বেহাল উত্তরা লেক-সংস্কার জরুরি

খাল-নদী দখল-দূষণের মতো উত্তরা লেকও এখন দখল-দূষণের শিকার হয়ে ক্রমে ক্রমে নান্দনিক সৌন্দর্য হারিয়ে ময়লা-আবর্জনার ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে। শুধু তাই নয়, লেকের তীর ঘেঁষে বেআইনিভাবে বহুতল ভবন রাজউকের নীতিমালাকে ব্যঙ্গ করে সদর্পে মাথা তুলেছে। আর লেকের ধার ঘেঁষে বস্তি তৈরি করে অনেক দিন থেকেই স্বার্থান্বেষী মহল নিজেদের ধান্দাবাজি জারি রেখেছে। সমকালের তৃতীয় পৃষ্ঠায় শনিবার প্রকাশিত এ সম্পর্কিত রিপোর্ট পড়ে মনে


হয়, অবিলম্বে উত্তরা লেকটি রক্ষা করার কাজে সরকার রাজউকের সাহায্যে এগিয়ে না এলে এটির অবস্থাও রাজধানীর অপরাপর দখলকৃত খাল-নদী-নালার মতো হবে। এর বিরুদ্ধে উত্তরায় বসবাসকারী নাগরিকরা দীর্ঘদিন থেকে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ ও রাজউকের কাছে আবেদন-নিবেদন করেও সুফল পাননি। শেষ পর্যন্ত নাগরিকরা এক জোট হয়ে আন্দোলনে নামতে বাধ্য হয়েছেন। কিন্তু তাতেও কি কর্তৃপক্ষরূপী কুম্ভকর্ণের ঘুম ভাঙবে? রাজউক বলেছে, বিষয়টি প্রধানমন্ত্রীর গোচরীভূত হওয়ার পর তিনি দ্রুত এ ব্যাপারে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন। এ ব্যাপারে রাজউক প্রকল্প প্রস্তাবও ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠিয়েছে। পরে সংশোধিত সংস্কার প্রকল্পও চূড়ান্ত করে পাঠানো হয়েছে। কিন্তু এখনও প্রকল্পের জন্য বরাদ্দ পাওয়া যায়নি বলে কাজ শুরু হয়নি। প্রশ্ন হলো, রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ একটি এলাকার লেক সংস্কারের প্রকল্প পাস করাতেই যদি মাসের পর মাস চলে যায়, তাও আবার প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশের পর; তাহলে অন্যান্য জনগুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পের কী হাল তা কারও বুঝতে অসুবিধা হওয়ার কথা নয়। এ জন্য রাজউকসহ রাজধানীর উন্নয়ন ও নাগরিক সেবার সঙ্গে সরাসরি যুক্ত প্রতিষ্ঠান-সংস্থাগুলোর জবাবদিহিতা প্রয়োজন। আমরা অবিলম্বে উত্তরা লেকটির জন্য রাজউক প্রণীত সংস্কার প্রকল্পটির জন্য ব্যয় বরাদ্দ দেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি। এ সংস্কার কার্যক্রমের মাধ্যমে যাতে একে দখলমুক্ত এবং ময়লা-আবর্জনামুক্ত করা যায় সেজন্য রাজউকের সঙ্গে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সক্রিয় সহযোগিতারও প্রয়োজন পড়বে। আর অবৈধ দখলদারদের নিজ খরচে তাদের প্রতিষ্ঠিত স্থাপনা সরিয়ে নিতে বাধ্য করা উচিত।

No comments

Powered by Blogger.