পরিবারের অভিযোগ ॥ হত্যাকারীদের সাজা কমাতে বিশ্বজিতের লাশের ময়নাতদন্ত রিপোর্ট দুর্বল করে তৈরি

 খুনীদের বাঁচাতে বিশ্বজিত দাসের লাশের ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন দুর্বল করে তৈরি করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন তাঁর পিতা অনন্তচন্দ্র দাস। শুক্রবার সকালে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন। তিনি বলেন, হত্যাকারীদের সাজা কমাতেই চিকিৎসককে দিয়ে এভাবে প্রতিবেদন দেয়া হয়েছে বলে তিনি মনে করেন।
বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু মহাজোট এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে। সংগঠনের মহাসচিব গোবিন্দচন্দ্র প্রামাণিক লিখিত বক্তব্য পড়ে শোনান। এ সময় নিহত বিশ্বজিত দাসের পিতা অনন্তচন্দ্র দাস, মা কল্পনা রানী দাস, তার বড় ভাই উত্তম কুমার দাস উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে নিহত বিশ্বজিতের পিতা অনন্তচন্দ্র দাস বলেন, বিশ্বজিতের শরীরে অসংখ্য ছুরিকাঘাত ও কোপের দাগ ছিল। কিন্তু চিকিৎসক ময়নাতদন্তের প্রতিবেদনে একটি কোপের চিহ্ন পাওয়ার কথা উল্লেখ করেছেন বলে শুনেছি। তিনি বলেন, ময়নাতদন্ত দুর্বল হলে খুনী সাজা কম পাবে এ কারণেই এমন করা হয়েছে। খুনীদের শাস্তি দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, প্রকৃত খুনীর শাস্তি হোক। তবে নির্দোষ কেউ যেন শাস্তি না পায়। পাশে থাকা বিশ্বজিতের মা কল্পনা রাণী দাস বলেন, আমার মতো আর যেন কোন মায়ের বুক খালি না হয়। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন প্রত্যাখ্যান করে পুনরায় নতুন করে প্রতিবেদন দেয়ার আহ্বান জানান নিহতের বড় ভাই উত্তম কুমার দাস। লিখিত বক্তব্যে বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু মহাজোটের মহাসচিব গোবিন্দচন্দ্র প্রামাণিক ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন দেয়া চিকিসক ও সুরতহাল প্রতিবেদন প্রস্তুতকারী সূত্রাপুর থানার এসআইয়ের গ্রেফতারের দাবি করেন। তিনি সরকারের কাছে বিশ্বজিতের পরিবারকে এক কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দেয়ার দাবি করেন। সংবাদ সম্মেলনে গোবিন্দ বলেন, তাঁর (বিশ্বজিত) শরীরে পঁচিশটি কোপের দাগ রয়েছে। পত্রিকার মাধ্যমে তা জানতে পেরেছি। এ ব্যাপারে ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনকারী স্যার সলিমুল্লাহ মেডিক্যাল কলেজের ফরেনসিক বিভাগের চিকিৎসক মাকসুদুর রহমান জানান, বিশ্বজিতের পিঠে, ডান বগলের নিচে ও বাঁ পায়ে মোট তিনটি কোপের দাগ ছিল। ডান বগলের নিচের কোপটি গভীর ছিল বলে তিনি জানান। উল্লেখ্য, গত ৯ ডিসেম্বর বিএনপি নেতৃত্বাধীন ১৮ দলীয় জোটের অবরোধ চলাকালে পুরান ঢাকার ভিক্টোরিয়া পার্কের কাছে পিটিয়ে ও কুপিয়ে হত্যা করা হয় দর্জি দোকানি বিশ্বজিতকে।

No comments

Powered by Blogger.