চার অপারেটরের টু-জি লাইসেন্স-আদালতে ফয়সালার আগে নবায়ন হচ্ছে না

ভ্যাট ও ২০০৮ সালে বরাদ্দ স্পেকট্রামের ওপর মার্কেট কম্পিটিশন ফ্যাক্টর (এমসিএফ) হিসেবে বাড়তি টাকার দাবির বিষয়টি আদালতে ফয়সালা হওয়ার আগ পর্যন্ত চার মোবাইল ফোন অপারেটরের টু-জি লাইসেন্স নবায়নের বিষয়টি স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি)। আগামী ১৪ নভেম্বর এ বিষয়ে আদালতের রায় পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার বিটিআরসি তাদের এই সিদ্ধান্তের কথা চার মোবাইল অপারেটরকে জানিয়ে দিয়েছে। বিটিআরসির চেয়ারম্যান


মেজর জেনারেল (অব.) জিয়া আহমেদ গতকাল এ-সংক্রান্ত বৈঠক শেষে সন্ধ্যায় সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন।
এ বিষয়ে গ্রামীণফোনের প্রধান যোগাযোগ কর্মকর্তা কাজী মনিরুল কবীর কালের কণ্ঠকে বলেন, 'আমরা আজই (বৃহস্পতিবার) বিটিআরসি থেকে চিঠি পেয়েছি। এ চিঠিতে জানানো হয়েছে, আমাদের আপত্তির বিষয়গুলো আদালতে নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত আমরা আমাদের গ্রাহকসেবার কার্যক্রম চালাতে পারব।'
প্রসঙ্গত, গতকালই শেষ হয়েছে দেশের চার মোবাইল ফোন অপারেটর গ্রামীণফোন, বাংলালিংক, রবি ও সিটিসেলের টু-জি লাইসেন্সের প্রথম মেয়াদ। এ চার অপারেটর আগামী ১৫ বছরের জন্য দ্বিতীয় মেয়াদের লাইসেন্স নবায়নের অপেক্ষায় রয়েছে। তবে আইনগত সমস্যা দেখা দিয়েছে ভ্যাট প্রদান এবং ২০০৮ সালে কেনা স্পেকট্রামের জন্য এমসিএফ হিসেবে বাড়তি টাকার দাবি নিয়ে।
লাইসেন্স নবায়ন নীতিমালা অনুসারে বিটিআরসি ভ্যাট প্রদানের দায়-দায়িত্ব মোবাইল ফোন আপরেটরদের ওপর রেখে কোনো প্রকার বিয়োজন ছাড়াই এ টাকা চেয়েছিল। এ ছাড়া ২০০৮ সালে বরাদ্দ পাওয়া স্পেকট্রামের ওপর এমএফসি হিসেবে গ্রামীণফোন ও বাংলালিংকের কাছে বিটিআরসি বাড়তি প্রায় ৪৩১ কোটি টাকা দাবি করে। কিন্তু এই চাহিদার বিরুদ্ধে গ্রামীণফোন ও বাংলালিংক আদালতের শরণাপন্ন হয়। গ্রামীণফোনের রিট আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে হাইকোর্ট বেঞ্চ এসব দাবি কেন অবৈধ হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন এবং ওই দাবি সংক্রান্ত চিঠির কার্যকারিতা স্থগিত করেন।
হাইকোর্ট বেঞ্চের এই নির্দেশের কারণেই মোবাইল অপারেটররা ভ্যাটের ১৫ শতাংশ টাকা বাদ রেখেই বিটিআরসির কাছে লাইসেন্স নবায়নের জন্য প্রথম কিস্তির টাকা জমা দেয় গ্রামীণফোন এবং বাংলালিংক তাদের ২০০৮ সালে বরাদ্দ পাওয়া স্পেকট্রামের জন্য বাড়তি টাকা জমা দেওয়া থেকে বিরত থাকে। এ অবস্থায় বিটিআরসির দাবি অনুসারে চার অপারেটর প্রথম কিস্তির টাকা হিসেবে প্রাপ্য তিন হাজার ৯৬৮ কোটি ৩৩ লাখ টাকার মধ্যে ৭৮৪ কোটি ৯ লাখ টাকা কম জমা দিয়েছে। এ ছাড়া একটি সিএ ফার্মের অডিট রিপোর্ট অনুসারে গত ১৫ বছরের বকেয়া রাজস্ব হিসেবে গ্রামীণফোনের কাছে আরো তিন হাজার ৩৪ কোটি টাকার দাবি রয়েছে বিটিআরসির। এ দাবির বিরুদ্ধেও আদালতের স্থগিতাদেশ রয়েছে।
এদিকে আইনি বাধা না থাকলে এবং নীতিমালার অন্যান্য শর্ত ঠিকমতো পূরণ করা হলে টু-জি মোবাইল ফোন অপারেটরদের লাইসেন্স 'একই সময়ে' নবায়ন করার নির্দেশনা দিয়ে গতকাল সকালে বিটিআরসিকে চিঠি দেয় ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়।

No comments

Powered by Blogger.