মৃত্যুর কাছে নকআউট জো ফ্রেজিয়ার

ক্সিং রিংয়ে বীরত্বে বিশ্বজোড়া খ্যাতি পাওয়া জোসেপ উইলিয়াম ফ্রেজিয়ার জীবনযুদ্ধে পরাজয় মেনে নিলেন। গত সোমবার যুক্তরাষ্ট্রের ফিলাডেলফিয়ার মৃত্যুবরণ করেন 'স্মোকিং জো' নামে পরিচিত অলিম্পিক স্বর্ণজয়ী এ বক্সার।১৯৭১ সালে মোহাম্মদ আলীর বিপক্ষে আলোড়ন সৃষ্টি করা লড়াইয়ে জয় তুলে নেন ফ্রেজিয়ার, যা ছিল পেশাদার মঞ্চে আলীর প্রথম পরাজয়। পরবর্তী সময়ে এটি শতাব্দীর সেরা লড়াইয়ের স্বীকৃতি পেয়েছে। ১৯৬৫ সালে ক্যারিয়ার শুরুর পর খেলেছেন ১৯৭৬ পর্যন্ত, যিনি ১৯৬৪ সালে টোকিও অলিম্পিকে স্বর্ণজয় করেন। পেশাদার ক্যারিয়ারে ৩৭ লড়াইয়ে ফ্রেজিয়ার জিতেছেন ৩২টিতে। ৪টিতে ছিল হার, অন্য লড়াইটি অমীমাংসিতভাবে শেষ হয়েছে।


কিংবদন্তি এ যোদ্ধার মৃত্যুতে এক বিবৃতিতে তার পরিবার লিখেছে, 'একজন মহৎ ব্যক্তির জীবনাবসান হলো। ৭ নভেম্বর ২০১১ যিনি নিজ বাসভবন ফিলাডেলফিয়ায় মৃত্যুবরণ করেন।'
১৯৭০ সালে মেডিসন স্কয়ারের এক লড়াইয়ে চতুর্থ রাউন্ডে জিমি এলিসকে হারিয়ে ক্যারিয়ারে প্রথম পেশাদার হেভিওয়েট শিরোপা জিতেছেন ফ্রেজিয়ার। ১৯৭৩ সালে জর্জ ফোরম্যানের কাছে হারের আগে চার বছর মুকুট নিজের দখলেই রেখেছিলেন এ কিংবদন্তি।
বক্সিংয়ের জীবন্ত কিংবদন্তি মোহাম্মদ আলির সঙ্গে ফ্রেজিয়ারের ছিল ঘনিষ্ঠ বন্ধুত্ব। রিংয়ের একসময়কার প্রতিদ্বন্দ্বীর অসুস্থতার খবর পেয়ে মোহাম্মদ আলি বলেছিলেন, 'খবরটি বিশ্বাস করা কঠিন, তার চেয়ে কঠিন হচ্ছে এটি মেনে নেওয়া। আমি এবং পরিবারের দৈনিক প্রার্থনায় জো (ফ্রেজিয়ার) থাকে। তার ঘনিষ্ঠ যে ক'জন বন্ধু ছিল তাদের অন্যতম আমি।'
মৃত্যু সংবাদে সাবেক ব্রিটিশ ও কমনওয়েলথ হেভিওয়েট চ্যাম্পিয়ন ডেরেক চিসোরা বলেছেন, 'এটি সত্যিই বাজে সময়! আমি বরাবরই সাবেক বক্সারদের অনুসরণ করি। জো (ফ্রেজিয়ার) আমাকে অনুপ্রাণিত করেছেন। একজন মানুষের পক্ষে যা অর্জন করা সম্ভব তার সবকিছুই ছিল জোর সংগ্রহে।' তার সম্পর্কে যদি কিছু বলতে হয় আমি বলব 'দুর্দান্ত এক ফাইটার!'

এক নজরে জো ফ্রেজিয়ার
১৯৪৪ সালের ১২ জানুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ ক্যারোলিনায় জন্ম।
১৯৬৪ সালে হেভিওয়েট বক্সিংয়ে স্বর্ণপদক জয়।
১৯৭০ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি জিমি এলিসকে হারিয়ে প্রথম পেশাদার বিশ্ব হেভিওয়েট শিরোপা জয়।
১৯৭১ সালে মোহাম্মদ আলিকে ১৫ বাউটের ম্যাচে হারান, যা শতাব্দীর সেরা লড়াই হিসেবে স্বীকৃত।
১৯৭৩ সালে জর্জ ফোরম্যানের কাছে হেভিওয়েট শিরোপা হারান।
১৯৭৪ ১২ বাউটের ফিরতি ম্যাচে মোহাম্মদ আলির কাছে হার।
১৯৭৫ সালে ইতিহাসের অন্যতম সেরা লড়াইয়ে মোহাম্মদ আলির কাছে আরেক দফা হার।
১৯৭৬ সালে ফোরম্যানের কাছে দ্বিতীয় হারের পর অবসরের ঘোষণা।
১৯৮১ সালে অবসর ভেঙে ফিরে আসা।

No comments

Powered by Blogger.