পদ্মা সেতুর জন্য এ বছর কোনো সারচার্জ নয়

পদ্মা সেতু নির্মাণের অর্থ জোগাড় করতে চলতি অর্থবছরে কোনো ধরনের সারচার্জ আরোপ করা হবে না বলে নিশ্চিত করেছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। তিনি বলেন, 'আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, এ বছরই পদ্মা সেতু নির্মাণের কাজ শুরু করব। এ জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ জোগান দেওয়ার প্রস্তুতি সরকারের রয়েছে।


তাই চলতি অর্থবছরে কোনো ধরনের সারচার্জ আরোপ করা হচ্ছে না।'
সচিবালয়ে এক বৈঠকের পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে গতকাল বৃহস্পতিবার এ তথ্য জানান অর্থমন্ত্রী। অবশ্য এক দিন আগে বুধবার জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান ড. নাসির উদ্দিন আহমেদ পদ্মা সেতুর জন্য সারচার্জ আরোপের সম্ভাবনার কথা বলেছিলেন।
বিশ্বব্যাংকসহ অন্য দাতারা অর্থায়ন করলেও এ সেতু নির্মাণে অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে পুঁজি সংগ্রহের প্রক্রিয়া থেমে থাকবে না উল্লেখ করে অর্থমন্ত্রী বলেন, অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে অর্থায়নের নীতিমালা চূড়ান্ত হয়েছে। এ নীতিমালা অনুযায়ী, দেশে স্থানীয় মুদ্রায় অর্থ সংগ্রহের জন্য একটি এবং প্রবাসে থাকা বাংলাদেশিদের কাছ থেকে বৈদেশিক মুদ্রায় অর্থ সংগ্রহের জন্য আরেকটি হিসাব খোলা হয়েছে। সরকারের মালিকানাধীন বিভিন্ন ব্যাংকেই এ হিসাব থাকছে। বেসরকারি ব্যাংকগুলোতেও এসব হিসাব খোলা হচ্ছে।
অর্থমন্ত্রী বলেন, এসব ব্যাংক হিসাবে যেকোনো ব্যক্তি চাইলে যেকোনো পরিমাণ অর্থ সরাসরি জমা দিতে পারবেন। তবে কেউ মোটা অঙ্কের অর্থ দিতে আগ্রহী হলে তিনি প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেও চেক জমা দিতে পারবেন। সেতু কর্তৃপক্ষ এসব ব্যাংক হিসাব দেখাশোনা করবে। আর এসব হিসাবে জমা হওয়া অর্থ খরচ করা হবে বাজেটের আইন অনুযায়ী।
বিশ্বব্যাংকের কাছে নতুন করে চিঠি পাঠানোর কথা অস্বীকার করে অর্থমন্ত্রী বলেন, 'গত ২৯ জুন ঋণচুক্তি বাতিল করার পর সংস্থাটিকে আর কোনো চিঠি দেওয়া হয়নি। তবে অন্য দাতাসংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করা হচ্ছে। আর বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করা হচ্ছে আমাদের নির্বাহী পরিচালকের মাধ্যমে।' অর্থমন্ত্রী বলেন, 'গত ৩ জুলাই নির্বাহী পরিচালককে আমি একটি ব্রিফ করেছি মাত্র। তবে বিশ্বব্যাংককে কোনো চিঠি দেওয়া হয়নি।' এ বিষয়ে গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদ সত্য নয় বলে দাবি করেন মন্ত্রী।
ওয়াশিংটনে জাইকার প্রেসিডেন্ট ও বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্টের মধ্যে পদ্মা সেতুতে অর্থায়ন প্রসঙ্গে কী আলোচনা হয়েছে জানতে চাইলে অর্থমন্ত্রী বলেন, 'তা এখনো জানা সম্ভব হয়নি। বুধবার রাতে তাদের আলোচনা শেষ হয়েছে। নিশ্চয়ই আলোচনার বিষয়ে জানব।'
'সব কিছুই সরকার করেছে কিন্তু দেরিতে' সাংবাদিকদের এমন কথার জবাবে দ্বিমত পোষণ করে অর্থমন্ত্রী বলেন, 'বিষয়টি নিষ্পত্তির জন্য আমরা অনেক আগেই বিশ্বব্যাংককে বলে আসছি এবং অন্যরাও বলেছে। কিন্তু বিশ্বব্যাংক এ বিষয়ে আলোচনা শুরু করে গত ৪ জুন এবং এর পরই তারা চারটি শর্ত দেয়। এর মধ্যে দুটি শর্ত তখনই পূরণ করা হয়। তৃতীয়টি ছিল দুর্নীতি দমন কমিশনের তদন্তে তাদের সম্পৃক্ত করা। কিন্তু আইন অনুযায়ী দুদক কোনো তথ্য অন্য কোনো বিদেশি সংস্থার সঙ্গে আদান-প্রদান করতে পারে না।'
চতুর্থ শর্ত সম্পর্কে সরকার বিশ্বব্যাংককে বলেছে, 'তাঁকে (আবুল হোসেন) সরাতে হলে অভিযোগের বিষয়ে প্রমাণ লাগবে। কিন্তু তারা যে উৎস থেকে দুর্নীতির প্রমাণ পেয়েছে সেটা প্রকাশ করতে রাজি হয়নি। এ অবস্থায় তাদের অভিযোগের কোনো গ্রহণযোগ্যতা আমাদের কাছে নেই।'
যোগাযোগ মন্ত্রণালয়সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য গোলাম মওলা রনির সাম্প্রতিক বক্তব্য প্রসঙ্গে অর্থমন্ত্রী বলেন, 'তিনি হচ্ছেন টক শোর রাজা।'

No comments

Powered by Blogger.