মোবাইল ফোন 'স্বাস্থ্যনাশক বোমা'

স্বাস্থ্যের ওপর মোবাইল ফোনের বিস্তর গবেষণা হয়েছে। অনেক গবেষণায়ই বেরিয়ে এসেছে, মোবাইল ফোন ব্যবহারে শরীরের ওপর বিভিন্ন ক্ষতিকর প্রভাবের কথা। আবার কিছু গবেষণা ক্ষতিকর প্রভাবের কথা উড়িয়ে দিয়েছে। কিন্তু এবার বিজ্ঞানীরা মোবাইল ফোনকে তুলনা করেছেন টাইম বোমার সঙ্গে। তাঁদের ভাষায়, মোবাইল ফোন হলো 'হেলথ টাইম বোম' বা 'স্বাস্থ্যনাশক সময় নিয়ন্ত্রিত বোমা'।এ যন্ত্রটির ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ এবং জনসাধারণকে সতর্ক করার জন্য বিজ্ঞানীরা বিশ্বের সব দেশের সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।


সমপ্রতি দুই শতাধিক গবেষণায় মস্তিষ্কের টিউমার, ক্যান্সারসহ বিভিন্ন জটিল রোগের অন্যতম প্রধান কারণ হিসেবে মোবাইল ফোনকে চিহ্নিত করা হয়েছে। মোবাইল ফোনের কারণে শিশুরা সবচেয়ে বড় স্বাস্থ্যঝুঁকিতে রয়েছে বলে গবেষণাগুলোতে বলা হয়েছে। যুক্তরাজ্যের শীর্ষস্থানীয় বিজ্ঞানীরা এ গবেষণাগুলোতে নেতৃত্ব দিয়েছেন। বিজ্ঞানীরা বিশ্বের সব দেশের সরকারের সমালোচনা করে বলেছেন, এই ভয়াবহ স্বাস্থ্য-সমস্যার ব্যাপারে সরকারগুলো কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না। বিজ্ঞানীদের মতে, সিগারেটের প্যাকেটের মোড়কে যেমন স্বাস্থ্য-সমস্যার কথা লেখা থাকে, তেমনি মোবাইল ফোনের গায়ে কিংবা দোকানে 'মোবাইল ফোন ব্যবহার স্বাস্থ্যের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ'_এ ধরনের সতর্কবাণী লেখা উচিত।
২০০৮ সালে সুইডেনে পরিচালিত এক গবেষণায় দেখা যায়, যেসব শিশু মোবাইল ফোন ব্যবহার করে, তাদের শরীর অন্যান্য শিশুর চেয়ে পাঁচ শতাংশ কম হারে বাড়ে। এ ছাড়া অন্য কয়েকটি গবেষণায় দেখা গেছে, গর্ভাবস্থায় কোনো মা দীর্ঘ সময় মোবাইল ফোন ব্যবহার করলে তাঁর অপরিণত শিশুর প্রসবের ঝুঁকি বেড়ে যায়।
এ বছরের জুন মাসে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাও স্বীকার করে, মোবাইল ফোন মস্তিষ্কের টিউমার, ক্যান্সারসহ বিভিন্ন রোগের কারণ হতে পারে।
তবে মোবাইল ফোন প্রযুক্তির সঙ্গে জড়িত বিশেষজ্ঞদের দাবি, 'এ গবেষণা অসম্পূর্ণ। মোবাইল ফোন গিলোমা নামে মস্তিষ্কের এক ধরনের বিরল টিউমারের জন্য দায়ী। তবে সেই টিউমার খুব অল্প মানুষের হয়।' এ টিউমারের জন্য মোবাইল ফোনকে ঢালাও দোষারোপ করার সমালোচনা করেছেন তাঁরা। তাঁরা বলছেন, অসম্পূর্ণ গবেষণার তথ্য দিয়ে কিছু বিজ্ঞানী আতঙ্ক সৃষ্টি করছেন।
অবশ্য গত মাসে ডেনমার্কে পরিচালিত এক গবেষণায় দেখা যায়, মোবাইল ফোন মস্তিষ্কের ক্যান্সারের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ নয়। প্রায় তিন লাখ ৫৮ হাজার মানুষের ওপর গবেষণা করে গবেষকরা এ ব্যাপারে নিশ্চিত হন।
তবে দ্বিমুখী বিতর্ক চললেও স্বাস্থ্যঝুঁকির কথা বিবেচনা করে যুক্তরাজ্যে সরকার এরই মধ্যে ১৬ বছরের কম বয়সীদের জন্য মোবাইল ফোন ব্যবহার নিষিদ্ধ করেছে। সূত্র : মেইল অনলাইন।

No comments

Powered by Blogger.