সাগর-রুনি হত্যা-তদন্ত ঘুরপাক খাচ্ছে হুমায়ূন কবিরকে ঘিরে-আরো কয়েকজনের ডিএনএ টেস্ট হবে যুক্তরাষ্ট্রে

সাংবাদিক দম্পতি সাগর সরওয়ার ও মেহেরুন রুনি হত্যাকাণ্ডের তদন্ত আবর্তিত হচ্ছে তাঁদের বাড়ির দারোয়ান এনাম আহমদ ওরফে হুমায়ূন কবির ওরফে আল আমিনকে ঘিরে। তিনি সাগর-রুনি হত্যা মামলার অন্যতম আসামি। হুমায়ূন পলাতক রয়েছে।
তার সন্ধান পেতে জনসাধারণের সহযোগিতা চেয়েছে র‌্যাব। এ জন্য ১০ লাখ টাকা পুরস্কার ঘোষণা করেছে র‌্যাব। সন্ধানদাতার নাম গোপন রাখা হবে।
ডিবির ব্যর্থতার পর র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন-র‌্যাব তদন্তে নেমে প্রথমেই সাগর-রুনির লাশ কবর থেকে তুলে নমুনা সংগ্রহ করে ডিএনএ টেস্টের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের পরীক্ষাগারে পাঠায়। নমুনায় দুই ব্যক্তির পূর্ণাঙ্গ ডিএনএ-বৃত্তান্ত পাওয়া গেছে। এই দুজন সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়ার জন্য পরে ১৩ ব্যক্তির ডিএনএ নমুনা পাঠানো হয়। কিন্তু তাদের ডিএনএ-বৃত্তান্তের সঙ্গে ওই দুজনের বৃত্তান্ত মেলেনি।
র‌্যাব মনে করছে, এনাম আহমদ ওরফে হুমায়ূন কবিরের নমুনার সঙ্গে প্রাপ্ত ডিএনএ-বৃত্তান্ত মিলতে পারে। তাই তারা হুমায়ূন কবিরকে গ্রেপ্তারের জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন বলে এক র‌্যাব কর্মকর্তা জানিয়েছেন।
গতকাল মঙ্গলবার রাতে র‌্যাবের গোয়েন্দা শাখার প্রধান লেফটেন্যান্ট কর্নেল জিয়াউল আহসান কালের কণ্ঠকে বলেন, 'আরো পাঁচ-সাতজনকে সন্দেহ করছি আমরা। তাদের কাছ থেকে স্যাম্পল নিয়ে ডিএনএ পরীক্ষার জন্য আমেরিকায় পাঠানো হবে।' তিনি আরো বলেন, 'হুমায়ূনকে পেলে আমাদের অনেক উপকার হবে। হুমায়ূন আমাদের কাছে সন্দেহভাজন হিসেবে খুবই গুরুত্বপূর্ণ।' কার কার নমুনা পাঠানো হবে, তা অবশ্য জানাতে চাননি র‌্যাবের এ কর্মকর্তা।
গতকাল সংবাদপত্রে র‌্যাবের তরফ থেকে একটি বিজ্ঞপ্তি পাঠিয়ে বলা হয়, চাঞ্চল্যকর সাগর-রুনি হত্যা মামলার অন্যতম আসামি এনাম আহমদ ওরফে হুমায়ূন কবির দীর্ঘদিন ধরে পলাতক। তার উচ্চতা ৫ ফুট ৪ ইঞ্চি, গায়ের রং শ্যামলা, মাঝারি গড়ন, মুখমণ্ডল লম্বাটে, বয়স ২৩ বছর। যদি কোনো ব্যক্তি তার সন্ধান জেনে থাকেন তাহলে জরুরিভিত্তিতে ০১১৯১০০০৯৭৬ নম্বরে যোগাযোগ করার জন্য অনুরোধ জানানো হচ্ছে।
সূত্রে জানা যায়, সন্দেহভাজনদের কারো সঙ্গে প্রাপ্ত ডিএনএ-বৃত্তান্তের মিল না পাওয়ায় র‌্যাব এখন সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছে আসামি হুমায়ূন কবিরের ওপর।
উল্লেখ্য, ২০১১ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি পশ্চিম রাজাবাজারের ভাড়াবাসায় খুন হন সাংবাদিক দম্পতি সাগর সরওয়ার ও মেহেরুন রুনি। ওই দিনই তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাহারা খাতুন ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে খুনিদের গ্রেপ্তারের কথা বলেন। এ-সংক্রান্ত মামলার তদন্ত শুরু করে ডিবি পুলিশ। কিছুদিন পর তদন্তে ব্যর্থতার কথা স্বীকার করে তারা। পরে উচ্চ আদালত তদন্তভার র‌্যাবকে দেওয়ার নির্দেশ দেন।
গত ৯ অক্টোবর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহীউদ্দীন খান আলমগীর সংবাদ সম্মেলন করে জানান, সাগর-রুনি হত্যার ঘটনায় এ পর্যন্ত রফিকুল ইসলাম, বকুল মিয়া, মো. সাইদ, মিন্টু, কামরুল হাসান ওরফে অরুণ, পলাশ রুদ্র পাল ও তানভীর রহমান নামের সাতজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

No comments

Powered by Blogger.