শনিবার বিদেশি ফুটবলারদের সঙ্গে জাতীয় দলের প্রস্তুতি ম্যাচ

শুক্রবারই বিদেশি ফুটবলারদের সঙ্গে বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দলের অনুশীলন ম্যাচ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু বাংলাদেশে অবস্থানরত বিদেশি ফুটলাররা ঈদের ছুটিতে চারদিকে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে। তাদের একত্রিত করতেই আরও একদিন জাতীয় দলের অনুশীলন ম্যাচ পেছানো হয়েছে। বাফুফে সূত্রে জানা গেছে এ তথ্য। একদিন পিছিয়ে শনিবার বিকালে বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে সাফ ফুটবলের প্রস্তুতিরত জাতীয় ফুটবল দল বিদেশি ফুটবলারদের সঙ্গে এক প্রস্তুতি ম্যাচ খেলবে। জাতীয় দলের দুধের স্বাদ ঘোলে মেটানোর এমন আয়োজন করেছে বাদল রায়ের নেতৃত্বাধীন জাতীয় দল ম্যানেজমেন্ট কমিটি।


কোচ নিকোলা ইলিয়েভস্কি সাফ ফুটবলের প্রস্তুতির অংশ হিসেবে বিদেশি কোনো দলের সঙ্গে অনুশীলন ম্যাচ খেলার প্রস্তাব দিয়েছিলেন। অর্থ সঙ্কট, স্পন্সর সমস্যাসহ নানা অজুহাতে জাতীয় দল ম্যানেজমেন্ট কমিটি এখনও কোনো বিদেশি দলের সঙ্গে চূড়ান্ত যোগাযোগ করতে পারেনি। বিকল্প ব্যবস্থা হিসেবে বাংলাদেশের ঘরোয়া ফুটবলে খেলতে আসা বিদেশি ফুটবলারদের সঙ্গেই এমন অনুশীলন ম্যাচের আয়োজন করা হয়েছে। বিদেশি ফুটবলাররা ঘরোয়া ফুটবল লিগ শেষ হওয়ার পরও অবৈধভাবে বাংলাদেশে সারাবছর অবস্থান করেন। আর সারাদেশে খেপ খেলে বেড়ান। যেহেতু বাফুফে এদেশে তাদের অবৈধভাবে আয়-রোজগারের ব্যবস্থা করে দিয়েছে, তাই বাফুফের আবেদনে সাড়া না দিয়ে উপায় ছিল না বিদেশি ফুটবলারদের। মুফতেই জাতীয় দলের সঙ্গে অনুশীলন ম্যাচ খেলছে বিদেশি ফুটবলাররা। গতকাল বিকালে বনানী চেয়ারম্যানবাড়ী মাঠে বিদেশি ফুটবলাররা একত্রিত হয়ে অনুশীলন করেছে। বিদেশি ফুটবলারদের দলকে কোচিং দেয়ার দায়িত্ব নিয়েছেন গত পেশাদার লিগে ফরাশগঞ্জের কোচের দায়িত্বে থাকা কামাল বাবু।
কোচ কামাল বাবু বলেন, ‘গত পেশাদার লিগে খেলা বিভিন্ন দলের ফুটবলার নিয়ে এই বিদেশি একাদশ গড়া হবে। যেহেতু বিদেশি গোলকিপার নেই, তাই দেশি গোলকিপার খেলানো হবে বিদেশি একাদশে। জাতীয় দলকে সাহায্য করতেই বিদেশি দলের সঙ্গে আমি কাজ করছি। মোট ১৮ জন ফুটবলারকে আমরা বাছাই করেছি। ঢাকা মাঠে অতীতে কোনো ক্লাবে খেলেনি, এমন বিদেশি ফুটবলারও খেলবে এই অনুশীলন ম্যাচে।’
আগামী ২-১১ ডিসেম্বর ভারতের নয়াদিল্লিতে অনুষ্ঠিত হবে নবম সাফ ফুটবল। ‘এ’ গ্রুপে বাংলাদেশের সঙ্গে আছে নেপাল, মালদ্বীপ ও পাকিস্তান। ২ ডিসেম্বর উদ্বোধনী ম্যাচেই বাংলাদেশ পাকিস্তানের মুখোমুখি হবে। সাফ ফুটবলে স্বাগতিক ভারত ১৯৯৩, ১৯৯৭, ২০০৫ এবং ২০০৯ সালসহ মোট পাঁচ বার শিরোপা জেতে। শ্রীলংকা ১৯৯৫, বাংলাদেশ ২০০৬ এবং মালদ্বীপ ২০০৮ সালে সাফ ফুটবলের শিরোপা জিতেছিল। ২০০৮ সালে সপ্তম সাফ ফুটবলে বাংলাদেশ গ্রুপপর্যায় থেকেই বিদায় নেয়। ২০০৯ সালে ঢাকায় অষ্টম সাফ ফুটবলে বাংলাদেশ দল ভারতের অনূর্ধ্ব-২৩ দলের কাছে সেমিফাইনালে হেরে বিদায় নেয়। ১৯৯৩ সালে পাকিস্তানে প্রথম সাফ ফুটবলে বাংলাদেশ অংশ নেয়নি। সাফ ফুটবলকে সামনে রেখে অন্য দলগুলো অনেক আগেই অনুশীলন শুরু করে দিয়েছে। অথচ বাদল রায়ের নেতৃত্বাধীন জাতীয় দল ম্যানেজমেন্ট কমিটি এতদিন ছিল শীতনিদ্রায়। ঈদের ৩ দিন আগে জাতীয় দল অনুশীলন শুরু করে। মাঝে ঈদের তিনদিনের বিরতি। গতকাল জাতীয় ফুটবল দল বিকালে বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে ‘উইথ দ্য বল’ হালকা অনুশীলন করেছে। সব মিলিয়ে জাতীয় দল ৩ সপ্তাহেরও কম সময়ের প্রস্তুতি নিয়ে সাফ ফুটবলে খেলতে যাচ্ছে। কোচ নিকোলা ইলিয়েভস্কি দল নিয়ে গিনিপিগের মতো নানা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দলটিকে একেবারেই হতশ্রী করে ফেলেছেন। জাতীয় দল অনুশীলন ম্যাচে শেখ জামালের সঙ্গে ১-১ গোলে ড্র করেলও তাদের সাদামাটা পারফরম্যান্স সবাইকে হতাশ করেছে।

No comments

Powered by Blogger.