লক্ষ্মীপুরে মেয়র তাহেরের হাতে পুলিশ কর্মকর্তা লাঞ্ছিত, মামলা

লক্ষ্মীপুর পৌরসভার মেয়র ও সাবেক জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবু তাহেরের হাতে জেলা গোয়েন্দা পুলিশের উপপরিদর্শক মোস্তফা আনোয়ার লাঞ্ছিত, সাবেক পৌর যুবলীগ নেতা আমীর হোসেন দুলাল মারলেন থাপ্পড়। এ ঘটনায় পুলিশের উপপরিদর্শক মোস্তফা আনোয়ার বাদী হয়ে রাতে আমীর হোসেন দুলালকে প্রধান আসামি করে আরও ৪-৫ জনকে অজ্ঞাত  দেখিয়ে সদর থানায় একটি মামলা করেছেন। ঘটনাটি ঘটেছে বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১০টায় শহরের চকবাজার জামে মসজিদের পেছনে। জেলা গোয়েন্দা পুলিশের উপপরিদর্শক মোস্তফা আনোয়ার জানান, বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১০টায় জেলা শহরের চকবাজার জামে মসজিদের পেছনে আমার মোটরসাইকেলটি রেখে আমি দাঁড়িয়ে থাকি। পেছনে মসজিদের কাজ চলছে। এ সময় সাবেক পৌর যুবলীগের সভাপতি আমীর হোসেন দুলালসহ কয়েকজন এগিয়ে এসে আমাকে ধমক দিয়ে জিজ্ঞাসা করে মোটরসাইকেলটি কার? তখন আমি আমার পরিচয় দেই এবং জেলা গোয়েন্দা পুলিশের উপপরিদর্শক হিসেবে কর্মরত রয়েছি বলে জানাই। পুলিশকে ব্যঙ্গ করে এবং আমাকে গালাগালি করে মেয়রকে দেখিসনা বেটা বলে শাসিয়ে আমাকে থাপ্পড় মারে। এ সময় পেছন দিক থেকে মেয়র আবু তাহের এগিয়ে এসে তাদের সঙ্গে আমাকে ধাক্কা দিতে দিতে অনেক দূর নিয়ে যায়। এ ঘটনার খবর পেয়ে লক্ষ্মীপুর সদর থানা এবং জেলা গোয়েন্দা পুলিশ ও সহকারী পুলিশ সুপার (সার্কেল) মো. নাসিম মিয়া ঘটনাস্থলে এসে আমাকে উদ্ধার করে। এ ঘটনায় আমি বাদী হয়ে আমীর হোসেন দুলাল ও অজ্ঞাত আরও ৪-৫ জনকে আসামি করে সদর থানায় একটি মামলা করি। একাধিক সূত্রে জানা যায়, ঘটনার সময় চকবাজার জামে মসজিদের সভাপতি পৌর মেয়র আবু তাহের মার্কেট নির্মাণের জন্য ওই স্থানে কাজ করছেন। কিন্তু ঘটনার পর থেকে ব্যবসায়ীদের মাঝে এক ধরনের আতঙ্ক বিরাজ করছে। ওই এলাকায় জেলা পরিষদের জায়গায় ইজারাদারদের নির্মিত নয়টি দোকানঘর ভাঙার পাঁয়তারা করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। মামলার এজাহারসূত্রে আরও জানা যায়, তালিকাভুক্ত চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী মিন্টু চকবাজার এলাকায় অবস্থান করছিল। এ খবর পেয়ে পুলিশ তাকে গ্রেপ্তারের জন্য চকবাজার এলাকায় আসে। লক্ষ্মীপুর পৌরসভার মেয়র আবু তাহের ও অন্যান্য লোকজনের উপস্থিতিতে  পৌরসভার বাঞ্ছানগর গ্রামের মৃত নুরুজ্জামান মাস্টারের ছেলে আমীর হোসেন দুলালসহ অজ্ঞাতনামা ৪-৫ জন  লাটিসোটা নিয়ে পুলিশ কর্মকর্তার ওপর হামলা করে। এ সময় তারা পুলিশ কর্মকর্তাকে সরকারি কাজে বাধা দেয় এবং হত্যার উদ্দেশে কিল-ঘুষি মেরে গুরুতর আহত করে। আহত অবস্থায় উদ্ধার করে লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। এ ঘটনায় সদর থানায় মামলা হয়েছে। সাবেক পৌর যুবলীগ নেতা আমীর হোসেন দুলাল জানান, এ বিষয়ে আমি কোন কিছুই জানি না। ঘটনার পরে আমি এসেছি, এর বেশি কিছুই জানি না। লক্ষ্মীপুর পৌর মেয়র ও সাবেক জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবু তাহেরের সঙ্গে মুঠোফোনে সংবাদকর্মীরা একাধিকবার চেষ্টা করেও  তার মতামত নেয়া সম্ভব হয়নি। লক্ষ্মীপুর পুলিশ সুপার শাহ মিজান সাফিউর রহমান ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে জানান, এ ঘটনায় সদর থানায় একটি মামলা করা হয়েছে। আসামিদের গ্রেপ্তার অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলে জানান তিনি।

No comments

Powered by Blogger.