৫ম সংশোধনী- শুনানি আজ

সংবিধানের পঞ্চম সংশোধনী অবৈধ ঘোষণা করে হাইকোর্টের রায় স্থগিত চেয়ে বিএনপি মহাসচিব খোন্দকার দেলোয়ার হোসেন এবং তিন আইনজীবীর আবেদনের শুনানি মঙ্গলবার নির্ধারণ করেছে আপীল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ।
রবিবার খোন্দকার দেলোয়ার হোসেনের প েটিএইচ খান এবং অন্য তিন আইনজীবীর প েব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাক পৃথকভাবে আপীল বিভাগের সংশিস্নষ্ট শাখায় ৮ সপ্তাহের জন্য শুনানি পেছানোর আবেদন করেন। আদালত এরপর শুনানির তারিখ সোমবার একদিন পিছিয়ে মঙ্গলবার নির্ধারণ করেছে।
সোমবার প্রধান বিচারপতি মোঃ তাফাজ্জাল ইসলামের নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যবিশিষ্ট পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে শুনানির শুরম্নতেই টিএইচ খান আদালতকে বলেন, আমরা সময়ের জন্য আবেদন করেছি। সময় দেয়া হোক। রায়ের মধ্যে ৩০/৪০টি রেফারেন্স আছে। সব পড়ে শেষ করতে পারিনি। তাই শুনানির প্রস্তুতি নেই।
ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদ আদালতকে বলেন, আমরা এখন শুনানিতে প্রস্তুত নই। এর জন্য সময় দরকার। এরপর আদালত বলেন, অনেক আগে জাজমেন্ট হয়েছে। আজ শুরম্ন করেন। এ সময় এ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম আদালতকে বলেন, "একটা রাজনৈতিক উদ্দেশ্য নিয়ে এই বিষয়টি আদালতে নিয়ে আসা হয়েছে। তাঁরা সময় চেয়ে আবেদন করেছেন, যাতে বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার রায় কার্যকর বাধাগ্রসত্ম হয়। তিনি বলেন, হাইকোর্টের রায় দেয়া হয় ২০০৫ সালের ২৯ আগস্ট। চার বছর পূর্বে। এ রায়ে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস ৪৭ থেকে যে সংগ্রাম আন্দোলন করে যে সংবিধান করা হয়, এই সংবিধানটাকে সামরিক ফরমান জারি করে খন্দকার মোশতাক আহমেদ মতা গ্রহণ করে। হাইকোর্ট যে রায় দিয়েছে তা সঠিক। এটি দ্রম্নত নিষ্পত্তি হওয়া প্রয়োজন।
৩ জানুয়ারি প্রধান বিচারপতি তাফাজ্জাল ইসলামের নেতৃত্বে আপীল বিভাগের পাঁচ বিচারপতির বেঞ্চ সরকারের আপীল আবেদন প্রত্যাহারের আবেদন মঞ্জুর করে।
এরপর ৫ জানুয়ারি পঞ্চম সংশোধনী অবৈধ ঘোষণা করে হাইকোর্টের রায় স্থগিত চেয়ে চেম্বার জজের কাছে আবেদন করেন বিএনপি মহাসচিব খোন্দকার দেলোয়ার হোসেন। তবে তিনি এ বিষয়ে কোন আদেশ না দিয়ে শুনানির জন্য দিন নির্ধারণ করে আবেদনটি আপীল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে পাঠানোর নির্দেশ দেন। পাশাপাশি খোন্দকার দেলোয়ার হোসেন এবং জামায়াতের তিন আইনজীবীর দু'টি আপীল আবেদন (লিভ টু আপীল) শুনানির জন্য ১৮ জানুয়ারি নির্ধারণ করা হয়। সামরিক সরকারকে বৈধতা দিয়ে ১৯৭৭ সালের ৭ নবেম্বর মার্শাল ল রেগুলেশন (এমএলআর) চ্যালেঞ্জ করে দায়ের করা একটি রিট আবেদনের পরিপ্রেেিত হাইকোর্ট ২০০৫ সালের ২৯ আগস্ট পঞ্চম সংশোধনী অবৈধ বলে রায় দেন।
বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলে বিচারপতি এবিএম খায়রম্নল হক ও বিচারপতি এটিএম ফজলে কবিরের হাইকোর্ট বেঞ্চ পঞ্চম সংশোধনী অবৈধ ঘোষণা করে রায় দেয়। সে দিনই রায় স্থগিতের আবেদন জানায় তৎকালীন বিএনপি সরকার।
হাইকোর্টের রায়ে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট থেকে ১৯৭৯ সাল পর্যনত্ম খন্দকার মোশতাক আহমেদ, আবু সাদাত মোহাম্মদ সায়েম এবং জিয়াউর রহমানের শাসনকে বে-আইনী ঘোষণা করা হয়। হাইকোর্ট আলোচিত ঐ রায়ে বলেছিল, সামরিক আইন সামগ্রিকভাবে অবৈধ ও অসাংবিধানিক এবং সামরিক আইনের অধীনে করা সব কার্যক্রম আইন এবং বিধিও অবৈধ। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট থেকে ১৯৯১ সালের জাতীয় নির্বাচনের আগ পর্যনত্ম সরকার পরিবর্তন সাংবিধানিকভাবে হয়নি বলে হাইকোর্টের ওই রায়ে অভিমতে বলা হয়। রায়ের বিরম্নদ্ধে তৎকালীন বিএনপি সরকার আপীল করলেও বর্তমান সরকার ঐ আবেদন প্রত্যাহারের আবেদন করে।

প্রেসকাবে মওদুদ
এদিকে প্রেসকাবে এক আলোচনাসভায় মওদুদ আহম্মেদ বলেছেন, সরকার কখনই মূল সংবিধানে ফিরে যেতে পারবে না। ৭২ সালের সংবিধানে ফিরে যেতে হলে নিবর্তন আইন ও বিসমিলস্নাহ বাতিল করতে হবে যা কখনই তারা করতে পারবে না। প্রেসকাবে সেন্টার ফর ডেমোক্র্যাসি এ্যান্ড পিস স্টাডিজ নাম সংগঠনের ব্যানারে "সংবিধান পঞ্চম সংশোধনী বাংলাদেশের রা কবজ" শীর্ষক এক গোলটেবিল বৈঠকে মওদুদ আহমেদ এ কথা বলেছেন।

No comments

Powered by Blogger.