাদের ব্যাপারে ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।

এ সময় সাংগঠনিক সম্পাদক আফম বাহাউদ্দিন নাছিম বলেছেন, পটুয়াখালি থেকে নির্বাচিত একজন এমপিও দল ও সরকারের বিরুদ্ধে টকশোতে নানা কথা বলছেন।

হানিফ ও নাছিমের বক্তব্য শুনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, এ বিষয়ে কার্যনির্বাহী সংসদের আগামী সভায় সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

সভায় আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা দলের সংসদ সদস্যদের উদ্দেশ্যে বলেছেন, পকেট কমিটি দিয়ে আগামী নির্বাচনে মনোনয়ন পাওয়া যাবে না। মনোনয়ন পেতে হলে জনগণের সমর্থন থাকতে হবে, সে অনুযায়ী কাজ করতে হবে।

সূত্র আরও জানায়, সভায় আগামী ২৯ ডিসেম্বর আওয়ামী লীগের জাতীয় কাউন্সিলের প্রাথমিক সিদ্ধান্ত হয়। সেই সঙ্গে আওয়ামী লীগের বর্তমান কমিটির মেয়াদ বাড়িয়ে আগামী বছর ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত করা হয়েছে ।

সভায় আগামী নভেম্বরের মধ্যে জেলা ও উপজেলা সম্মেলন শেষ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। কোনো জেলা ও উপজেলা যথা সময়ে সম্মেলন করতে না পারলে তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলা হয়েছে।

No comments

Powered by Blogger.