ক্যাম্পাস সংবাদ- ক্যামব্রিয়ান স্কুল এ্যান্ড কলেজে নবীনবরণ

বিএসবি ফাউন্ডেশন পরিচালিত ক্যামব্রিয়ান স্কুল এ্যান্ড কলেজের উদ্যোগে ১১ জানুয়ারি ২০১৩ শুক্রবার বিকালে শহীদ সোহ্রাওয়ার্দী ইনডোর স্টেডিয়াম মিরপুরে অনুষ্ঠিত হলো ২০১২ সালের পিএসসি, জেএসসি ও জেডিসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ প্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনা ও বিএসবি ফাউন্ডেশন পরিচালিত প্রতিষ্ঠানসমূহে প্লে থেকে ৯ম শ্রেণী পর্যন্ত নবাগত শিক্ষার্থীদের নবীনবরণ অনুষ্ঠান।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তথ্যমন্ত্রী জনাব হাসানুল হক ইনু এমপি। এতে সভাপতিত্ব করেন বিএসবি ফাউন্ডেশন ও ক্যামব্রিয়ান স্কুল এ্যান্ড কলেজের চেয়ারম্যান লায়ন এম.কে.বাশার পিএমজেএফ। অনুষ্ঠানে দেশবরেণ্য শিক্ষক, শিক্ষাবিদ, সমাজের শীর্ষস্থানীয় ব্যক্তিবর্গ এবং সারাদেশ থেকে আগত ২০১২ সালের পিএসসি ও জেএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ প্রাপ্ত প্রায় ১০ হাজার শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকগণ উপস্থিত ছিলেন। প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী বলেন, আজকের তরুণরাই ভবিষ্যতে জাতিকে নেতৃত্ব দেবে। তারাই দেশ চালাবে। দেশ পরিচালনার জন্য প্রস্তুতি নেয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, বাংলাদেশকে একটি গণতান্ত্রিক ও অসাম্প্রদায়িক এবং দুর্নীতি, সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ, মাদক ও নেশামুক্ত দেশ হিসেবে বিনির্মাণে শিক্ষার্থীদেরকে উজ্জ্বল ভূমিকা রাখতে হবে। সভাপতির ভাষণে লায়ন এম.কে.বাশার বলেন, ২০১২ সালের পিএসসি ও জেএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ প্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের জন্য এ সংবর্ধনার আয়োজন করা হয়েছে। যাতে তারা উৎসাহ-উদ্দীপনা নিয়ে আগামীতে আরো ভালো পড়াশোনা করতে পারে। গত ৭ বছর ধরে মেধাবী ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য বিএসবি ফাউন্ডেশন এ ধরনের আয়োজন করে আসছে। বিএসবি ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান অনুষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের জন্য বিভিন্ন স্কলারশিপ প্যাকেজের ঘোষণা দেন। অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণকারী সকল শিক্ষার্থীকে মেডেল ও সার্টিফিকেট প্রদান করা হয়। সংবর্ধনা শেষে ক্যামব্রিয়ান কালচারাল একাডেমীর আয়োজনে ক্যামব্রিয়ান স্কুল এ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থী চ্যানেল আই ক্ষুদে গানরাজ, সেরা কণ্ঠ ও ভাওয়াইয়া শিল্পীদের পরিবেশনায় মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশন করা হয়।
বাকৃবিতে সুবর্ণজয়ন্তী ও এ্যালামনাই পুনর্মিলনী

