খুনীদের রায় কার্যকর বিষয়ে মনত্মব্য নেই বিএনপির

 বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার রায় কার্যকর বিষয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে কোন মনত্মব্য করেনি প্রধান বিরোধী দল বিএনপি। বৃহস্পতিবার জাতীয়তাবাদী কৃষক দলের এক আলোচনাসভায় বিএনপি নেতারা আওয়ামী লীগ সরকারের কঠোর সমালোচনা করলেও সর্বোচ্চ আদালতের রায় নিয়ে কোন বক্তব্য কিংবা কোন ধরনের মনত্মব্য করেননি।
আদালতের রায় সম্পর্কে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, পেশাজীবী ও সাধারণ মানুষ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। অনেকে সারারাত শোকরানা নামাজ আদায় করে বলেছেন, পাঁচ খুনীর ফাঁসি কার্যকর হওয়ায় জাতি কলঙ্কমুক্ত হলো। কিন্তু প্রধান বিরোধী দল বিএনপির পৰ থেকে আনুষ্ঠানিক বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে বিএনপির সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম স্থায়ী কমিটির সদস্য লে. জেনারেল (অব) মাহবুবুর রহমানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমরা কোন ধরনের হত্যাকা-ই সমর্থন করি না। সর্বোচ্চ আদালতের রায়ের ওপর সরাসরি মনত্মব্য না করে তিনি বলেন, দীর্ঘ বিচার প্রক্রিয়ার পর সর্বোচ্চ আদালত এ হত্যা মামলার রায় দিয়েছে। আদালতের রায় অনুযায়ী আসামিদের ফাঁসি কার্যকর হয়েছে।
আলোচনাসভায় স্বাধীনতাউত্তর আওয়ামী লীগ সরকারের বাকশাল গঠন প্রসঙ্গে কঠোর সমালোচনা করা হলেও বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার রায় ও পাঁচ খুনী সম্পর্কে কোন মনত্মব্য করেননি বিএনপি নেতারা। আলোচনা শেষে বিএনপি নেতাদের কাছে বঙ্গবন্ধুর খুনীদের ফাঁসি সম্পর্কে প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলেও কোন মনত্মব্য করেননি কেউ।
কৃষক দলের আলোচনাসভা
জাতীয় প্রেসকাবে আয়োজিত জাতীয়তাবাদী কৃষক দলের আলোচনাসভায় বিরোধী দল বিএনপির নেতারা বলেছেন, গত এক বছর দেশ পরিচালনা করেও জনগণের কাছে দেয়া প্রতিশ্রম্নতি বাসত্মবায়নে ব্যর্থ হয়ে বাকশালী কায়দায় দেশ পরিচালনা করছে সরকার। বাকশালের ইতিহাস নতুন প্রজন্মকে জানানোর আহ্বান জানিয়ে স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, নতুন প্রজন্ম সংগঠিত হয়ে একদিন তা প্রতিহত করবে। এই সরকার স্ববিরোধী সরকার। কারণ সরকার একদিকে গ্যাসের অপ্রতুলতার কথা বলে দেশের শিল্প এলাকাগুলোতে গ্যাস রেশনিং করছে, অন্যদিকে গ্যাস রফতানির জন্য চুক্তি করছে। সরকারের স্ববিরোধী কর্মকা- থেকেই বোঝা যায় তারা দেশ ও জনগণের স্বার্থবিরোধী চুক্তি করেছে। সরকারের এই অসম চুক্তির বিরম্নদ্ধে সচেতন জনগণকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে আন্দোলনে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান তিনি।
বৃহস্পতিবার সকালে জাতীয় প্রেসকাব মিলনায়তনে জাতীয়তাবাদী কৃষক দলের উদ্যোগে 'একদলীয় বাকশাল কায়েম ও গণতন্ত্র হত্যা দিবস' শীর্ষক এক আলোচনাসভার আয়োজন করা হয়। সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন। অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বিএনপি সহসভাপতি সেলিমা রহমান, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব মির্জা ফখরম্নল ইসলাম আলমগীর, দলীয় চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা শামসুজ্জামান দুদু, যুবদলের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল ও এ্যাসোসিয়েশন অব এ্যাগ্রিকালচারিস্টের (এ্যাব) সদস্য সচিব হাসান জাকির তুহিন।
এদিকে আলোচনাসভায় ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন আরও বলেন, প্রশাসন একদলীয়করণ করে গণতন্ত্রের লেবাস পরে বাকশালী কায়দায় দেশ চালাচ্ছে এই সরকার। স্বাধীনতার পর রৰীবাহিনীর মাধ্যমে ২০ হাজার মুক্তিযোদ্ধাকে হত্যা করা হয় বলে দাবি করেন তিনি। ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার তৎকালীন সময়ে এক দেশ, এক নেতা ও এক দলের শাসন কায়েম করে গণতন্ত্রকে হত্যা করেছিল। সরকারের বিরম্নদ্ধে আন্দোলন গড়ে তুলতে দলীয় নেতাকর্মীদের প্রস্তুতি নেয়ার আহ্বান জানান। ভারতের সঙ্গে সরকারের করা বিভিন্ন চুক্তি বিসত্মারিত প্রকাশের দাবিও জানান স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন।

No comments

Powered by Blogger.