বিশ্ব এজতেমার সুযোগ নিতে পারে বিদেশী জঙ্গীরা- ঢুকতে পারে দেশে, চালাতে পাওে নাশকতা! by গাফফার খান চৌধুরী

বিশ্ব এজতেমা উপলৰে বাংলাদেশে ঢোকার চেষ্টা করতে পারে বিদেশী জঙ্গীরা। এর নেপথ্যে কাজ করছে যুদ্ধাপরাধীরা। দেশী-বিদেশী জঙ্গীরা এজতেমা ময়দানে বা তার আশপাশে একত্রিত হতে পারে।
এজতেমায় আসতে আগ্রহী বিদেশীদের সম্পর্কে বিসত্মারিত খোঁজ খবর নিতে বিদেশে বাংলাদেশ মিশনগুলোকে আগাম বার্তা পাঠানো হয়েছে। বাংলাদেশে বিদেশী জঙ্গীদের অনুপ্রবেশ ঠেকাতে বিমানবন্দরে বসানো হয়েছে বিশেষ স্ক্যানার। সীমানত্মে থাকছে কড়া পাহারা। ইমিগ্রেশন বিভাগকে আগত বিদেশীদের সম্পর্কে সমসত্ম তথ্য দ্রম্নত গোয়েন্দা দফতরে পাঠাতে বলা হয়েছে। প্রকৃত পরিচয় ছাড়া বিদেশীদের কাছে মোবাইল ফোনের সিমকার্ড বিক্রয়কারীদেরও আইনের আওতায় আনা হবে।
গোয়েন্দা সূত্র জানায়, বিশ্ব এজতেমার সুযোগ কাজে লাগিয়ে বিদেশী জঙ্গীরা বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করার চেষ্টা করতে পারে। বিভিন্ন বিদেশী এনজিও বা টু্যরিস্ট ভিসায় বিদেশী জঙ্গীরা বাংলাদেশে ঢুকতে পারে। এজতেমায় লাখ লাখ ধর্মপ্রাণ মানুষের ঢল নামে। এমনকি বাংলাদেশী জঙ্গীরা জনস্রোতে মিশে নাশকতা চালানোর চেষ্টা করতে পারে। বিপুল পরিমাণ জনসমাগমের ভিড়ে গোপন বৈঠক করারও চেষ্টা করতে পারে জঙ্গীরা। গোয়েন্দাদের চোখ ফাঁকি দিয়ে গোপন বৈঠক করার এটি সুবর্ণ সুযোগ। এ সুযোগকে কাজে লাগাতে পারে তারা। বৈঠক সফল করতে নেপথ্যে কাজ করছে যুদ্ধাপরাধীরা। সেৰেত্রে এজতেমা মাঠ বা আশপাশের অন্যকোন জায়গায়ও বৈঠক হতে পারে।
বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার রায় কার্যকর করার আগে এজতেমাকেই গোপন বৈঠক করার একমাত্র সুযোগ ও জায়গা হিসাবে বেছে নেয়ার জোর আশঙ্কা রয়েছে। বৈঠকে বিদেশী প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। এসব প্রতিনিধির মাধ্যমে বিভিন্ন দেশ বাংলাদেশে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের বিষয়ে বার্তা আদান-প্রদান করতে পারে। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার প্রক্রিয়া নস্যাত করতে পরবর্তী করণীয় সম্পর্কে শলাপরামর্শ হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এজতেমায় সাধারণত কোন ধর্মপ্রাণ বিদেশীর অনুপ্রবেশ নীতিগতভাবেই ঠেকানো হয় না। আর এ সুযোগটিকেই কাজে লাগাতে পারে যুদ্ধাপরাধী ও জঙ্গীদের গঠিত জোটটি।
