আ’লীগে সিন্ডিকেট ঢুকে পড়েছে : এরা অসেদর আড়াল করতে চান - সুরঞ্জিত

নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচন থেকে আওয়ামী লীগকে শিক্ষা নিতে হবে বলে মন্তব্য করে দলটির উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত বলেন, আওয়ামী লীগে রাজনৈতিক সিন্ডিকেট ঢুকে পড়েছে। এ সিন্ডিকেটের কারণে নাসিক নির্বাচনে প্রার্থী সমর্থনে দল ভুল সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তিনি বলেন, আইভীর বিজয় ৪০ বছরের রাজনীতির সংস্কৃতিতে পরিবর্তন এনেছে। প্রমাণ হয়েছে ‘ব্লাডি সিভিলিয়ন’দের যুগ শেষ।গতকাল ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি মিলনায়তনে জেল হত্যা দিবস উপলক্ষে এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।


এই নির্বাচনে বিএনপির মধ্যরাতে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোয় পলায়নপর রাজনীতির বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, এ ধরনের বয়কটের পলায়নপর রাজনীতির পরাজয় ভবিষ্যতেও ঘটবে।
নাসিক নির্বাচন দলের জন্য সতর্ক বার্তা উল্লেখ করে সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত বলেন, নির্বাচন প্রমাণ করেছে তৃণমূলের নেতাকর্মীদের চিন্তাভাবনাকে গুরুত্ব দিয়ে প্রার্থীকে সমর্থন বা মনোনয়ন দিতে হবে। জনগণের মধ্যে যে গণজাগরণ সৃষ্টি হয়েছে, তা থেকে দলকে শিক্ষা নিতে হবে। এর ব্যতিক্রম হলে সাধারণ মানুষ তাদের প্রতিনিধি বেছে নিতে ভুল করবে না।
তিনি বলেন, বড় রাজনৈতিক দলগুলোতে সিন্ডিকেট সংস্কৃতি শুরু হয়েছে। তারা দলের প্রধানদের তোষামোদ করে অসত্ ব্যক্তিদের চরিত্রকে আড়াল করতে চান, দলকে বিভ্রান্ত করতে চান। এই নির্বাচনের মাধ্যমে স্পষ্ট হয়েছে, জনগণের কাছে আওয়ামী লীগ বা মহাজোটের বিকল্প বিএনপি, জামায়াত অথবা চারদল নয়। তাদের কাছে বিকল্প হচ্ছে আদর্শবান, সচ্চরিত্র ও জনগণের দাবি তুলে ধরতে পারে এমন
নেতৃত্ব। সিন্ডিকেটমুক্ত হয়ে তৃণমূল নেতাকর্মীদের দাবি বুঝে প্রার্থী মনোনয়ন দিতে হয়।
তিনি বলেন, নারায়ণগঞ্জে জনতার রায় প্রমাণ করেছে দলীয় মনোনয়ন বা সমর্থন কোনো প্রভাব ফেলতে পারে না।
বিএনপির প্রতি ইঙ্গিত করে সুরঞ্জিত বলেন, নির্বাচন কমিশন এবং সেনা মোতায়েন নিয়ে যারা প্রশ্ন তুলছে তাদের নারায়ণগঞ্জে যে অবাধ, সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচন হয়েছে, তার থেকে শিক্ষা নেয়া উচিত। দলীয় সরকারের অধীনেও শক্তিশালী নির্বাচন কমিশন থাকলে সেনা মোতায়েন ছাড়াও সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব। বর্তমান নির্বাচন কমিশনের অধীনে এটাই শেষ নির্বাচন উল্লেখ করে তিনি বলেন, কমিশন নিরপেক্ষ, সাহসী ও দৃঢ় সংকল্পবদ্ধ হলে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠান সম্ভব। এই নির্বাচন বিশ্বে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করেছে।
নির্বাচনের সাত ঘণ্টা আগে তৈমূর আলমের প্রার্থিতা প্রত্যাহার সম্পর্কে সুরঞ্জিত বলেন, মধ্যরাতে নির্বাচন থেকে পলানোর বিএনপির কৌশল জনগণ প্রত্যাখান করেছে। বিএনপি প্রার্থিতা প্রত্যাহার করলেও জনগণ ভোট দেয়া বন্ধ রাখেনি।
তিনি দলীয় হাইকমান্ডের উদ্দেশে বলেন, বর্তমান সরকারের তিন বছর পার হয়ে গেছে। বাকি দু’বছরে জোট-মহাজোটকে শুধু সাইনবোর্ড হিসেবে ব্যবহার না করে সত্যিকার অর্থে সক্রিয় করা হলে আগামী নির্বাচনেও বিএনপি-জামায়াত জোট পরাজিত হবে।

No comments

Powered by Blogger.