মোবাইল ফোন হ্যাকিং

মোবাইল ফোনে হ্যাকিং শুরু হয়েছে। অতএব সাবধান! সবাইকে সাবধান হতে হবে। আগেই শুরু হয়েছে কম্পিউটারে হ্যাকিং। এবার মোবাইল ফোনে।
সুবিধার সঙ্গে অসুবিধা। দুটি যেন হাত ধরাধরি করে চলে।
সুবিধা ভোগ করতে হলে অসুবিধাও ভোগ করতে হয়, কেউ যদি এমন কথা বলে, তাহলে বলতে হয় প্রযুক্তি এমনসব সুবিধা সৃষ্টি করছে, তাতে উদ্ভাবিত প্রযুক্তির সম্ভাব্য অসুবিধাগুলো ঠেকাবারও সুবিধা প্রযুক্তির মাধ্যমেই তৈরি হতে পারে। কম্পিউটার হ্যাকিং ঠেকানোর ব্যবস্থা উদ্ভাবিত হয়েছে কিছু কিছু। তবে পুরোপুরি হয়ত শীঘ্রই হয়ে যাবে। এখন মোবাইল ফোন হ্যাকিং বন্ধ করার প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞদের বের করতে হবে। বিশেষজ্ঞদের কাছে মানুষের এখন ব্যাকুল প্রত্যাশা এটাই।
চার-পাঁচ দশক আগেও জিনিসটাকে এ দেশে কেউ চিনত না। বিষয়টি বা জিনিসটি ছিল ধারণাতীত, সেটা এখন এ দেশে বর্ণ গোত্র আর্থ-সামাজিক অবস্থা নির্বিশেষে প্রায় সবাই ব্যবহার করছে। সেটাই মোবাইল ফোন। এই জিনিসটি আলাদীনের চেরাগকেও হার মানিয়েছে। এমন সব অসাধ্য এবং অবিশ্বাস্য কাজ করছে এবং ভবিষ্যতে আরও করবে বলে জানা যাচ্ছে। তাতে এক বিস্ময়কর জিনিস বলেই মনে হয়।
মোবাইল ফোন এখনই যে কাজগুলো করে দিচ্ছে মানুষের ফোনালাপসহ অনেক ক্ষেত্রে যেন বিপ্লবাত্মক পরিবর্তন এসে গেছে। মানুষের কাজ অনেক হাল্কা করে দিয়েছে, সময় বাঁচিয়ে দিচ্ছে, এটা খুব বড় সুবিধা হলেও এর সঙ্গে রয়েছে আরও সুবিধা। শিষ্ট, শান্তিপ্রিয় মানুষের বাস দুনিয়াব্যাপী কিন্তু দুষ্ট প্রকৃতির লোকও থাকে সমাজে নানা স্তরে, কেউ প্রকাশ্যে, কেউ ঘাপটি মেরে থাকে। প্রযুক্তির যে কোন সুবিধা তাদের হাতে পড়লে তারা তাদের অসৎ উদ্দেশ্য চরিতার্থ করতে সেটাকে কাজে লাগায়। ইতোমধ্যে আমাদের দেশেই দেখা গেছে, অভিযোগ উঠছে, সন্ত্রাসীরা বিভিন্ন ব্যবসায়ীর কাছে চাঁদা চাচ্ছে মোবাইল ফোনে। কোন কোন সন্ত্রাসী হুমকিও দিচ্ছে বিভিন্ন জনকে বা তার প্রতিপক্ষকে।
এখন শোনা যাচ্ছে মোবাইল ফোন হ্যাকিং। যে কথা বলা হচ্ছে সেসব কথা, যেসব তথ্য রাখা হচ্ছে মোবাইলে সে সব তথ্য সোজা টেনে নিচ্ছে হ্যাকিংয়ের মাধ্যমে হ্যাকাররা। জেনে যাচ্ছে সবকিছু। মানুষের গোপনীয়তা বলে কিছু থাকছে না, প্রাইভেসি বিষয়টি হ্যাকাররা নষ্ট করে দিচ্ছে। শুধু তাই নয়, তারা সিম, নম্বর ইত্যাদি নিয়ে এমনসব কা- করতে পারে যাকে বিপজ্জনক ছাড়া আর কিছু বলা যায় না।
হ্যাকিং জিনিসটা ভাল কাজে ব্যবহার হলে মানুষের উপকার হয়। কিন্তু এ তো ব্যবহৃত হচ্ছে মানুষের সর্বনাশ করার কাজে। চোর-ডাকাত-সন্ত্রাসীরা কোথায় আছে, কার কার সঙ্গে তারা ফোনালাপ করছে, কী পরামর্শ করছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী কর্তৃপক্ষের কাজে এগুলো নানা প্রয়োজন। সেসব কাজে মোবাইল ফোন হ্যাকিংয়ের সুবিধা মানুষের উপকারেই আসে। কিন্তু হ্যাকিংয়ে নেমেছে একদল অসৎ হ্যাকার। তারা সমাজে নানা অঘটন ঘটাতে পারে, হাজারো মানুষের সর্বনাশ ঘটাতে পারে। সেজন্য এটা ঠেকাতে হবে। সরকারের এ ব্যাপারে দ্রুত সিদ্ধান্ত নিয়ে এই লক্ষ্যে দেশের আইটি বিশেষজ্ঞদের নিয়ে মোবাইল হ্যাকিং ঠেকানোর উপায় বের করতে হবে। প্রয়োজনে বিদেশের অভিজ্ঞতা ও পদ্ধতিকে কাজে লাগাতে হবে এবং দেশের মোবাইল ফোন ব্যবহাকারীদের মধ্যে প্রয়োজনীয় সাবধানতা অবলম্বনের ব্যাপারে সচেতনতা সৃষ্টির উদ্যোগ নিতে হবে।

No comments

Powered by Blogger.