জমিসংক্রান্ত বিরোধে খুন হন মিল্টন, গ্রেপ্তার ২

রাজধানীর শেরে বাংলানগরের ডিশ ব্যবসায়ী বিএনপি নেতা আবদুল বাকী ওরফে মিল্টনকে হত্যার ঘটনায় তাঁর ঘনিষ্ঠ বন্ধু মামুন আহমেদ ও মন্টু ওরফে কিসিঞ্জার মন্টুকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গতকাল বৃহস্পতিবার ভোরে শেরে বাংলানগর এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। পুলিশ জানিয়েছে, জমিসংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে মিল্টন খুন হয়েছেন বলে গ্রেপ্তার দুজন তদন্তসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের কাছে স্বীকারোক্তি দিয়েছে।


গতকাল সন্ধ্যা ৬টার দিকে পাঁচজনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতপরিচয় সাত-আট ব্যক্তিকে আসামি করে মামলা করেন মিল্টনের স্ত্রী লাবণী জেসমিন। এরপর তেজগাঁও বিভাগের উপকমিশনার ইমাম হোসেনের নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গ্রেপ্তারকৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করে।
শেরে বাংলানগর থানা পুলিশ জানায়, কিলিং মিশনে অংশ নেয় ছয়জন। পরিকল্পনা হয় ঘটনার ১৫ দিন আগে স্থানীয় কাশেম আহমেদের বাসায়। ওই বৈঠকে কাশেম ছাড়াও মিল্টনের ঘনিষ্ঠ বন্ধু মামুন ও কিসিঞ্জার মন্টু উপস্থিত ছিল। তাদের দেওয়া তথ্য মতে পুলিশ আরো জানায়, গত আট মাস আগে শেরে বাংলানগর এলাকায় জনতা হাউজিংয়ে ফজিলাতুন্নেছা নামের এক মহিলার পৌনে তিন কাঠা জমির দখল নিতে কাশেম মিল্টনের দ্বারস্থ হন। ওই সময় মিল্টনের কথামতো ফজিলাতুন্নেছা মিল্টন, কাশেম ও স্থানীয় এক অ্যাডভোকেটের নামে মালিকানা হস্তান্তর করেন। সম্প্রতি জমিটি বিক্রি করে দেওয়া কিংবা কোনো ডেভেলপার কম্পানিকে দিয়ে দেওয়ার জন্য মিল্টনকে চাপ দিতে থাকে কাশেম। তবে মিল্টন তাতে সায় না দেওয়ার কারণেই তাদের মধ্যে সম্পর্কের অবনতি ঘটে। কিছুদিন আগে কাশেম ৭০ লাখ টাকায় ওই জমিটি বিক্রি করার সিদ্ধান্ত নেয়। আর পথ পরিষ্কারের জন্য বাগে আনে মিল্টনের বন্ধু মন্টু ও মামুনকে। তাদের প্রত্যেককে পাঁচ লাখ টাকা করে দেওয়ার অঙ্গীকার করে কাশেম। সর্বশেষ গত মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে নিজ ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে গুলি করে খুন করা হয় মিল্টনকে।
পুলিশের তেজগাঁও বিভাগের উপকমিশনার ইমাম হোসেন বলেন, হত্যাকাণ্ডে মন্টু, মামুন ও কাশেম ছাড়াও তিনজন পেশাদার খুনি অংশ নেয়। পরে তারা মিল্টনের মোটরসাইকেলে করে স্থান ত্যাগ করে। ওই মোটরসাইকেলটিও উদ্ধার করা হয়েছে। তবে কাশেমকে গ্রেপ্তার করলে আরো অনেক তথ্য পাওয়া যেতে পারে।
নিহত মিল্টনের স্ত্রী লাবণী জেসমিন জানান, মন্টু ও মামুন ছাড়াও মিল্টনের আরো কয়েকজন বন্ধু পরোক্ষভাবে এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত। তাদের সম্মতি না থাকলে মিল্টনকে কেউ খুন করতে পারত না।

No comments

Powered by Blogger.