দুই জামায়াত নেতাকে গ্রেফতার দেখানো হচ্ছে সিপিবি বোমা মামলায় by গাফফার খান চৌধুরী

 সিপিবি সমাবেশে বোমা হামলা মামলার তদনত্ম নতুন মোড় নিচ্ছে। এ মামলায় ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার আসামি দু'সহোদর মুরসালিন ও মুত্তাকিনকে ও অপর দু'সহোদর জামায়াত নেতা মাওলানা ইদ্রিস আলী ও মাওলানা মোহাম্মদ মনিরকে গ্রেফতার দেখানো হবে।
দু'সহোদর মুরসালিন ও মুক্তাকিন বর্তমানে ভারতে এবং জামায়াতের দু'সহোদর বর্তমানে পলাতক রয়েছেন। এ মামলায় সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর ও এ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম পিন্টুকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হতে পারে। তবে ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার চার্জশীট দাখিলের আগে এ মামলার চার্জশীট দাখিল সম্ভব হচ্ছে না।
সিআইডি সূত্র জানায়, সিপিবি সমাবেশে বোমা হামলা মামলায় ভারতের তিহার জেলে বন্দী ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার অন্যতম আসামি ভারতে তিহার জেলে বন্দী দু'সহোদর মুরসালিন ও মুত্তাকিন, জামায়াত নেতা দু'সহোদর মাওলানা ইদ্রিস আলী ও মাওলানা মনির হোসেনকে গ্রেফতার দেখানো হবে। মুরসালিন ও মুত্তাকিন বর্তমানে ভারতের তিহার জেলে বন্দী রয়েছে। তাদের বাংলাদেশে ফিরিয়ে আনা হলে সিপিবি সমাবেশে বোমা হামলা সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। এছাড়া জামায়াতের দু'নেতা বর্তমানে পলাতক রয়েছেন। তাদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে। অন্যদিকে জামায়াত নেতা মাওলানা ইদ্রিস আলীর শ্যালক আরিফ হোসেন সুমনকে ইতোপূর্বে জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে সিআইডি। এরআগে এ মামলায় সংশিস্নষ্ট সিআইডির আগের ৩ কর্মকর্তাকে একাধিকবার জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। অনত্মত ২০ জনকে এ মামলায় হালনাগাদ জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। অন্যদিকে সিপিবি সমাবেশে বোমা হামলা মামলায় বিগত বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের সাবেক দু'মন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর ও এ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম পিন্টুকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হতে পারে। মূলত কি কারণে
বিগত বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলে ঘটনাটি অভ্যনত্মরীণ কোন্দলে ঘটে যাওয়া দুর্ঘটনা বলে চালিয়ে দেয়ার চেষ্টা করা হয়েছিল তা জানতে চাওয়া হতে পারে বাবরের কাছে। তবে সিপিবি সমাবেশে প্রশিৰিত জঙ্গীরা বোমা হামলা চালিয়েছিল। হামলার আগে হামলাকারীরা চট্টগ্রামের গহীন জঙ্গলে জঙ্গী প্রশিৰণ ক্যাম্পে বোমা হামলার ট্রেনিং নিয়েছিল।
মামলার তদনত্মকারী কর্মকর্তা সিআইডির পরিদর্শক মৃণাল কানত্মি সাহা জনকণ্ঠকে জানান, তদনত্মে পাওয়া তথ্য যাচাই করতে সংশিস্নষ্ট সিআইডির পরিদর্শক দেলোয়ার হোসেন ও মতিয়ার রহমান এবং এএসপি সৈয়দ মনির হোসেনকে দফায় দফায় জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। এ মামলায় হরকত-উল-জিহাদ নেতা মুফতি মাওলানা আব্দুল হান্নান, তার ভাই মহিবুলস্নাহ ওরফে অভি, মাওলানা আবু সাঈদ ওরফে ডা. জাফরসহ ১৩ জন ও ডিবি পুলিশ কতর্ৃক গ্রেফতারকৃত লস্কর-ই-তৈয়বার ভারতীয় শীর্ষ জঙ্গী নেতা মুফতি মাওলানা ওবায়দুলস্নাহ, মনসুর আলী, মুফতি মঈন উদ্দিন ওরফে আবু জান্দাল, নজরম্নল ইসলাম ঘরামী, আবু তাহের, ইসলামী ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রতিষ্ঠার চেষ্টাকারী মুফতি মাওলানা আব্দুস সালাম ও ঢাকা সিটি করপোরেশনের ওয়ার্ড কমিশনার আরিফ হোসেন, দু'সহোদর মুরসালিন ও মুত্তাকিন, দু'সহোদর জামায়াত নেতা মাওলানা ইদ্রিস আলী ও মাওলানা মনির হোসেনকে এ মামলায় গ্রেফতার দেখানো হতে পারে।
তদনত্ম সূত্র জানায়, দু'সহোদর মাওলানা ইদ্রিস আলী ও মাওলানা মনির হোসেন একই সঙ্গে জামায়াত ও হরকত-উল-জিহাদের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলাসহ বেশ কয়েকটি মামলায় আইনশৃঙ্খলা রৰাকারী বাহিনী ২০০৮ সালের ২২ মে তাদের গ্রেফতার করেছিল। পরে উচ্চ আদালত থেকে তারা জামিনে ছাড়া পেয়ে গাঢাকা দিয়েছেন তারা। তবে হামলাকারীরা খুবই প্রশিৰিত ছিল। সিপিবি সমাবেশে বোমা হামলার আগে হামলাকারীরা চট্টগ্রামের উখিয়ার একটি জঙ্গী প্রশিৰিণ ক্যাম্পে প্রশিৰণ নিয়েছিল।
২০০১ সালে বিএনপি-জামায়াত জোট মতায় যাওয়ার পর পরই ২০ জানুয়ারি রাজধানীর পল্টন ময়দানে সিপিবির সমাবেশে বিকাল ৫টায় ভয়াবহ বোমা হামলা চালানো হয়। হামলায় ৫ জন নিহত ও অনত্মত অর্ধশত আহত হয়। পরবর্তীতে বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার মামলার তদনত্মের নামে হিমাগারে পাঠিয়ে দেয়। মামলায় গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে ৪ জনকে অব্যাহতিও দেয়া হয়। এমনকি হামলার বিষয়টি দুর্ঘটনা বলে চালিয়ে দেয়ার চেষ্টা করা হয়েছিল। পরবর্তীতে উচ্চ আদালত মামলাটি পুনর্তদনত্মের নির্দেশ দেয়। মামলার ৭ম তদনত্মকারী কর্মকর্তা হিসাবে সিআইডির ইন্সপেক্টর মৃণাল কানত্মি সাহা মামলাটির তদনত্ম চালিয়ে যাচ্ছেন। তিনি বলেন, দ্রম্নত মামলাটির চার্জশীট দাখিলের প্রক্রিয়া শুরম্ন হয়েছে।

No comments

Powered by Blogger.