গোয়েন্দাদের কাছে খবর আছে, বিশ্ব এজতেমায় জঙ্গী সংগঠনগুলো সাংকেতিক নামে বৈঠকে মিলিত হওয়ার চেষ্টা চালাতে পারে। দেশী-বিদেশী জঙ্গীদের হয়ে মুখ্য ভূমিকা পালন করতে পারে সদ্য নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গী সংগঠন হিযবুত তাহরীর। হিযবুত তাহরীরের শীর্ষ নেতারা উচ্চ শিৰিত হওয়ায় তারাই দায়িত্ব পেতে পারেন। হিযবুত তাহরীরের আনত্মর্জাতিক জঙ্গীবাদের সঙ্গে কানেকশন রয়েছে।
জঙ্গীদের অনুপ্রবেশ ঠেকাতে বিমানবন্দরের ইমিগ্রেশন ও সীমানত্ম পয়েন্টে বাড়তি নজরদারি করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। বিমানবন্দরে বসানো হয়েছে বিশেষ স্ক্যানার। বিদেশ থেকে আগত সবাইকে এ স্ক্যানারের নিচে দাঁড় করানো হবে। এই বিশেষ স্ক্যানারকে ফাঁকি দিয়ে কোন অবৈধ জিনিস বহন করা প্রায় অসম্ভব। বিমানবন্দরে আগত বিদেশীদের পাসপোর্ট সঙ্গে সঙ্গে ফটোকপি করে তা দ্রম্নত পুলিশের বিশেষ বিভাগে (এসবি) পাঠাতে বলা হয়েছে। আগত বিদেশীদের প্রকৃত পরিচয় নিশ্চিত করে বাংলাদেশে মোবাইল ফোন ব্যবহার করার জন্য বিদেশীদের প্রতি অনুরোধ জানানো হয়েছে। আগত সকল বিদেশীকে বিমানবন্দরেই শর্ত মেনে মোবাইল ফোন ব্যবহারের বিষয়টি ইমিগ্রেশন বিভাগকে জানিয়ে দিতে বলা হয়েছে। পাশাপাশি ব্যবসায়ীদের পরিচয় নিশ্চিত হয়ে বিদেশীদের কাছে সিমকার্ড বিক্রি করতে বলা হয়েছে। কোন বিক্রেতা বিনাশর্তে বিদেশী নাগরিকের কাছে সিমকার্ড বিক্রি করলে ওই ব্যবসায়ীর বিরম্নদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের ঘোষণা দিয়েছে। বিশ্ব এজতেমার ময়দান মনিটরিংয়ের জন্য গোপন ক্যামেরা বসানো হবে। বিদেশীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এ ব্যবস্থা থাকছে। তাঁবুর আশপাশে থাকবে তীৰ্ন নজরদারি।
অন্যদিকে পাকিসত্মান থেকে আগতদের ওপর থাকবে কড়া নজরদারি। বাংলাদেশে অবস্থানকারী সকল বিদেশী নাগরিকের ওপর নজরদারি বাড়ানোর পরামর্শ দিয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এৰেত্রে বাংলাদেশে অবস্থানকারী পাকিসত্মানী নাগরিকদের ব্যাপারে বাড়তি সতর্কতা অবলম্বন করতে বলা হয়েছে। প্রয়োজনে সন্দেহভাজন বিদেশীদের মোবাইল ফোন ট্রেকিং করা হবে। জঙ্গীরা নতুন করে নাশকতা চালাতে পারে বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন শীর্ষ গোয়েন্দা কর্মকর্তারা। তবে আইনশৃঙ্খলা রৰাকারী বাহিনী এ বিষয়ে সতর্ক রয়েছে বলে দাবি করেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এ্যাডভোকেট সাহারা খাতুন। এজতেমা ময়দান ও তার আশপাশে থাকছে ব্যাপক নিরাপত্তা। রাসত্মায় রাসত্মায় টহল জোরদার করা হয়েছে। সন্দেহভাজনদের দেহ ও যানবাহনে তলস্নাশি চলছে।

No comments

Powered by Blogger.