সবিশেষ-কোমাতেও 'কথোপকথন' সম্ভব

যেসব রোগী বোধশক্তিহীন অবস্থা বা কোমায় চলে গেছেন তাঁদের সঙ্গেও 'কথোপকথন' সম্ভব_এমনটিই বলছেন একদল স্নায়ুবিজ্ঞানী। তাঁরা বলেছেন, একটি স্বল্পমূল্যের যন্ত্র আবিষ্কার করা সম্ভব হয়েছে, যা দিয়ে স্থায়ীভাবে বোধশক্তিহীন অবস্থায় চলে যাওয়া রোগীদের মস্তিষ্কের কর্মকাণ্ড বোঝা যাবে। এমনকি ওই রোগীকে কিছু বলা হলে তা বুঝতে পারেন এবং সুনির্দিষ্ট কিছু ভাবার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হলে সে অনুযায়ী চিন্তাও করতে পারেন।সম্প্রতি এক গবেষণার পর বিজ্ঞানীরা এ আশার কথা শুনিয়েছেন। গবেষণা প্রকল্পটির দায়িত্বে ছিলেন একদল ব্রিটিশ বিজ্ঞানী।


তাঁরা আশা করছেন, তাঁদের এ আবিষ্কারের ফলে বোধশক্তিহীন অবস্থায় চলে যাওয়া রোগীদের সেবাযত্ন বা চিকিৎসা পদ্ধতিতে মৌলিক পরিবর্তন আসবে।
ক্যামব্রিজের অ্যাডেনব্রুকস হাসপাতাল এবং বেলজিয়ামের লিয়েজ ইউনিভার্সিটি হাসপাতালের ১৬ জন রোগীর ওপর গবেষকরা পরীক্ষা চালান। এতে ওই রোগীদের কল্পনা করতে বলা হয়। নতুন আবিষ্কৃত ওই যন্ত্রের সাহায্যে ওই নির্দেশনায় রোগীদের ডান হাত ও ডান পায়ের আঙুল নাড়াচাড়া কল্পনা করতে বলা হয়। এরপর ইলেকট্রোএনসেফ্যালোগ্রাফি (ইইজি) যন্ত্রের সাহায্যে তাঁদের মস্তিষ্কের তরঙ্গ পরিমাপ করা হয়। পাশাপাশি ১২ জন সুস্থ স্বেচ্ছাসেবীর ওপরও একই পরীক্ষা চালানো হয়।
বিজ্ঞানীরা দেখতে পান, বোধশক্তিহীন অবস্থায় চলে যাওয়া ১৬ জনের মধ্যে তিনজন তাঁদের আঙুল নাড়াচাড়া করার বিষয়টি কল্পনা করতে পেরেছেন।
স্নায়ুবিজ্ঞানীদের এ গবেষণাটি সম্প্রতি দ্য ল্যানসেট সাময়িকীর অনলাইন ভারসনে প্রকাশিত হয়েছে। গবেষণার মূল লক্ষ্য ছিল, বোধশক্তিহীন অবস্থায় চলে যাওয়া রোগীদের মস্তিষ্কের কর্মকাণ্ড চিহ্নিতকরণে ইইজি যন্ত্র এমআরআই-এর মতো ভাল কাজ করে কি না তা দেখা। কারণ ইইজির খরচ বেশ কম।
ক্যামব্রিজের মেডিক্যাল রিসার্চ কাউন্সিল কগনিশান অ্যান্ড বেওইন সায়েন্সের অধ্যাপক আদ্রিয়ান ওয়েন ব্রিটেন, বেলজিয়াম ও কানাডার সাত বিজ্ঞানীর সঙ্গে এ গবেষণায় কাজ করেন। বিজ্ঞানীরা সিদ্ধান্ত টানেন, 'আমরা দেখতে পেয়েছি, ইইজি পদ্ধতি অন্যান্য পদ্ধতির মতোই বোধশক্তিহীন অবস্থায় চলে যাওয়া রোগীদের সুপ্ত চেতনা চিহ্নিত করতে পারে।' তাঁরা আরো বলেন, 'এর মাধ্যমে কিছু কিছু রোগীর সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক যোগাযোগও স্থাপন করা সম্ভব হয়েছে।' সূত্র : দ্য টেলিগ্রাফ অনলাইন।

No comments

Powered by Blogger.