লিবিয়ার নতুন প্রধানমন্ত্রী আবদেল রাহিম-গাদ্দাফির অস্ত্রভাণ্ডার নিয়ে উদ্বেগ

লিবিয়ার অন্তর্বর্তী সরকারের নতুন প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হয়েছেন আবদেল রাহিম আল-কেইব। গত সোমবার রাতে জাতীয় অন্তর্বর্তী পরিষদের (এনটিসি) সদস্যদের ভোটে তিনি নির্বাচিত হন। নতুন প্রশাসন মানবাধিকারকে অগ্রাধিকার দেবে বলে অঙ্গীকার করেছেন তিনি। এদিকে মুয়াম্মার গাদ্দাফির বিপুল ভাণ্ডার থেকে অস্ত্র লুট হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা প্রকাশ করেছে জাতিসংঘ। এ অস্ত্র আল-কায়েদার হাতে পড়তে পারে বলে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে নিরাপত্তা পরিষদ। তবে এখন পর্যন্ত কী পরিমাণ অস্ত্র চুরি হয়েছে, সে সম্পর্কে কোনো স্পষ্ট ধারণা দিতে পারেনি তারা।


আবদলে রাহিম যুক্তরাষ্ট্রে পড়াশোনা করেছেন। সোমবারের ভোটাভুটিতে ত্রিপোলির ধনাঢ্য এ ব্যবসায়ী ৫১ ভোটের মধ্যে পেয়েছেন ২৬ ভোট। চার প্রতিদ্বন্দ্বীকে হারিয়ে প্রধানমন্ত্রী নির্বাচত হন তিনি। মাহমুদ জিবরিলের স্থলাভিষিক্ত হলেন রাহিম। গাদ্দাফি আটক ও নিহত হওয়ার তিন দিন পর জিবরিল পদত্যাগ করেন। ভোটের পর সংবাদ সম্মেলনে রাহিম বলেন, 'আমরা এমন একটি দেশ গড়ে তোলার নিশ্চয়তা দিচ্ছি, যেখানে মানবাধিকারের প্রতি সম্মান জানানো হবে। এ অধিকারের লঙ্ঘন সহ্য করা হবে না। তবে আমাদের সময়ের প্রয়োজন।' গাদ্দাফিবিরোধী এই নেতা দীর্ঘদিন দেশের বাইরে ছিলেন। লিবিয়ায় বিদ্রোহ শুরুর পর তিনি গণতন্ত্রপন্থী আন্দোলনে যোগ দেন।
ভোটাভুটি সম্পর্কে এনটিসি সভাপতি মুস্তাফা আবদেল জালিল বলেন, 'এ ভোট থেকেই প্রমাণিত হয়, লিবীয়রা তাদের ভবিষ্যৎ নির্মাণে সক্ষম।' তাদের পরিকল্পনা অনুসারে, ২৩ নভেম্বরের মধ্যে রাহিম এনটিসির সমান্তরালে একটি অন্তর্বর্তী সরকার গঠন করবেন। আট মাসের মধ্যে এ সরকার সংবিধান সভা গঠনের লক্ষ্যে নির্বাচনের আয়োজন করবে। এরপর এনটিসি ও অন্তর্বর্তী সরকার ভেঙে দিয়ে পার্লামেন্ট ও প্রেসিডেন্ট নির্বাচন না হওয়া পর্যন্ত ওই সভা দেশ চালাবে।'
এদিকে গাদ্দাফির বিশাল অস্ত্রভাণ্ডার নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে নিরাপত্তা পরিষদ। লিবিয়া ও তাদের প্রতিবেশীদের প্রতি লুট হয়ে যাওয়া অস্ত্র ধ্বংস করে ফেলার আহ্বান জানিয়েছে তারা। তাদের আশঙ্কা, এ অস্ত্র আল-কায়েদা বা অন্য কোনো জঙ্গিগোষ্ঠীর হাতে পড়তে পারে। এ ব্যাপারে রাশিয়ার আনা একটি প্রস্তাব সর্বসম্মতভাবে গৃহীত হয়। এসব অস্ত্রের মধ্যে কাঁধে বহনযোগ্য ক্ষেপণাস্ত্রও রয়েছে। এগুলো যাত্রীবাহী বিমানের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়াতে পারে। প্রস্তাবে বলা হয়, 'সব ধরনের অস্ত্রের বিস্তার বিশেষ করে ভূমি থেকে আকাশে নিক্ষেপযোগ্য ক্ষেপণাস্ত্র আল-কায়েদা সংশ্লিষ্ট জঙ্গি সংগঠন ইসলামিক মাগরেব-এর সন্ত্রাসী তৎপরতাকে উসকে দিতে পারে।' ন্যাটো অভিযানে গাদ্দাফির প্রচুর অস্ত্র ধ্বংস হয়েছে। সূত্র : বিবিসি, এএফপি।

No comments

Powered by Blogger.