জর্জ পাপান্দ্রুর পদত্যাগ : শিগগিরই গ্রিসের নতুন প্রধানমন্ত্রীর নাম ঘোষণা

গ্রিস সরকারের শীর্ষস্থানীয় এক কর্মকর্তা বলেছেন, শিগগিরই দেশটির পরবর্তী প্রধানমন্ত্রীর নাম ঘোষণা হতে পারে। গত তিন দিন ধরে প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ এবং একটি নতুন ঐকমত্যের সরকার গঠনের বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে আলোচনা চলছে। এ প্রেক্ষাপটে মঙ্গলবার বিদায়ী প্রধানমন্ত্রী জর্জ পাপান্দ্রু মন্ত্রিসভার এক বৈঠকের পর বলেছেন, আমরা অচিরেই একটি ইতিবাচক ফলাফলে পৌঁছতে যাচ্ছি। বিশেষজ্ঞ মহল ধারণা করছেন, জর্জ পাপান্দ্রুর পদটি নিতে পারেন ইউরোপীয় সেন্ট্রাল ব্যাংকের সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট লুকাস পাপাডেমোস।


তবে বিষয়টি এখনও নিশ্চিত করা হয়নি। রয়টার্সকে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একটি সূত্র জানিয়েছে, দেশটির প্রধান দুটি রাজনৈতিক দলের সঙ্গেই তার দ্বন্দ্ব রয়েছে। গ্রিসের সংবাদমাধ্যমগুলোর মতে, সরকারপ্রধান হওয়ার দৌড়ে গ্রিসের ইউরোপীয় ন্যায়পাল নিকিফোরোস ডিয়ামান্ডোরাস ও গ্রিসের আইএমএফ প্রতিনিধি পানাজিওটিস রৌমেলিটিসও রয়েছেন। নতুন অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্ব হবে গ্রিসকে অত্যাসন্ন দেউলিয়াত্বের হাত থেকে রক্ষা করা। গত বছর গ্রিসের সরকারি বন্ডের মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ার পর বিনিয়োগকারীদের টাকা ফেরত দিতে গিয়ে চরম আর্থিক সঙ্কটে পড়ে দেশটির সরকার। সে সময় ইউরোপীয় ইউনিয়নের কাছ থেকে বিশাল অংকের ঋণ নিয়ে তাত্ক্ষণিকভাবে পরিস্থিতি সামাল দেয় এথেন্স। ওই ঋণের শর্ত হিসেবে ব্যয় সংকোচন নীতি গ্রহণ করে গ্রিস সরকার। ফলে চাকরি হারায় বহু মানুষ। ইউরোপের মোটা অংকের ঋণ আর বেকারত্বের কারণে গ্রিসে রাজনৈতিক অসন্তোষ চরমে পৌঁছে। ফলে এক বছরের মাথায় ইউরোপীয় ইউনিয়নের কাছে আবারও হাত পাততে বাধ্য হয় গ্রিস সরকার। এবার ইউরোপীয় ইউনিয়নের নেতারা গ্রিসকে দ্বিতীয় দফায় ১৩ হাজার কোটি ইউরো ঋণ দেয়ার শর্ত হিসেবে আবারও ব্যয় সংকোচনের শর্ত দিয়েছেন।
প্রথম দফা ঋণ নেয়ার সময় পেনশনসহ বিভিন্ন সরকারি সুবিধা কমিয়ে দেয়ায় ফুঁসে থাকা গ্রিক জনমত আরেকদফা ব্যয় সংকোচনের বিষয়টি কীভাবে নেবে, তা নিয়ে সংশয়ে পড়েন প্রধানমন্ত্রী পাপান্দ্রু। গত সপ্তাহে ইউরোপের কাছ থেকে শর্তসাপেক্ষে ঋণ গ্রহণের বিষয়ে গণভোট দেয়ার সিদ্ধান্ত নিলেও নিজের দলেরই বিরোধিতার মুখ পড়েন তিনি। বিষয়টি শেষ পর্যন্ত আস্থাভোটে গড়ায় এবং কোনোমতে পার পেয়ে যায় পাপান্দ্রু সরকার। এবার নতুন অন্তর্বর্তী ঐকমত্যের সরকার কীভাবে ইউরোপীয় শর্ত মেনে নিয়ে ১৩ হাজার কোটি ইউরো ঋণ গ্রহণ করে, সেটিই এখন দেখার বিষয়।

No comments

Powered by Blogger.