ডিএমপির সাড়া পায়নি বিএনপি, সমাবেশের অনুমতি দেওয়া না-দেওয়া পুলিশের ব্যাপার : স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী

৫ জানুয়ারি রাজধানীতে সমাবেশের অনুমতির বিষয়ে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) পক্ষ থেকে এখনো সাড়া পায়নি বিএনপি। আজ শনিবার দুপুরে বিএনপির তিন সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল ডিএমপি কার্যালয়ে গিয়ে ঊধ্বর্তন কর্মকর্তাদের না পেয়ে ফিরে যায়। বিএনপি বলছে, অনুমতি না পেলেও ৫ জানুয়ারি নির্ধারিত কর্মসূচি পালন করবে। আজ শনিবার দুপুরে ডিএমপি কার্যালয়ে যান বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আব্দুল আউয়াল মিন্টু, প্রচার সম্পাদক জয়নুল আবদীন ও সহদপ্তর সম্পাদক আবদুল লতিফ। জয়নুল আবদীন প্রথম আলোকে বলেন, তাঁরা ডিএমপি কার্যালয়ে গিয়ে ঊর্ধ্বতন কোনো কর্মকর্তার দেখা পাননি। একজন প্রশাসনিক কর্মকর্তা তাঁদের জানিয়েছেন, কোনো ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা নেই। তিনি আরও বলেন, ৫ জানুয়ারির সমাবেশের অনুমতি চেয়ে তাঁরা গত ২২ ডিসেম্বর আবেদন করেছেন। বারবার তাঁরা এর অগ্রগতি জানতে গেলেও তাঁদের কিছু জানানো হয়নি। এক প্রশ্নের জবাবে জয়নুল আবদীন বলেন, তাঁরা ৫ জানুয়ারি নির্ধারিত কর্মসূচি পালন করবেন। কোথায় এই সমাবেশ হবে, তা দলের নীতিনির্ধারকেরা সিদ্ধান্ত নিয়ে জানাবেন। খালেদা জিয়া গত বুধবার সংবাদ সম্মেলনে এই দিবসটিকে ‘গণতন্ত্র হত্যা দিবস’ হিসেবে পালন করার ঘোষণা দেন। তিনি জানান, ওই দিন সারা দেশে বিক্ষোভ-সমাবেশ, কালো পতাকা মিছিল করবে বিএনপির নেতৃত্বাধীন ২০-দলীয় জোট। আর কেন্দ্রীয়ভাবে ঢাকায় সমাবেশ করা হবে। এই কর্মসূচিতে বাধা না দিয়ে শান্তিপূর্ণভাবে পালনের সুযোগ দিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
সমাবেশের অনুমতি দেওয়া না-দেওয়া পুলিশের ব্যাপার : স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী
স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলেছেন, ৫ জানুয়ারি বিএনপির সমাবেশের অনুমতি দেওয়া না-দেওয়া পুলিশের ব্যাপার। বিএনপিকে সমাবেশের অনুমতি দেবে কি না, পুলিশই বলতে পারবে। আজ শনিবার গাজীপুর সিটি করপোরেশনের টঙ্গী আঞ্চলিক অফিস প্রাঙ্গণে বিশ্ব ইজতেমার প্রস্তুতি সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে আসাদুজ্জামান খান এ কথা বলেন। তিনি বলেন, যেকোনো ধরনের নাশকতা রোধে ৫ জানুয়ারি সারা দেশে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সতর্ক থাকবে। বিশৃঙ্খলাকারীদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আগামী সোমবার অর্থাৎ ৫ জানুয়ারি বিএনপির সমাবেশকে সামনে রেখে রাজধানীতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ব্যাপক প্রস্তুতি রয়েছে বলেও জানান স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী। গাজীপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র অধ্যাপক এম এ মান্নানের সভাপতিত্বে সভায় উপস্থিত ছিলেন মুক্তিযুদ্ধবিষয়কমন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক।
সভায় স্বরাষ্ট্রসচিব মোজাম্মেল হক, পুলিশের আইজি এ কে এম শহিদুল হক, তাবলিগ জামাতের শীর্ষ মুরুব্বি সাবেক সচিব মো. বদিউর রহমান, ঢাকা বিভাগীয় কমিশনার মো. জিল্লার রহমান, স্থানীয় সাংসদ জাহিদ আহসান, ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি এস এম মাহফুজুল হক নূরুজ্জামান, গাজীপুরের জেলা প্রশাসক মো. নুরুল ইসলাম, গাজীপুরের পুলিশ সুপার হারুন অর রশিদসহ বিভিন্ন দপ্তর-অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। প্রস্তুতি সভায় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলেন, প্রশাসনে যাঁরা বর্তমানে কর্মরত আছেন, তাঁদের অধিকাংশই বহুবার বিশ্ব ইজতেমায় দায়িত্ব পালন করেছেন। যার জন্য ইজতেমায় নিরাপত্তা নির্বিঘ্ন করতে বেগ পেতে হবে না। স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলেন, ইজতেমার প্রতি পর্বে পাঁচ হাজারের অধিক পুলিশ থাকবে। এ ছাড়াও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অন্য সংস্থার লোকজন মোতায়েন থাকবে।
টঙ্গীর তুরাগ তীরে ৯ জানুয়ারি থেকে শুরু হচ্ছে প্রথম পর্বের বিশ্ব ইজতেমা। মুসল্লিদের সুবিধার্থে ৯ থেকে ১১ জানুয়ারি ও ১৬ থেকে ১৮ জানুয়ারি দুই পর্বে এবারও ইজতেমা অনুষ্ঠিত হবে। বিশ্ব মুসলিম উম্মাহর দ্বিতীয় বৃহত্তম ধর্মীয় অনুষ্ঠান সফলভাবে সম্পন্ন করতে সার্বিক প্রস্তুতি নিয়েছে ঢাকা ও গাজীপুর জেলা প্রশাসন। স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, অন্য বছরের মতো এবারও সফলভাবে বিশ্ব ইজেতমা সম্পন্ন হবে।

No comments

Powered by Blogger.