ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কর্মসূচি- ইরানকে ভর‌্যর্াসনা করার প্রস্তাব দিল আইএইএ

ইরানের বিতর্কিত পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে গত বুধবার আন্তর্জাতিক আণবিক শক্তি সংস্থার (আইএইএ) পরিচালনা পর্ষদের বৈঠকে ইরানকে ভর‌্যর্াসনা করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। এতে তেহরানের বিরুদ্ধে সামরিক পদক্ষেপ নেওয়া থেকে ইসরায়েলকে বিরত রাখার কথাও বলা হয়েছে।


পশ্চিমা দেশগুলোর সঙ্গে রাশিয়া ও চীনের কয়েক দিনের দর-কষাকষির পর গত বুধবার আইএইএর পরিচালনা পর্ষদের সভায় নতুন এই প্রস্তাব তোলা হয়।
প্রস্তাবে ‘গভীর উদ্বেগ’ প্রকাশ করে বলা হয়, ইরান ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ স্থগিত রাখার বিষয়ে নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাবগুলোকে ‘অব্যাহতভাবে অমান্য’ করে যাচ্ছে। ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণের এই প্রক্রিয়া শান্তিপূর্ণ উদ্দেশ্যেও ব্যবহার করা যায়, আবার পারমাণবিক অস্ত্র তৈরিতেও ব্যবহার করা যায়।
আইএইএর পরিচালনা পর্ষদের নতুন এই প্রস্তাবের ওপর বিতর্ক অনুষ্ঠিত হবে। গতকাল বৃহস্পতিবার প্রস্তাবের ওপর ভোটাভুটি হওয়ার কথা। অবশ্য কূটনীতিকেরা জানান, কিছু সদস্যদেশ ওই প্রস্তাবে সংশোধনী আনার আবেদন করতে পারে। সেটা হলে প্রস্তাবটির অনুমোদন আজ শুক্রবার পর্যন্ত স্থগিত হয়ে যেতে পারে।
প্রস্তাবে ইরানের পারচিন সামরিক ঘাঁটিতে পরিচালিত সন্দেহজনক কর্মকাণ্ড নিয়ে আইএইএর অভিযোগের বিষয়টিও আনা হয়। আইএইএর সন্দেহ, ওই ঘাঁটিতে পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির উদ্দেশ্যে গবেষণা চালানো হয়েছে।
ইরান প্রথম থেকেই দাবি করে আসছে, তাদের পারমাণবিক কর্মসূচি সম্পূর্ণ শান্তিপূর্ণ উদ্দেশ্যে পরিচালিত হচ্ছে। তবে ইরান এ বিষয়ে আস্থা রাখতে ব্যর্থ হয়েছে—আইএইএ বারবার এটি বলার পর নিরাপত্তা পরিষদ ইরানের বিরুদ্ধে এ পর্যন্ত ছয়টি প্রস্তাব পাস করেছে।
যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) আলাদাভাবে ইরানের ওপর কয়েক দফা অবরোধ আরোপ করেছে। এসব অবরোধের কারণে ইরানের তেল রপ্তানি মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
গত নয় বছরে ইরান বিষয়ে আইএইএ এ নিয়ে মোট ১২টি প্রস্তাব আনল। পশ্চিমা দেশগুলোর কূটনীতিকেরা জানান, আইএইএ পরিচালনা পর্ষদের দুই সদস্য ছাড়া সবাই প্রস্তাবের পক্ষে সমর্থন দিয়েছে। মস্কো ও বেইজিংকে রাজি করানোই পশ্চিমা দেশগুলোর জন্য এখন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।
এমন একসময়ে এই প্রস্তাবটি নিয়ে কাজ চলছে, যখন মধ্যপ্রাচ্যের একমাত্র অঘোষিত পারমাণবিক অস্ত্রের অধিকারী দেশ ইসরায়েল ইরানে হামলা চালাতে পারে বলে ব্যাপক গুঞ্জন শুরু হয়েছে। অন্তত নিরাপত্তাবিষয়ক বিশ্লেষকেরা এখন এমনটিই ভাবছেন। এএফপি।

No comments

Powered by Blogger.