ঢাকায় দুই দিনের আন্তর্জাতিক সম্মেলনে অভিমত-ব্যবসায় দিকনির্দেশনার জন্য যথাযথ গবেষণা প্রয়োজন

ব্যবসা-বাণিজ্যসংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয়ে সঠিক দিকনির্দেশনা ও গবেষণায় জোর দিতে এবং গবেষণা কাজকে উৎসাহিত করতে হবে। এ জন্য গবেষণাসংক্রান্ত অবকাঠামো উন্নয়নের দিকে বিশেষভাবে নজর দিতে হবে।রাজধানীতে অনুষ্ঠিত দুই দিনব্যাপী ‘এশিয়ার ব্যবসায় গবেষণা’বিষয়ক সম্মেলনে এ অভিমত প্রকাশ করা হয়েছে। রাজধানীর বিয়াম ফাউন্ডেশন মিলনায়তনে গতকাল শনিবার এ সম্মেলন শেষ হয়।গত শুক্রবার শুরু হওয়া এই আন্তর্জাতিক সম্মেলনের


আয়োজন করে যৌথভাবে অস্ট্রেলিয়া-ভিত্তিক ওয়ার্ল্ড বিজনেস ইনস্টিটিউট ও বাংলাদেশে তাদের সহযোগী রিসার্চ অ্যান্ড পাবলিকেশন ইন্টারন্যাশনাল। আয়োজকেরা জানান, মূলত ব্যবসা-বাণিজ্যকে এগিয়ে নিতে প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনামূলক গবেষণা এ সম্মেলনে উপস্থাপন করেছেন দেশ-বিদেশের গবেষকেরা। অনেক ক্ষেত্রেই এসব গবেষণার কেন্দ্রবিন্দু ছিল বাংলাদেশ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া।
বাংলাদেশসহ বিশ্বের ১০টি দেশের ১০০ জন গবেষক এ সম্মেলনে অংশ নেন। বাংলাদেশ ছাড়াও যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রেলিয়া, ভারত, ইরান, কাজাখস্তান, মালয়েশিয়া, চীন, দক্ষিণ আফ্রিকা ও সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে গবেষকেরা এ সম্মেলনে আসেন।
সম্মেলনের চেয়ারম্যান ও ওয়ার্ল্ড বিজনেস ইনস্টিটিউটের সভাপতি অধ্যাপক জিয়া হক প্রথম আলোকে বলেন, ‘গবেষণাকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যেই প্রতিবছর এ সম্মেলনের আয়োজন করা হচ্ছে। এ দেশে বহু বিশ্ববিদ্যালয় আছে, কিন্তু সেখানে গবেষণার সংখ্যা খুবই কম। বাংলাদেশে গবেষণা অবকাঠামো উন্নয়নও এ সম্মেলনের লক্ষ্য।’ গবেষণা অবকাঠামো বলতে তিনি তথ্যভান্ডার, গবেষণা পদ্ধতির ওপর প্রশিক্ষণ, উৎসের ধরন ইত্যাদিকে উল্লেখ করেন।
জিয়া হক আরও বলেন, বাংলাদেশ থেকে অনেক মেধা এত দিন ‘ব্রেইন ড্রেইন’ হয়ে গেছে। কিন্তু এই সম্মেলনের মধ্য দিয়ে ‘ব্রেইন ব্যাক’ করার চেষ্টা হচ্ছে। দেশি ও বিদেশি গবেষকদের মধ্যে সেতুবন্ধন তৈরি করা হচ্ছে।
আন্তর্জাতিক এ সম্মেলনে অর্থনীতি, বিপণন, ব্যবস্থাপনা, হিসাবরক্ষণ, ব্যাংকিং, অর্থায়ন—এই ছয়টি বিষয়ের ওপর অনেকগুলো গবেষণাপত্র উপস্থাপন করা হয়। গবেষণাপত্র উপস্থাপনের পর এসব বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনাও অনুষ্ঠিত হয়।
সম্মেলনের একটি অধিবেশনের সভাপতি প্রেসিডেন্সি ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক মাহবুব আলী প্রথম আলোকে বলেন, মূলত ব্যবসা-বাণিজ্যসংক্রান্ত জ্ঞানকে ছড়িয়ে দিতেই এ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়েছে। এসব গবেষণায় বাংলাদেশ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার প্রতি দিকনির্দেশনামূলক বিভিন্ন বিষয়ই প্রাধান্য পেয়েছে।
মাহবুব আলী নিজেও একটি গবেষণাপত্র উপস্থাপন করেন। নিজের গবেষণা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বাংলাদেশে এখন মূল্যস্ফীতি একটি বড় চ্যালেঞ্জ। সরকার কোনোভাবেই মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পারছে না।
মাহবুব আলীর মতে, মূল্য স্থিতিশীল রাখা বাংলাদেশ ব্যাংকের একটি প্রধান কাজ। কিন্তু রাজস্বনীতি অনেক ক্ষেত্রেই মুদ্রানীতিকে অকার্যকর করে ফেলেছে। তা ছাড়া উচ্চ মূল্যস্ফীতি মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) প্রবৃদ্ধির একটি অংশ খেয়ে ফেলছে।
আয়োজকেরা জানান, ২০০৬ সাল থেকে প্রতিবছর ডিসেম্বরে বাংলাদেশে এই সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। এ বছর পঞ্চমবারের মতো এ সম্মেলন আয়োজন করা হলো। প্রতিবছর বাংলাদেশের এ সম্মেলনসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ১৬টি সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
সম্মেলনের বিস্তারিত জানা যাবে: www.wbiconpro.com-এই ওয়েবসাইটে।

No comments

Powered by Blogger.