সীমানা পুনর্বিন্যাসের মূল ভিত্তি হবে অভিযোগ

যুক্তিসংগত অভিযোগকে মূল ভিত্তি ধরে সংসদীয় আসনের সীমানা চূড়ান্ত করা হবে। যেসব আসনের সীমানা নিয়ে কোনো অভিযোগ নেই, নির্বাচন কমিশন সেসব জায়গায় পরিবর্তন আনবে না। প্রশাসনিক সুবিধা ও জনসংখ্যার বিষয়টিও এ ক্ষেত্রে বিবেচনা করা হবে না।
এ-সংক্রান্ত প্রাথমিক বা খসড়া প্রতিবেদন প্রকাশ করা হতে পারে বিদ্যমান সীমানা প্রায় অপরিবর্তিত রেখেই। এতে কয়েকটি আসনের উপজেলাভিত্তিক অখণ্ডতা ফিরিয়ে আনা হতে পারে।
প্রাথমিক ওই প্রতিবেদন সম্পর্কে সংক্ষুব্ধ কোনো পক্ষ অভিযোগ তুললে বিষয়টি আমলে নিয়ে এর নিষ্পত্তি করা হবে। একজন নির্বাচন কমিশনার কালের কণ্ঠকে এ তথ্য জানিয়েছেন। এ ছাড়া গত বৃহস্পতিবার কমিশন সচিবালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী রকিবউদ্দীন আহমদও বলেছেন, 'সীমানা নির্ধারণের প্রাথমিক প্রতিবেদন প্রকাশের পর আপত্তি ও শুনানির জন্য যথেষ্ট সময় দেওয়া হবে। বিভাগীয় পর্যায়ে এসব শুনানির ব্যবস্থা করা হবে। এ বিষয়ে আমাদের কাজ প্রায় চূড়ান্ত পর্যায়ে।' এদিন তিনি আরো জানান, নির্বাচনী এলাকা অপরিবর্তিত রেখেও প্রাথমিক প্রতিবেদন প্রকাশ করা যায়। পরে অভিযোগ-আপত্তির শুনানি মোতাবেক তা পরিবর্তন করা যেতে পারে।
নির্বাচন কমিশনার মোহাম্মদ আবদুল মোবারক এ বিষয়ে গতকাল শুক্রবার কালের কণ্ঠকে বলেন, কমিশন অভিযোগের ভিত্তিতে, নাকি স্ব-উদ্যোগে সীমানা পুনর্বিন্যাস করবে সে বিষয়ে এখনো সিদ্ধান্ত হয়নি। আগামী বা তার পরের সপ্তাহে এ বিষয়ে কমিশনের বৈঠকে বিষয়টি নির্ধারিত হবে।
আবদুল মোবারক জানান, এ নিয়ে অনেক অভিযোগ-আবেদন কমিশনে জমা হচ্ছে। এগুলো কমিশন বৈঠকে খতিয়ে দেখা হবে।
প্রসঙ্গত, ২০০৮ সালের জনসংখ্যার ভিত্তিতে সীমানা নির্ধারণ করা হলে ৩৩ জেলার ১২৫টি নির্বাচনী এলাকার সীমানায় পরিবর্তন আসে। অপরিবর্তিত থাকে ৬২ জেলার ১৭৫টি নির্বাচনী এলাকার সীমানা। যে ১২৫টি এলাকার সীমানায় পরিবর্তন আসে, এর মধ্যে ৬৮টি উপজেলার একাধিক নির্বাচনী এলাকা বিভক্ত হয়ে পড়ে। এ ধরনের বিভক্তি অপরিবর্তিত ৩২টি নির্বাচনী এলাকায় আগে থেকেই ছিল।
কমিশন সচিবালয় সূত্র জানায়, ২০০৮ সালে সীমানা নির্ধারণের সময় যেসব নির্বাচনী এলাকায় উপজেলাগুলো খণ্ডিত হয়ে যুক্ত হয়, এর মধ্যে ৩০-৩৫টি এলাকা সম্পর্কে ব্যাপক অভিযোগ রয়েছে। নির্বাচন কমিশন এসব এলাকার কয়েকটির পরিবর্তন এনে প্রাথমিক প্রতিবেদন প্রকাশ করতে পারে। এরপর সে পরিবর্তন চূড়ান্ত হওয়ার বিষয়টি নির্ভর করবে আপত্তি-অভিযোগের ওপর।
সূত্র জানায়, নির্বাচন কমিশনের এ পরিকল্পনার বিষয়টি আঁচ করতে পেরে মন্ত্রী-এমপিরাও নিজ নিজ নির্বাচনী এলাকার সীমানা পছন্দমতো পরিবর্তনের জন্য নির্বাচন কমিশনে তদবির চালিয়ে যাচ্ছেন। প্রধান বিরোধী দল বিএনপিসহ কয়েকটি দলের নেতাও কমিশনের কাছে নামে-বেনামে দেনদরবার অব্যাহত রেখেছেন।

No comments

Powered by Blogger.