ফটিকছড়িতে পাহাড় কাটা চলছে প্রকাশ্যে by আবদুস সাত্তার,

ট্টগ্রামের ফটিকছড়ি উপজেলার দাঁতমারা ইউনিয়নে প্রায় ১০০ ফুট উঁচু একটি পাহাড়ের চূড়ায় ১০-১৫ জন শ্রমিক দিনদুপুরেই মাটি কাটার কাজ করছেন। মাটি কেটে তোলা হচ্ছে ট্রাকে। দুই ট্রাকচালক জানান, এই মাটি নিয়ে কাছের একটি খালে বাঁধ দিয়ে রাস্তা করা হবে। ওই রাস্তায় এলাকার বালুমহাল থেকে বালু নেওয়া হবে মিরসরাই এলাকায়।
গতকাল মঙ্গলবার সরেজমিনে এ তথ্য পাওয়া গেছে। স্থানীয় লোকজন বলছে, কয়েক দিন পর দাঁতমারার ঝিলতলী এলাকার হাফেজ বাড়ির পাশের এই পাহাড়টির অস্তিত্ব থাকবে না। একটি চক্র পাহাড় কেটে


মাটি বিক্রি করছে। এ ছাড়া উপজেলার সুয়াবিল ইউনিয়নের শুভনছড়ি, হারুয়ালছড়ি ইউনিয়নের লম্বাবিল এবং বাগানবাজার ইউনিয়নের আঁধারমানিক এলাকার সংরক্ষিত বনভূমিতেও প্রকাশ্যে পাহাড় কাটা চলছে।
জানা যায়, গত সোমবার থেকে ঝিলতলীর ওই পাহাড় কাটা শুরু হয়। গতকাল দেখা যায়, মাটি কেটে ফেনী ড-১১-০৩৮৫ ও টাঙ্গাইল শ-১১-০০০৩ নম্বরের দুটি ট্রাকে তোলা হচ্ছে। ট্রাকচালক বাহার মিয়া ও দিদারুল আলম জানান, পাহাড় কেটে ঝিলতলী এলাকার একটি খালে বাঁধ দিয়ে রাস্তা তৈরি করা হচ্ছে। পরে ওই সড়ক দিয়ে বালু নেওয়া হবে।
এ বিষয়ে দাঁতমারা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. জানে আলম কালের কণ্ঠকে বলেন, ১০০ জনের একটি সিন্ডিকেট এখানে পাহাড় কাটছে। এর নেতৃত্বে রয়েছেন মিরসরাইয়ের সাবেক ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য মহিন উদ্দিন। তিনি জানান, অনেক চেষ্টা করেও তাদের থামানো যাচ্ছে না। তাদের ভয়ে এলাকায় কেউ কিছু বলতে পারে না।
ইউপি চেয়ারম্যান দাবি করেন, তিনি এ বিষয়টি প্রশাসনের নজরে আনলেও কোনো কাজ হয়নি। খাল ভরাট করে রাস্তা তৈরির বিষয়টি তিনি জানেন না।
দাঁতমারা ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য নুরুল হক জানান, দাঁতমারা ছাড়াও শুভলছড়ি, কালাকুম, মরা কয়লা, হুক্কা ভাঙ্গা, পূর্ব সোনাই, তারাখো, বালুখালী, মধুপুর এলাকায়ও পাহাড় কাটা চলছে। স্থানীয়রা নানা কাজে পাহাড় কাটছে।
দাঁতমারায় পাহাড় কাটার অভিযোগ বিষয়ে মিরসরাইয়ের মহিন উদ্দিন বলেন, 'শুভলছড়ি এলাকার হাফেজ আহমদ পাহাড়টি আমাদের কাছে বিক্রি করেছেন। তাই আমরা কাটছি। এ পাহাড় কাটা মাটি দিয়ে সড়ক নির্মাণ করা হচ্ছে। ভালো কাজের জন্যই পাহাড় কাটা হচ্ছে।'
ভুজপুর থানার ওসি ইসমাইল হোসেন বলেন, 'কোথায় পাহাড় কাটা হচ্ছে আমি কিছুই জানি না। এ ব্যাপারে খোঁজখবর নেওয়া হবে।'
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অঞ্জনা খান মজলিশ বলেন, 'পাহাড় কাটা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। কেউ কেটে থাকলে তার বিরুদ্ধে অবশ্যই মামলা করা হবে। প্রয়োজনে পুলিশ বাদী হয়ে মামলা করবে।'
চট্টগ্রাম পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিচালক মোহাম্মদ জাফর আলম বলেন, 'পাহাড় কাটার মামলা যে কেউ করতে পারে। দুর্গম এলাকায় কেউ না কেউ পাহাড় কাটছে। ঈদের ছুটিকে সামনে রেখে হয়তো একটি চক্র সক্রিয় হয়ে উঠেছে। আমি স্থানীয় ইউএনও ও ওসির মাধ্যমে এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নিচ্ছি।'

No comments

Powered by Blogger.