ওয়াইম্যাক্সের লক্ষ্য পূরণ হয়নি

প্রথম বছর বেঁধে দেয়া টার্গেট ছিল ১৫ হাজার, দ্বিতীয় বছর ৩৫ হাজার, তৃতীয় বছর ৮০ হাজার, চতুর্থ বছর দুই লাখ ও পঞ্চম বছর পাঁচ লাখ গ্রাহক অর্জন। সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, গত অক্টোবর পর্যন্ত ওয়াইম্যাক্স গ্রাহকের সংখ্যা ২ লাখ ৫৮ হাজার। যদিও ১৬ মাস আগে এই সংখ্যা ছিল প্রায় দ্বিগুণ। গত বছর জুন মাসে ওয়াইম্যাক্স সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানগুলোর গ্রাহক সংখ্যা ছিল ৫ লাখ ৪ হাজার। বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ সংস্থার (বিটিআরসি) তথ্যমতে গত এক বছরের বেশি সময়ের মধ্যে ২ লাখ ৪৬ হাজার গ্রাহক এই সেবা থেকে নিজেদের গুটিয়ে নিয়েছেন। দেশে বর্তমানে তিনটি প্রতিষ্ঠান বাংলালায়ন, কিউবি ও ওলো ওয়াইম্যাক্স সেবা দিচ্ছে। এর মধ্যে প্রথম লাইসেন্স পায় বাংলালায়ন ও কিউবি। ২০০৮ সালে নিলামের মাধ্যমে ২১৫ কোটি টাকায় ওয়াইম্যাক্স সেবা দেয়ার লাইসেন্স নেয় এ দু’টি প্রতিষ্ঠান। লাইসেন্সের শর্তানুযায়ী, নেটওয়ার্ক সমপ্রসারণ ও গ্রাহক সংখ্যার ভিত্তিতে প্রতি বছরের জন্য প্রতিষ্ঠানগুলোর নির্দিষ্ট লক্ষ্যমাত্রা পূরণের বাধ্যবাধকতা রয়েছে। সেবাদান শুরুর পর এরই মধ্যে চতুর্থ বছর পার করেছে বাংলালায়ন ও কিউবি। চতুর্থ বছরের রোল আউট শর্ত হিসেবে প্রতিষ্ঠান দু’টির জন্য নির্ধারিত অঞ্চলের ৬৫ শতাংশ এলাকা নেটওয়ার্কের আওতায় আনার বাধ্যবাধকতা ছিল। সংশ্লিষ্টরা জানান, মূলত নেটওয়ার্ক দুর্বলতা ও ইন্টারনেটে গ্রাহক সেবার মান বাড়ানোর ব্যর্থতার কারণে ওয়াইম্যাক্সগুলো পিছিয়ে পড়ছে। এছাড়া চার সেলফোন অপারেটরের থ্রিজি সেবা চালু হওয়ায় তারবিহীন দ্রুতগতির ইন্টারনেট ব্যবহারের ক্ষেত্রে নতুন সুযোগ তৈরি হওয়ায় ওয়াইম্যাক্স সংযোগ বন্ধ করছেন অনেকেই। আগামী কয়েক বছরে এ সেবার সার্বিক অবস্থা কি দাঁড়ায় তা নিয়ে সংশয় রয়েছে। ওয়াইম্যাক্স কোম্পানিগুলো জানিয়েছে, ইন্টারনেট সেবার ধরনে পরিবর্তন ঘটায় ব্যবসায়িকভাবে তারা কিছুটা পিছিয়ে পড়েছেন। তবে এ থেকে উত্তরণের পথ খুঁজছেন। গ্রাহকদের অনাগ্রহের কারণে ওয়াইম্যাক্স কোম্পানির বেশ কিছু গ্রাহকসেবা বুথ বন্ধ করে দিয়েছে। অথবা সঙ্কুচিত করেছে। ২০০৯ সালে ঘটা করেই বাংলাদেশে শুরু হয় ওয়াইম্যাক্স সেবার পথ চলা। বিটিআরসি জানিয়েছে, সেবা শুরুর পর থেকে ২০১২ পর্যন্ত লাইসেন্সের শর্তানুযায়ী গ্রাহক লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে পারলেও গত বছর থেকে নিম্নগামী হতে থাকে এ ধারা। লাইসেন্সের শর্ত অনুযায়ী চতুর্থ বছর শেষে দুই প্রতিষ্ঠানের ন্যূনতম দুই লাখ করে গ্রাহক হওয়ার কথা থাকলেও তাতে ব্যর্থ হয়েছে তারা। অপর প্রতিষ্ঠান গুলোও তাদের দেয়া নির্দিষ্ট লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করতে পারেনি। অক্টোবর পর্যন্ত ওয়াইম্যাক্স গ্রাহকের সংখ্যা ছিল ২ লাখ ৫৮ হাজার। এর আগে গত সেপ্টেম্বরে গ্রাহক ছিল ২ লাখ ৬২ হাজার, আগস্টে ২ লাখ ৭১ হাজার, জুলাইয়ে ২ লাখ ৭৬ হাজার, জুনে ২ লাখ ৮০ হাজার, মে মাসে ২ লাখ ৯১ হাজার, এপ্রিলে ২ লাখ ৯৬ হাজার, মার্চে ৩ লাখ ১ হাজার, ফেব্রুয়ারিতে আবার কিছুটা কমে ২ লাখ ৯৯ হাজার হয়। জানুয়ারিতেও তা ছিল ৩ লাখ ১২ হাজার। ২০১৩ সালের জুন মাসে ওয়াইম্যাক্স সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানগুলোর গ্রাহক সংখ্যা ছিল সবচেয়ে বেশি। ওই সময় গ্রাহক ছিল ৫ লাখ ৪ হাজার। একই বছর জানুয়ারিতে ছিল ৪ লাখ ৬৭ হাজার। ২০১২ সালের জুলাই মাসে ছিল ৪ লাখ ১৭ হাজার এবং একই বছর ফেব্রুয়ারিতে গ্রাহক ছিল ৩ লাখ ২৩ হাজার।

No comments

Powered by Blogger.