সন্ত্রাসীদের ব্রাশফায়ারে নরসিংদীর মেয়র নিহত : টিঅ্যান্ডটি মন্ত্রীকে দায়ী করে তিনদিনের হরতালের ডাক by মো. মাজহারুল পারভেজ মন্টি,

জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ের ভেতরে নরসিংদী পৌর মেয়র ও শহর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক লোকমান হোসেনকে গতকাল গুলি করে হত্যা করেছে সন্ত্রাসীরা। গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর আশঙ্কাজনক অবস্থায় ঢাকা মেডিকেলে নেয়া হয়। সেখানে গতরাত ১১টায় ক্যাজু্য়ালিটি ব্লকের আবাসিক সার্জন ডা. হরিদাস সাহা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।নরসিংদী রাতেই বিক্ষোভের শহরে পরিণত হয়। লোকমানের ক্ষুব্ধ সমর্থকরা হত্যাকাণ্ডের জন্য ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রীকে দায়ী করেন।


ছাত্রলীগ নেতা এসএম কাইয়ুম হত্যার প্রতিবাদে আগামী তিনদিনের হরতালের ডাক দিয়েছেন। ক্ষুব্ধ জনতা ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রীর সেকেন্ড ইন কমান্ড হিসেবে পরিচিত হাজি সাত্তারের বাড়িতে, সার্কিট হাউস ও রেল স্টেশনে আগুন ধরিয়ে দেয়।
রাত সোয়া ৮টায় তার ওপর গুলিবর্ষণের ঘটনা ঘটে। ঘটনার পর নরসিংদী শহরের উত্তেজিত হাজারও মানুষ রাস্তায় নেমে পড়ে। মুহূর্তেই বন্ধ হয়ে যায় ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক। বন্ধ হয়ে যায় ঢাকা-চট্টগ্রাম রেল-সড়কও।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, জেলা শহরের সদর রোডে বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে দলীয় সভা করার সময় মুখোশধারী দুর্বৃত্তরা সেখানে ঢুকে তার ওপর এলোপাতাড়ি গুলি চালায়। সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় ওই সভা শুরু হয়।
নরসিংদী সদর হাসপাতালের চিকিত্সক ডা. মো. আবদুল্লাহ আল বাকী জানান, তার বুকের বাম পাশে দুটি, পেটে দুটি এবং বাম হাতে একটি গুলি লেগেছে। তিনি জানান, মেয়রের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় দ্রুত তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
জেলা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বিজয় বসাক ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, এ ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্তদের খুব দ্রুত গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। তিনি জানান, মুখোশধারী ৭-৮ জনের দুর্বৃত্তদল তাকে এলোপাতাড়ি গুলি করে দ্রুত পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় নরসিংদী শহরে দোকানপাট বন্ধ করে দিয়েছে লোকজন। চরম আতঙ্ক বিরাজ করছে শহরজুড়ে।
ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রীকে দায়ী করে তিনদিনের হরতালের ডাক : পর পর দুইবার নির্বাচিত শ্রেষ্ঠ মেয়র হয়েছিলেন লোকমান হোসেন। তার মৃত্যুর সংবাদ নরসিংদীতে ছড়িয়ে পড়লে উত্তেজিত নেতাকর্মীরা নরসিংদী সার্কিট হাউস, ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী রাজিউদ্দিন আহমেদ রাজুর সেকেন্ড ইন কমান্ড হাজি সাত্তারের বাড়িতে ও নরসিংদী রেলস্টেশনে আগুন ধরিয়ে দেয়।
উত্তেজিত জনতা ব্যাপক ভাংচুর চালায়। রাত ১২টার দিকে আওয়ামী লীগ অফিসের সামনে হাজারও মানুষের সামনে বক্তব্য রাখেন ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সহ-সভাপতি এসএম কাইয়ুম। তিনি এ হত্যাকাণ্ডের জন্য ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী রাজিউদ্দিন আহমেদ রাজুকে দায়ী করে বলেন, তাকে নরসিংদীতে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করার কারণে পরিকল্পিতভাবে জননন্দিত মানুষটিকে দলীয় কার্যালয়ে নির্দয়ভাবে খুনের নির্দেশ দেন। এ ঘটনার প্রতিবাদে আগামী তিনদিনের হরতালের ঘোষণা দেন তিনি।
এদিকে শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত এ ঘটনার দায়ে পুলিশ কোনো ঘাতকে আটক করতে পারেনি।

No comments

Powered by Blogger.