বিশ্বকাপকে ঘিরে পর্যটন খাত সমৃদ্ধ করছে কাতার-২৫ বিলিয়ন ডলারের নতুন বিনিয়োগ

বিশ্বকাপ ফুটবলের আয়োজক হওয়া যেমন সম্মানের তেমনি এর অর্থনৈতিক গুরুত্বও কম নয়। ২০২২ বিশ্বকাপ ফুটবলের আয়োজক দেশ কাতার। এ অবস্থায় অগণিত পর্যটক ও ফুটবলপ্রেমীদের অভ্যর্থনা জানাতে দেশের পর্যটন শিল্প ঢেলে সাজাচ্ছে বিশ্বের অন্যতম ধনী এ দেশটি। পর্যটন কর্তৃপক্ষ জানায়, আগামী ১১ বছরে পর্যটন শিল্পের উন্নয়নে ২০ থেকে ২৫ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করা হবে।কাতার একদিক থেকে পর্যটন শিল্পে উন্নত, অন্যদিকে অঢেল প্রাকৃতিক গ্যাস দেশটিকে এনে দিয়েছে মাথাপিছু আয়ে বিশ্বের সবচেয়ে ধনী দেশের সম্মান।


তাই বিশ্বকাপকে সামনে রেখে সর্বোচ্চসংখ্যক পর্যটক আকর্ষণে তাদের এই প্রচেষ্টা। কাতার ট্যুরিজমের চেয়ারম্যান আহমেদ আবদুল্লাহ আল-নঈমী বলেন, বিপুল এ অর্থ ব্যয় করা হবে হোটেল, পার্ক এবং বিনোদন কেন্দে র জন্য। দেশটিতে বর্তমানে ১০ হাজার বিশ্বমানের হোটেল কক্ষ রয়েছে। এর সঙ্গে চলতি বছর যোগ হবে আরো সাড়ে পাঁচ হাজার। এবং ২০১৩ সাল নাগাদ হোটেল কক্ষের সংখ্যা ৩০ হাজার করার পরিকল্পনা রয়েছে। জানানো হয়েছে, ২০২২ সাল পর্যন্ত প্রতিবছর নতুন করে পাঁচ হাজার হোটেল কক্ষ যুক্ত হবে।
দেশে হোটেল তৈরির অন্যান্য প্রকল্পের মধ্যে রয়েছে দুই বিলিয়ন ডলারের সিটি সেন্টার প্রজেক্ট। প্রথম অবস্থায় ২০০৬ সালে উদ্বোধনের কথা থাকলেও তা এ বছর উদ্বোধন করা হবে। এ প্রকল্পের মধ্যে 'সাংগরি লা' এবং 'রতানা'সহ থাকবে ছয়টি হোটেল। এ ছাড়া দোহার গভীর সমুদ্রবন্দরে ৫ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলার খরচে নির্মাণ করা হবে একটি প্রমোদ তরী স্টেশন। নঈমী জানান, 'আগত পর্যটক ও ফুটবল অনুরাগীরা এতে উঠতে পারবেন। এ জন্য আমরা কাজ করে যাচ্ছি, প্রয়োজনে এর সঙ্গে আরো যোগ করব। পুরো বন্দরেই এমন সুযোগ-সুবিধা রাখা হবে।'
আয়োজন এখানেই শেষ নয়। চলতি বছর থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত দেশের বাজেটের ৪০ শতাংশ রাখা হয়েছে শুধু পর্যটন অবকাঠামো উন্নয়নে। এর মধ্যে রয়েছে ১১ বিলিয়ন ডলার খরচে একটি নতুন আন্তর্জাতি বিমানবন্দর এবং ৫ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলার খরচে একটি গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মাণ। এ ছাড়া বিশ্বকাপ সামনে রেখে কাতারে বাণিজ্য খোলার তালিকায় বিশ্বখ্যাত হোটেলের নাম শোনা যাচ্ছে। এর মধ্যে রয়েছে চার তারকা ব্র্যান্ড এবং সুসজ্জিত অ্যাপার্টমেন্ট। নিক্কি বিচ হোটেল ও ওয়ান বুটিক হোটেলসহ আগামী তিন বছরে চারটি হোটেল আসছে।
অল্প সময়ে অতিরিক্ত মানুষের আগমন সামলানোর ব্যাপারে নঈমী বলেন, 'এতে উদ্বেগের কারণ নেই। অতিরিক্ত লোক ধারণের পূর্ণ সক্ষমতা আমাদের বিমানবন্দরের রয়েছে।' তিনি বলেন, 'আমরা যদি বিমানবন্দরের সক্ষমতার ৫ শতাংশও লোক আকর্ষণ করতে পারি, তবে তা হবে বছরে ২৫ লাখ।' নঈমী বলেন, 'দেশের জন্য এখন সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হচ্ছে হোটেল নির্মাণ ও অবকাঠামোগত উন্নয়ন সময়মতো শেষ করা।' তিনি বলেন, 'আমরা উন্নয়ন কাজের গতি বাড়িয়েছি। কারণ শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত আমরা অপেক্ষা করতে চাই না।' তিনি বলেন, 'আশা করছি, আমাদের দেশ পর্যটকদের একটি বড় বাজারে পরিণত হবে, যা দেশের রাজস্ব আয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।' রয়টার্স।

No comments

Powered by Blogger.