ক্যাম্পাস আনন্দ আর খোশগল্পে মেতে উঠেছে। ২ জানুয়ারি রাতেই কোন কোন বন্ধু-বান্ধবী ক্যাম্পাসে এসেছে তার খোঁজখবর নিচ্ছে শফিক ভাই। এদিকে কে কোন্ রুমে ছিল তার প্রাক্তন স্মৃতিগুলো স্মরণ করছে। কেউ একা এসেছে আবার কেউ নিজের পরিবার নিয়ে এসেছে। সবাই নিজের সাহচর্য ও এক সময়ের বন্ধুদের নাম স্মরণ করতে লাগল। এভাবেই চলছিল বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবির) সুবর্ণজয়ন্তী ও এ্যালামনাই পুনর্মিলনীতে অংশ নেয়ার পূর্ব প্রস্তুতি।
বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাসকৃত সকল প্রায় ১০ হাজার কৃষিবিদদের পদচারণায় মুখর হয়েছিল ৩-৪ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত বাকৃবির সুবর্ণজয়ন্তী ও এ্যালামনাই পুনর্মিলনী। প্রথম দিন সকাল সকালই প্রস্তুতি নিতে থাকে উদ্বোধনী অনুষ্ঠান স্বচক্ষে অবলোকন করার জন্য। অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণকারী রিয়াদ ভাই শাহীন ভাইকে বলছিলÑকিরে, এত তাড়াহুড়া কিসের? উওরে শাহীন ভাই বলল, কতদিন ধরে আমার প্রাক্তন ক্লাসমেটদের দেখি না। ওরা কেমন আছে এই খোঁজখবর নিতে তাই একটু আগে যাচ্ছি। উদ্বোধন হয়ে যাওয়ার পর খাবার সংগ্রহ করতে গিয়ে সালাউদ্দিন ভাই দেখল অনেক বড় লাইন। তাই উনি একটি পরিকল্পনা নিয়ে সামনে কোন পরিচিত লোককে দিয়ে খাবার সংগ্রহ করে। তারপর বিভিন্ন অনুষদে প্রত্যেক ব্যাচ অনুযায়ী পরিচয় ও নিজের অবস্থান তুলে ধরে অনেক ব্যস্ততার মাঝেও সুবর্ণজয়ন্তী ও এ্যালামনাই পুনর্মিলনী করলেন আবদল্লা ভাই। রাতের মনোমুগ্ধকর সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান দেখে সকলেই উদ্ভাসিত এই ভেবে বাকৃবিতে কত গুণী শিল্পীর পদচারণা। সকলের প্রিয় মুন ভাই ও আবদুল্লা ভাই রাতে ব্যাডমিন্টন খেলার আয়োজন করে জুনিয়র বনাম সিনিয়রদের খেলার মাধ্যমে। রাতের সময়টাকে কেউ নষ্ট করতে চায় না। তাই সকলে আলাপচারিতা, ক্যাম্পাস ও হল জীবনের স্মৃতিচারণা, আড্ডা দেয়া, ঘোরাঘুরি করে সবাই সময় কাটান।
সদ্য পাস করা মামুন বলেন, পুনর্মিলনী আসলে বড়দের জন্য, যারা কয়েক বছর আগে ক্যাম্পাস ছেড়ে গেছে। কৃষিবিদ আলম বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এ ধরনের আয়োজন করে সবাইকে অনেকদিন পর এক সুতায় গাঁথার সুযোগ করে দিয়েছে।
প্রধান অতিথি হিসেবে ক্যাম্পাসে পদার্পণ করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, অর্থনীতির উন্নয়নের প্রধান হাতিয়ার কৃষি। কৃষিবান্ধব সরকার কৃষিতে সমৃদ্ধি অর্জনে নিরলস কাজ করে যাচ্ছে। খাদ্য ঘাটতি মিটিয়ে দেশ আজ পুষ্টি, নিরাপত্তা অর্জনে অগ্রসর হচ্ছে। বিশ্বে খাদ্য মন্দায় বাংলাদেশ আগামীতে উদ্বৃত্ত খাদ্য রফতানি করবে। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বাকৃবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. রফিকুল হক। সন্ধ্যায় ঢাকা থেকে আগত শিরোনামহীন ব্যান্ডের শিল্পীরা কনসার্ট পরিবেশন করেন। আনন্দে দিশেহারা হয় সকল এ্যালামনাই। এছাড়াও সুবর্ণজয়ন্তী ও এ্যালামনাই পুনর্মিলনী উপলক্ষে আয়োজন করা হয় কৃষি প্রযুক্তি মেলা। এ মেলা চলে ৫ জানুয়ারি পর্যন্ত।
সুবর্ণজয়ন্তী ও এ্যালামনাই পুনর্মিলনী উপলক্ষে সুসজ্জিত উপাচার্য বাসভবন ও কার্যালয়, ১২টি হল, টিএসসি, প্রশাসন ভবন, বিজয় ’৭১, শহীদ মিনার, শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিন মিলনায়তন, বকুলতলা, মুক্তমঞ্চ, হ্যালিপ্যাড, লাইব্রেরি, মরণ সাগর, ৬টি অনুষদ, মার্কেট, স্টেডিয়াম, ক্রীড়া প্রশিক্ষণ বিভাগ, বোটানিক্যাল গার্ডেন, রাস্তার প্রত্যেকটি মোড়, সৈয়দ নজরুল ইসলাম ভবন, নিরাপত্তা শাখা, পলিটিক্যাল মোড় ও নদের ধার দেখতে ময়মনসিংহ শহর। এসব রংবেরঙের আলোকসজ্জা দেখতে মানুষের ঢল নামে বাকৃবির ক্যাম্পাসে।
এছাড়াও বাকৃবি সাংবাদিক সমিতি আয়োজন করে বাকৃবির সাবেক সাংবাদিকদের পুনর্মিলনী। সকলের ব্যস্ততার মাঝেও নিজের অবস্থান ও নিজেদের কাছে পেয়ে সকলেই আনন্দে আত্মহারা হয়।
ক্যাম্পাসে আর হয়ত আসা হবে না। এখন চাকরি করছি, সংসার জীবণে প্রবেশ করেছি। এটাই মনে হয় শেষ দেখা একথা বলতে বলতে এক প্রাক্তন এ্যালামনাই চোখ মুছতে লাগলেন এবং তার প্রিয় বন্ধুকে জড়িয়ে ধরলেন। জীবনে আর কোন দিন দেখা হবে কিনা জানি না তবে পরবর্তী প্রজন্মের কাছে আমাদের স্মৃতিগুলো দেখে বুঝতে পারবে বন্ধুত্ব কতটা আপন। যাবার সময় একথা বলতে লাগলেন আর চোখ মুছতে লাগলেন সকল এ্যালামনাই। এভাবেই শেষ হলো বাকৃবির সুবর্ণজয়ন্তী ও এ্যালামনাই পুনর্মিলনী মহোৎসব।

ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটিতে পিঠা উৎসব
আবহমান বাংলার সুস্বাদু পিঠার কথা স্মরণ করিয়ে দিতেই গত ০৯-০১-২০১৩ ইং তারিখে ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ তাদের নিজস্ব অডিটরিয়ামে শুরু করেছে ‘পিঠা উৎসব ২০১৩ ইং।’ উক্ত অনুষ্ঠান উদ্বোধন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান মোর্শেদা চৌধুরী। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. আবদুল মান্নান চৌধুরী। প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপাচার্য বলেন, ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ ছাত্রছাত্রীদের বাস্তব ও কর্মমুখী শিক্ষার পাশাপাশি বাংলাদেশের সংস্কৃতির ঐতিহ্য লালন করার শিক্ষাও দিয়ে থাকে। পিঠা উৎসবে চাঁদপুলি, ভাপা পিঠা, পাখন পিঠা, চিতই পিঠা, দুধ চিতই, ফুল পিঠা, পাতা পিঠা, পাটি সাপটা ও কুলি পিঠাসহ বাহারি পিঠার সমারোহ ঘটেছ্।ে আর তাইতো এক আনন্দঘন পরিবেশ বিরাজ করছে ছাত্র ও ছাত্রীসহ সকলের মাঝে।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক এডভাইজর অধ্যাপক ড. এম. নূরুল ইসলাম; প্রফেসর এ কে এম জিয়াউল ইসলাম, পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক; জনাব নজরুল ইসলাম, প্রক্টর; অধ্যাপক মকবুল হোসেন, বিভাগীয় প্রধান, ব্যবসায় প্রশাসন বিভাগসহ সকল বিভাগের শিক্ষক শিক্ষিকাসহ ছাত্রছাত্রীবৃন্দ। সবচেয়ে বেশি রকমারি পিঠার আয়োজন ও পরিবেশনের ভিত্তিতে পিঠা উৎসব ২০১৩ এর প্রথম স্থান অধিকার করে আইন বিভাগ, দ্বিতীয় ব্যবসায় প্রশাসন বিভাগ ও তৃতীয় স্থান অধিকার করে ইংরেজী বিভাগ। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও ট্রাস্টি বোর্ডের মাননীয় চেয়ারম্যান মোর্শেদা চৌধুরী মেলার বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করেন। অনুষ্ঠানের সার্বিক তত্ত্বাবধানে ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেপুটি রেজিস্ট্রার জনাব খাইরুল আনাম, সিনিয়র সহকারী রেজিস্ট্রার জনাব মারুফ আহমেদ।
অমিত মালাকার

No comments

Powered by Blogger.