গরুর হাট-হাটে অপরাধ ঠেকাতে বিশেষ উদ্যোগ

সন্ন পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে রাজধানীতে এবার পশুর হাট বসেছে ১৬টি। কোরবানির পশুর ক্রেতা-বিক্রেতাদের নিরাপত্তা দেওয়ার লক্ষ্যে মহানগরীতে এবার র‌্যাব ও পুলিশের প্রায় ১০ হাজার সদস্য মোতায়েন করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। আশঙ্কা করা হচ্ছে, কোরবানির হাটকে কেন্দ্র করে চাঁদাবাজিসহ জাল টাকার ব্যবহার, ছিনতাই ও প্রতারণা বেড়ে যেতে পারে।পশুর হাটের নিরাপত্তা প্রস্তুতি নিয়ে র‌্যাব ও পুলিশের একাধিক সূত্র জানায়, অপরাধ নিয়ন্ত্রণে র‌্যাব ও পুলিশের সাদা পোশাকের সদস্যরা পশুর হাটে ব্যবসায়ী ও ক্রেতার বেশে থাকবেন। অভিযোগ পেলেই অপরাধীদের গ্রেপ্তার করা হবে।


পরিবহনের মাধ্যমে পশু আনার সময় সন্ত্রাসীরা যাতে ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে রাস্তাঘাটে চাঁদাবাজি করতে না পারে, সে ব্যাপারেও বিশেষ নজরদারির ব্যবস্থা করা হয়েছে।
ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনার বেনজির আহমেদ গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে গাবতলী পশুর হাট ও বাস টার্মিনালের নিরাপত্তাব্যবস্থা পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের জানান, প্রতিটি পশুর হাটের ও বাসস্ট্যান্ডের সার্বিক নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাদা পোশাকের পুলিশসহ নৌ-পুলিশের সহায়তায় পর্যাপ্ত নিরাপত্তাব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।
পুলিশ কমিশনার আরো বলেন, রাজধানীর প্রতিটি হাটে পুলিশের নিরাপত্তা বুথ রাখা হয়েছে। গরুর হাটগুলোতে রয়েছে জাল টাকা শনাক্ত করার মেশিন। ক্রেতা-বিক্রেতারা ঝামেলা এড়াতে এ বুথগুলো থেকে সহজেই টাকা শনাক্ত করে নিতে পারবেন। এ ছাড়া বাসস্ট্যান্ডকেন্দ্রিক পুলিশের বুথও রাখা হয়েছে। সাদা পোশাকের গোয়েন্দাদল গোপনে অপরাধীদের ওপর নজরদারি করছে। এ ছাড়া নদীর তীরবর্তী হাটগুলোর নিরাপত্তায় পর্যাপ্ত নৌ-পুলিশের ব্যবস্থা করা হয়েছে। পশুর হাটগুলো নির্দিষ্ট চৌহদ্দির বাইরে যেন না যায়, সে বিষয়ে কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ
জানিয়েছেন তিনি। তিনি আরো বলেন, এক হাটের পশু বিক্রেতাকে অন্য হাটে নিয়ে যেতে বাধ্য করা যাবে না। এমন অভিযোগ পেলে সে বিষয়ে পুলিশ ব্যবস্থা নেবে। পশু নিয়ে আসতে রাজধানীতে ঢোকার পথগুলোতে চাঁদাবাজি হচ্ছে, এ বিষয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এমন অভিযোগ এখনো পাওয়া যায়নি। বিশেষ করে রাজধানীতে এমনটি হচ্ছে না। তবে অভিযোগ পেলে পুলিশ দ্রুত যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
বেনজির আহমেদ বলেন, মহানগরীতে কেউ যদি অতিরিক্ত টাকা বহন করতে পুলিশের সহযোগিতা চায়, তাকে সেটা দেওয়া হবে। চাঁদাবাজি বা অন্যান্য অব্যবস্থাপনা হলে তিনি পুলিশ প্রশাসনকে সেটা জানাতে আহ্বান জানান।
জানা গেছে, হাটগুলোতে নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদার করতে পুলিশের বিশেষ ভ্রাম্যমাণ দল মাঠে থাকবে। হাটগুলোতে সিসি ক্যামেরা থাকবে। জেলা পরিষদ ও সিটি করপোরেশনের উদ্যোগেও নিরাপত্তা জোরদার করা হবে।
এদিকে পশুর হাটসহ রাজধানীর সার্বিক নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা নিয়ে র‌্যাবের লিগ্যাল ও মিডিয়া উইং শাখার পরিচালক কমান্ডার মোহাম্মদ সোহায়েল কালের কণ্ঠকে বলেন, ঈদে পশুর হাটসহ রাজধানীর সার্বিক নিরাপত্তাব্যবস্থায় র‌্যাবের তিন হাজার সদস্য দায়িত্ব পালন করবে। পশুর হাটে জাল টাকা নিয়ন্ত্রণে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে দেওয়া ১০টি জাল টাকার মেশিন ব্যবহার করা হবে। ঈদ উপলক্ষে শীর্ষ সন্ত্রাসীদের নামে চাঁদাবাজি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এসব সমস্যার ব্যাপারে র‌্যাবও সজাগ। পশুর হাটের নিরাপত্তা নিয়ে এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি জানান, অপরাধীদের ধরতে পশুর হাটগুলোয় ক্রেতা সেজে থাকবেন র‌্যাব সদস্যরা। এ ছাড়া হাটগুলোতে গরু আনার সময় ব্যবসায়ীরা যাতে চাঁদাবাজদের কাছে জিম্মি না হয়ে পড়েন, সে ব্যাপারে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।

No comments

Powered by Blogger.