আরও ৫ মুসল্লির মৃত্যু- ইজতেমার ময়দানে মানুষের ঢল

আখেরি মোনাজাতে অংশ নিতে টঙ্গীর তুরাগতীরে বিশ্ব ইজতেমার ময়দানে মানুষের ঢল নেমেছে। লাখ লাখ মুসল্লি হেঁটে ইজতেমা ময়দানের দিকে আসছেন। মানুষের উপচে পড়া ভিড় ইজতেমা ময়দান পেরিয়ে আশপাশের সড়ক, অলিগলি ও বাড়িঘরে ছড়িয়ে পড়েছে।
আজ রোববার জোহরের নামাজের আগে আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে ইজতেমার প্রথম পর্ব শেষ হবে।

পাঁচ মুসল্লির মৃত্যু:
বিশ্ব ইজতেমা ময়দানে গতকাল শনিবার রাতে ভারতীয় নাগরিকসহ পাঁচ মুসল্লির মৃত্যু হয়েছে। তাঁরা হলেন: ভারতের কলকাতার ২৪ পরগনার মো. রফিক উদ্দিন (৬৩), ফরিদপুরের বোয়ালমারী থানার মৈন্দা গ্রামের আলাউদ্দিন শেখ (৫০), যশোরের মনিরামপুর থানার তেঁতুলিয়া এলাকার সৈয়দ আলী খান (৭০), হবিগঞ্জের লাখাইল থানার সিংহ গ্রামের মো. ইব্রাহীম (৫০) ও চাঁদপুরের উত্তর দাজদি এলাকার আবুল খায়ের (৫৫)। আজ রোববার ভোরে ফজরের নামাজের পর তাঁদের জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। এ নিয়ে গত তিন দিনে নয়জন মুসল্লির মৃত্যু হয়েছে।

মানুষের স্রোত
আজ আখেরি মোনাজাত উপলক্ষে গতকাল শনিবার রাত থেকেই টঙ্গীর তুরাগতীরে বিশ্ব ইজতেমার ময়দানে মানুষের স্রোত নামে। আজ রোববার ভোর থেকেই লাখ লাখ মুসল্লি হেঁটে ইজতেমা মাঠের দিকে আসছেন। আখেরি মোনাজাতে অংশ নিতে এসেছেন ধনী-গরিব, নারী-পুরুষ, বৃদ্ধ-যুবক, কিশোর-শিশুসহ সব শ্রেণী-পেশা ও বয়সের মানুষ। তাঁরা সবাই গুনাহ থেকে মুক্তি, স্বজনদের জন্য দোয়া এবং সর্বোপরি সারা বিশ্বের মানুষের শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনা করবেন। আজ আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্ব শেষ হবে। চার দিন বিরতির পর ১৮ ডিসেম্বর শুরু হবে এর দ্বিতীয় পর্ব।

সড়ক বন্ধ
পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স সূত্রে জানা গেছে, রোববার ভোর রাত থেকে ধৌর ব্রিজ থেকে আব্দুল্লাহপুর হয়ে প্রগতি সরণি এবং টঙ্গী ব্রিজ থেকে গাজীপুর চৌরাস্তা পর্যন্ত (বিমানযাত্রী, ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি ও অ্যাম্বুলেন্স ব্যতীত) সব ধরনের যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকবে। ঘোড়াশাল থেকে পুবাইল-কালীগঞ্জ হয়ে আসা যানবাহন টঙ্গী রেলওয়ে স্টেশনের পূর্বে মরকুন (কে-২) পর্যন্ত চলাচল করতে পারবে। ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক থেকে ঘোড়াশাল হয়ে ঢাকাগামী যানবাহন কাঁচপুর-যাত্রাবাড়ী সড়ক ব্যবহার করবে। ইজতেমায় গমনেচ্ছু মুসল্লি, উত্তরার অধিবাসী, বিমানযাত্রী, ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি, অ্যাম্বুলেন্স ব্যতীত অন্য সব ধরনের যানবাহনের চালকদের বিমানবন্দর সড়কের পরিবর্তে মিরপুর-সাভার সড়ক ব্যবহার করতে বলা হয়েছে। ঢাকা মহানগরের যেসব মুসল্লি হেঁটে ইজতেমাস্থলে যাবেন, তাঁদের হজরত শাহজালাল বিমানবন্দর গোলচত্বর থেকে আজমপুর-আব্দুল্লাহপুর হয়ে টঙ্গী ব্রিজ পরিহার করে তুরাগ নদের ওপর নির্মিত বেইলি ব্রিজ অথবা কামারপাড়া ব্রিজ ব্যবহার করতে বলা হয়েছে।

বিশেষ ট্রেন
টঙ্গী রেলওয়ে স্টেশনের কর্মকর্তা আবু তাহের জানান, আখেরি মোনাজাত উপলক্ষে বাংলাদেশ রেলওয়ের পক্ষ থেকে আখাউড়া, কুমিল্লা, ময়মনসিংহসহ বিভিন্ন রুটে ১৪টি বিশেষ ট্রেনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এ ছাড়া আখেরি মোনাজাতের আগে ও পরে সব ট্রেন টঙ্গী স্টেশনে যাত্রাবিরতি করবে।
গাজীপুরের জেলা প্রশাসক মো. নুরুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা সরকারি সব নির্দেশনা পালন করে যাচ্ছি। মুসল্লিদের চাহিদা মোতাবেক সব রকম ব্যবস্থা নেওয়ার চেষ্টা করেছি। আশা করছি, আল্লাহর রহমতে আখেরি মোনাজাত নির্বিঘ্নেই সম্পন্ন হবে।’

No comments

Powered by Blogger.