বিস্ফোরণের আশঙ্কায় সাঙ্গুর প্রথম কূপ পরিত্যক্ত ঘোষণা

ঙ্গোপসাগরে সাঙ্গুর প্রথম কূপ পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়েছে। এতে চট্টগ্রামে গ্যাসের সরবরাহ আবারও অনিশ্চয়তার মুখে পড়েছে। সাঙ্গুর গ্যাস অনুসন্ধানকারী প্রতিষ্ঠান স্যান্টোসের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, বিস্ফোরণ ও প্রাণহানির আশঙ্কায় ৩ হাজার ৪০০ মিটার খননের পর বঙ্গোপসাগরের ১৬ নম্বর ব্লকে প্রাকৃতিক গ্যাস অনুসন্ধানের জন্য নেয়া সাঙ্গুর প্রথম কূপ পরিত্যক্ত ঘোষণা করতে হয়েছে।স্যান্টোসের পক্ষ থেকে জানানো হয়, গত ২৪ সেপ্টেম্বর বঙ্গোপসাগরের ১৬ নম্বর ব্লকের দক্ষিণ সাঙ্গুতে প্রাকৃতিক গ্যাস অনুসন্ধানে কূপ খননের কাজ শুরু করে স্যান্টোস।


আর কাঙ্ক্ষিত এই গ্যাসের আশায় সাঙ্গুর বর্তমান প্লাটফর্ম (গ্যাসক্ষেত্র) থেকে ৬ কিলোমিটার দূরে কাজ শুরু করেন বাংলাদেশসহ ১৪টি দেশের ৮০ থেকে ৯০ জন বিশেষজ্ঞ, প্রকৌশলী ও শ্রমিক। ১৬ নম্বর ব্লকে মোট তিনটি কূপ খনন করার সিদ্ধান্ত নেয় স্যান্টোস। ৩ হাজার ৬০০ থেকে ৩ হাজার ৮০০ মিটারের মধ্যে গ্যাসের সন্ধান পাওয়ার আশায় প্রথম কূপ খনন শুরু করা হয়। কিন্তু ৩ হাজার ৪০০ মিটার খনন শেষ হওয়ার পর পানির অধিক চাপের কারণে বিস্ফোরণের আশঙ্কা দেখা দেয়। সাঙ্গুর এই তিনটি কূপ খননের সময় নির্ধারণ করা হয়েছিল ১৮ মাস। এর জন্য ব্যয় ধরা হয় প্রায় ১ হাজার কোটি টাকা। পরিত্যক্ত হয়ে যাওয়া প্রথম কূপ খননে ৩০০ কোটি টাকারও বেশি খরচ হয়েছে।
সাঙ্গু স্যান্টোসের গভর্নমেন্ট অ্যান্ড পাবলিক অ্যাফেয়ার্সের দায়িত্বপ্রাপ্ত এবিএ সিরাজউদ্দৌলা জানান, আরও নিচে গেলে বিস্ফোরণ হয়ে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি ও প্রাণহানি হতে পারে এমন আশঙ্কায় প্রথম কূপ পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়েছে। ৩ হাজার ৪০০ মিটারে যাওয়ার পর পানির অধিক চাপের কারণে সম্ভাব্য বিস্ফোরণ ঠেকাতে গত দু’দিন স্যান্টোসের সাঙ্গু বিশেষজ্ঞ প্রকৌশলীরা কাজ করেছেন। খননকাজের শেষের দিকে এসে এ ধরনের পরিস্থিতি অপ্রত্যাশিত। কাজ শুরু করার আগে ত্রিমাত্রিক জরিপে এ ধরনের কোনো আলামত পাওয়া যায়নি। কূপটি পরিত্যক্ত ঘোষণা করায় স্যান্টোস কর্তৃপক্ষ কিছুটা হতাশ হলেও এই ব্লকের পরবর্তী দুটি কূপ থেকে গ্যাস পাওয়া গেলে ক্ষতি পুষিয়ে নেয়ার আশা করছেন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।
সিরাজউদ্দৌলা আরও জানান, গ্যাস বা তেল অনুসন্ধানের ক্ষেত্রে ১০টি কূপ খনন করলে একটিতে সাফল্য পাওয়া যায়। আগামী ৭-৮ দিনের মধ্যে প্রথম কূপ বন্ধ করে দ্বিতীয় কূপ সাঙ্গু-১১-তে কাজ শুরু করা হবে বলে জানান তিনি।
খননকাজ শুরু করার আগে ডিসেম্বর নাগাদ গ্যাসপ্রাপ্তির আশা প্রকাশ করে এই গ্যাস চট্টগ্রামে সরবরাহ করার ঘোষণা দিয়েছিল সাঙ্গুর গ্যাস অনুসন্ধানকারী প্রতিষ্ঠান স্যান্টোস। কিন্তু প্রথম কূপটি পরিত্যক্ত ঘোষণা করায় চট্টগ্রামে গ্যাস সরবরাহ আবারও অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।
স্যান্টোসের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, দ্বিতীয় কূপ সাঙ্গু-১১ খননের সময় বর্তমান প্লাটফর্মের ওপর রিগ বসিয়ে ড্রিলিং করা হবে। তাই এই কূপ থেকে গ্যাস পাওয়া গেলে আগামী ফেব্রুয়ারি-মার্চ নাগাদ চট্টগ্রামে গ্যাস সরবরাহ করা সম্ভব হবে বলে আশা করছেন তারা। আগামী ১৭-১৮ নভেম্বরের মধ্যে দ্বিতীয় কূপ সাঙ্গু-১১ এবং জানুয়ারিতে উত্তর-পূর্ব সাঙ্গুতে তৃতীয় কূপ খননের কাজ শুরু হবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

No comments

Powered by Blogger.