বঙ্গবন্ধুর মাজারে হাজারো মানুষের ঢল, আনন্দ উলস্নাস

নিজস্ব সংবাদদাতা, গোপালগঞ্জ, ২৮ জানুয়ারি জাতির জনক বঙ্গবন্ধৃু শেখ মুজিবুর রহমানের হত্যাকা-ের বিচারের রায় কার্যকর হওয়ায় পর তাঁর জন্মস্থান গোপালগঞ্জ ও টুঙ্গিপাড়া আনন্দে ভাসছে।
১৯৭৫-এর ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে দাফন করার সময় যারা উপস্থিত ছিলেন এবং যাঁরা বঙ্গবন্ধুর জানাজায় শরিক হতে পেরেছিলেন, তাঁরা বৃহস্পতিবার ভোরে ফজরের নামাজের পর প্রথমে জাতির জনকের কবর জিয়ারত করেন। এদিকে ভোর থেকে সমাধি সৌধের ভেতরে কোরান তেলোয়াত করা হয়। উত্তোলন করা হয়েছে জাতীয় পতাকা। টুঙ্গীপাড়া ও আশপাশের বিভিন্ন জেলা থেকে স্কুল ও কলেজের শিক-শিাথর্ী ও আওয়ামী লীগের নেতাকমর্ীরা আসেন তাঁদের প্রাণের অর্ঘ্য নিবেদন করতে। বাণিজ্যমন্ত্রী ফারম্নক খানসহ স্থানীয় টুঙ্গিপাড়া আওয়ামী লীগের নেতাকমর্ীরা দুপরে সাড়ে ১২টার দিকে বঙ্গবন্ধুর মাজারে পুষ্পসত্মবক অর্পণ, ফতেহা পাঠ ও বিশেষ মোনাজাত করে তাঁর প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। এ সময় হাজার হাজার মানুষ উপস্থিত ছিলেন। ভোর থেকে আসা মুজিব ভক্তদের পদচারণায় মাজার কমপেস্নক্স মুখরিত হয়ে ওঠে। টুঙ্গিপাড়ার বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও বাড়ীতে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়। মোড়ে মোড়ে বঙ্গবন্ধুর ভাষণ ও দেশত্মবোধক বিভিন্ন গানের রেকর্ড বাজানো হয়। জেলা আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগ গোপালগঞ্জ শহরের বঙ্গবন্ধুর বাড়িতে ও জেলা আওয়ামী লীগ অফিসের তাঁর প্রতিকৃতিতে পুষ্পমাল্য অর্পণ করে শহরে আনন্দ মিছিল বের করে। জেলার টুঙ্গিপাড়া, কোটালীপাড়া, কাশিয়ানী ও মুকসুদপুর উপজেলাগুলোতে মিছিল ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। পরে একে অপরকে মিষ্টি খাইয়ে আনন্দ উলস্নাস করে।
বাণিজ্যমন্ত্রী ও গোপালগঞ্জ ১ আসনের সাংসদ লে. কর্নেল (অব) মোঃ ফারম্নক খান বঙ্গবন্ধুর প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করে এক প্রতিক্রিয়ায় বলেন, বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার রায় শেষ পর্যনত্ম কার্যকর হয়েছে। এ রায় কার্যকরের মাধ্যমে বাঙালী জাতি আজ কলঙ্ক মুক্ত হলো। এই দিনটিরই অপো করছিল সারা জাতি। রায়ের মাধ্যমে দেশের লাখো মানুষের প্রাণের দাবি প্রতিষ্ঠিত হলো। এতে বিশ্বে জাতি হিসেবে আমাদের ভাবমূর্তি পুনরম্নদ্ধার হবে।
বঙ্গবন্ধুর লাশ দাফনকারী টুঙ্গিপাড়া পৌরসভার সাবেক চেয়ারম্যান ইলিয়াস হোসেন, রজব আলী মোলস্না, সাহেরা খাতুন, রেডক্রিসেন্ট হাসপাতালের সাবেক কর্মচারী আব্দুল হাই মেম্বার (৭৫), কাঠ মিস্ত্রি আইয়ুব আলী, সে সময়ের টুঙ্গিপাড়ার পোস্ট মাস্টার আনোয়ার হোসেন, বঙ্গবন্ধুর স্নেহধন্য মুক্তিযোদ্ধা বিশ্বাস সিরাজুল হক পান্না, তরম্নণ আওয়ামী লীগ নেতা আসলাম সরদার ফাঁসির রায় কার্যকর হওয়ায় সনত্মোষ প্রকাশ করে বলেছেন, জাতি এই দিনটির জন্য অপো করছিল। এর মাধ্যমে সত্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। ফাঁসি কার্যকর হওয়ার পর সনত্মোষ প্রকাশ করে গোপালগঞ্জ সদর, কাশিয়ানী ও মুুকসুদপুর এবং কোটালীপাড়া উপজেলা সদরের সাধারণ মানুষকে রাসত্মায় বের হয়ে শোকরানা আদায় করতে দেখা গেছে। এসব জায়গায় আওয়ামী লীগের উদ্যোগে বিজয় মিছিল শোকরানা আদায়, মিলাদ মাহফিল, দোয়া ও মোনাজাত অনুষ্ঠিত হয়েছে। সন্ধ্যায় মন্দিরে মন্দিরে বিশেষ প্রার্থনা অনুষ্ঠিত হয়।
মধ্যরাতে ফাঁসি কার্যকর হওয়ার খবর ছড়িয়ে পড়ায় ভোর থেকে টুঙ্গিপাড়ার রাসত্মায় মানুষ নেমে আসে। বিভিন্ন দোকানপাট ও বাসা-বাড়িতে উড়ানো হয় জাতীয় পতাকা। মানুষ রাসত্মায় বের হয়ে উলস্নাস প্রকাশ করে। স্কুল-কলেজসহ বিভিন্ন শিা প্রতিষ্ঠান ছুটি হয়ে যায়। বেলা ১০টার দিকে বঙ্গবন্ধু সমাধীসৌধের দিকে মানুষের কাফেলা ছুটতে শুরম্ন করে। এর সঙ্গে বিভিন্ন উপজেলা ও আশপাশের জেলা থেকে আসা শিাথর্ী, আওয়ামী লীগ দলীয় নেতাকমর্ী ও হাজার হাজার মুজিবভক্ত এই কাফেলাকে আরও বেগবান করে। টুঙ্গিপাড়ায় স্থানীয় আওয়ামী লীগ বিজয় মিছিল বের করে। তারা সমাবেশও করে। স্থানীয় আওয়ামী লীগ সভাপতি আঃ হালিম শেখের সভাপতিত্বে সমাবেশে ব্ক্তব্য রাখেন টুঙ্গিপাড়া উপজেলা চেয়ারম্যান সোলায়মান বিশ্বাস, ইমদাদুল হক মুন্সি, আবুল বশার খায়ের, তারিকুল ইসলাম, আসলাম সরদার প্রমুখ।

No comments

Powered by Blogger.