ভ্রাম্যমাণ আদালতের বিচারক জিম্মি, পরে উদ্ধার

নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ উপজেলার নুনেরটেক গ্রামের ফসলি জমির মাটি জোর করে কেটে নেওয়ার অভিযোগে গতকাল বৃহস্পতিবার ড্রেজারসহ তিন ব্যক্তিকে আটক করার পর দুর্বৃত্তরা ভ্রাম্যমাণ আদালতের বিচারক, পুলিশ ও কয়েকজন সরকারি কর্মকর্তাকে জিম্মি করে। পরে অতিরিক্ত পুলিশ গিয়ে তাঁদের উদ্ধার করে।


সরকারি কাজে বাধা দেওয়া এবং মাটি চুরির অভিযোগে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) কে এম আল-আমিন গতকাল রাতে তিনজনের বিরুদ্ধে সোনারগাঁ থানায় মামলা দায়ের করেছেন। সোনারগাঁ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হারুন অর রশিদ মামলার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
ভ্রাম্যমাণ আদালতের বিচারক কে এম আল-আমিন প্রথম আলোকে বলেন, নুনেরটেক গ্রামের পাশের ফসলি জমির মাটি কিছু সন্ত্রাসী দীর্ঘদিন ধরে জোর করে কেটে নিয়ে যাচ্ছিল। গ্রামবাসী এর প্রতিবাদ করায় এক সপ্তাহ আগে বালু-সন্ত্রাসীরা স্থানীয় জেলেদের নদীতে মাছ ধরা বন্ধ করে দেয় এবং কয়েকজন গ্রামবাসীর বাড়িঘরে হামলা চালায়।
সহকারী কমিশনার (ভূমি) বলেন, ‘এলাকাবাসীর অভিযোগের ভিত্তিতে গতকাল দুপুরে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায় যে একদল সন্ত্রাসী ফসলি জমির মাটি কেটে নিয়ে যাচ্ছে। এ সময় অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে তিন সন্ত্রাসীসহ তিনটি ড্রেজার আটক করা হয়। পরে আটক করা ড্রেজার ও তিন ব্যক্তিকে নিয়ে নদীপথে সোনারগাঁ থানার দিকে যাওয়ার পথে দেশীয় অস্ত্রে সজ্জিত ৩০-৪০ জন সন্ত্রাসী ট্রলারে করে এসে বৈদ্যেরবাজার এলাকায় মাঝনদীতে আমাদের গতি রোধ করে। এ সময় কিছু সন্ত্রাসী ড্রেজারে উঠে চালককে মারধর করে আমাদের কুমিল্লার মেঘনা উপজেলার নলচরে নিয়ে যায়। এ সময় সন্ত্রাসীরা সরকারি কর্মকর্তা ও পুলিশের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করে। পরে অতিরিক্ত পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে আমাদের উদ্ধার করে।’ তিনি জানান, তাঁরা ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার জন্য নুনেরটেক গ্রামে গিয়েছিলেন।
ভ্রাম্যমাণ আদালতের বিচারকের সঙ্গে থাকা পুলিশ জানায়, আটক করা তিনটি ড্রেজারের মধ্য থেকে দুটি বৈদ্যেরবাজার এলাকা থেকে ছিনিয়ে নিয়ে যায় সন্ত্রাসীরা। আর কিছু সন্ত্রাসী তাঁদের বহনকারী ড্রেজারে উঠে তাঁদের নলচরে নিয়ে যায়।
পুলিশ জানায়, নলচরে অতিরিক্ত পুলিশের অভিযানের বিষয়টি টের পেয়ে সন্ত্রাসীরা পালিয়ে যায়।
সোনারগাঁ থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. ইমতিয়াজ বলেন, ঘটনার সময় তিনিসহ পুলিশের মাত্র চারজন সদস্য ছিলেন।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সাগরিকা নাসরিন বলেন, অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের সঙ্গে জড়িত বালু-সন্ত্রাসীরা এ ঘটনা ঘটিয়েছে।
ওসি হারুন অর রশিদ বলেন, থানার অতিরিক্ত পুলিশ গিয়ে তাঁদের জিম্মিদশা থেকে মুক্ত করে আনে। এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের চিহ্নিত করার জন্য তদন্ত শুরু হয়েছে।

No comments

Powered by Blogger.