রাজনৈতিক উদ্দেশ্যমূলক মিথ্যাচার শুভ হয় না by শহিদুল ইসলাম

ক. ইতিহাস বিকৃতিতে ইতিহাসের পাতা কণ্টকিত। অতীতে যা ঘটে গেছে তার আর কোনো পরিবর্তনের সম্ভাবনা নেই। কিন্তু বিভিন্ন ইতিহাসবিদের লেখায় সেই একই ঘটনার ভিন্ন ভিন্ন ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ পাওয়া যায়। তাই সেই ঘটনা সম্পর্কে পাঠকের সঠিক ধারণা লাভ করা কষ্টকর হয়ে পড়ে। বাংলাদেশের ইতিহাস নিয়ে ইতিমধ্যেই বিকৃতির যে জঞ্জাল জমে উঠেছে, তার মধ্য থেকে সঠিক ইতিহাস সন্ধান করা ঐতিহাসিকদেরই কাজ।
তেমনি পাকিস্তান সৃষ্টির আগে ইসলামী জাতীয়তাবাদী নেতারা যে মিথ্যা প্রচারের মাধ্যমে ভারতবর্ষের মুসলমানদের বিপথে পরিচালিত করতে সক্ষম হয়েছিলেন, সাম্প্রদায়িকতার বিষে এ দেশের মুসলমানদের অন্তর বিষিয়ে তুলেছিলেন, যার পরিণতি পাকিস্তানের সৃষ্টি, সেই সব মিথ্যাচারের মুখোশ খুলে সত্য প্রকাশের দায়িত্ব অবধারিতভাবে ইতিহাসবিদ ও রাষ্ট্রবিজ্ঞানীদের ওপরই ন্যস্ত হয়। বিশ শতকের শুরু থেকেই তেমনি একটি প্রচার ছিল হিন্দু ও মুসলমানদের সরকারি চাকরির ক্ষেত্রে বৈষম্যের প্রচারণা। সেই প্রচারণার সাহায্যে ইসলামী জাতীয়তাবাদী নেতারা খুব সহজেই মধ্যবিত্ত-শিক্ষিত মুসলমানদের খেপিয়ে তুলতে পেরেছিলেন হিন্দুদের বিরুদ্ধে। চাকরির ক্ষেত্রে হিন্দু-মুসলমানের সেই বৈষম্যের বিষয়টি কতটা সত্যি কিংবা কতটা রাজনৈতিক স্বার্থ হাসিলের জন্য উচ্চারিত হয়েছিল, তা নিয়ে এশিয়াটিক সোসাইটি অব বাংলাদেশের সভাপতি ও তিন খণ্ডে 'বাংলাদেশের ইতিহাস' গ্রন্থের সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম গবেষণা করেছেন এবং 'রাজনৈতিক ইতিহাস' প্রথম খণ্ডের ভূমিকায় তা লিপিবদ্ধ করেছেন। তিনি লিখেছেন, 'মুসলিম জাতীয়তাবাদী নেতারা চাকরির ক্ষেত্রে হিন্দু-মুসলমান বৈষম্য প্রদর্শন করতে সম্প্রদায়গতভিত্তিক পরিসংখ্যান দিয়েছেন; কিন্তু সম্প্রদায়ভিত্তিক শিক্ষাগত যোগ্যতার ব্যাপারে তারা নীরব। দায়িত্বশীল পদের জন্য যোগ্য মুসলিম প্রার্থী হিন্দু প্রার্থীর তুলনায় ছিল নগণ্য।'(২৪) তাই চাকরির ক্ষেত্রে এই বৈষম্যের পরিসংখ্যান প্রদর্শন করলে সাম্প্রদায়িকতার পালে হাওয়া লাগে। সিরাজুল ইসলাম বলেছেন, 'যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও হিন্দু গ্র্যাজুয়েটদের অভিযোগ ছিল এই যে তাদের চেয়ে অল্প যোগ্যতা নিয়ে মুসলমানরা সরকারি চাকরি পেয়ে যাচ্ছে কিন্তু অধিকতর যোগ্যতা নিয়ে হিন্দুরা পিষ্ট হচ্ছে বেকারত্বের জাঁতাকলে।'(২৪) চাকরি পাওয়া না-পাওয়ার ক্ষেত্রে শিক্ষার যে কত বড় সম্পর্ক সেটা প্রমাণ করার জন্য তিনি একটি ইন্টারেস্টিং উদাহরণ উল্লেখ করেছেন। তিনি লিখেছেন, 'সলিমুল্লাহ ছিলেন মুসলিম জাতীয়তাবাদীদের বড় প্রবক্তা (তাঁর বাড়িতেই ১৯০৫ সালে মুসলিম লীগ গঠিত হয়)। কিন্তু তাঁরই জমিদারির আমলাদের মধ্যে হিন্দু-মুসলমান বৈষম্য ছিল আরো করুণ। ১৯০৭ সালে তাঁর জমিদারির দায়িত্বপূর্ণ পদে আসীন আমলার মোট সংখ্যা ছিল ৩৭১ এবং এর মধ্যে ৪৫ জন আমলা ছিল মুসলমান। দেখা যায়, যোগ্য মুসলমান প্রার্থীর অভাবে এমনকি কলকাতা মাদ্রাসার ব্যবস্থাপনা (১৯১৭) পর্যন্ত হিন্দু কর্মচারীদের হাতে ন্যস্ত ছিল। অধ্যক্ষ ছিল একজন ইউরোপীয়। ১৯০৫ সালে মোট তিন হাজার ২১ জন ছাত্র এন্ট্রাস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়। এদের মধ্যে মাত্র ১৮৮ জন ছিল মুসলমান। শিক্ষাক্ষেত্রে এই বৈষম্য অবশ্যম্ভাবীভাবে প্রভাব ফেলে নিয়োগক্ষেত্রে। তবে ব্রিটিশের বদান্যতায় (বদান্যতায় নয়, রাজনৈতিক স্বার্থসিদ্ধির জন্য) মুসলমানদের যা প্রাপ্য ছিল, বাস্তবে এর অনেক বেশি তারা লাভ করে। অতএব, এটা সন্দেহাতীত যে চাকরিক্ষেত্রে সাম্প্রদায়িক বৈষম্যের মূল কারণ শিক্ষায় মুসলমানদের পশ্চাৎপদতা।'(২৪) তাই সিরাজুল ইসলাম বলেছেন, 'সাম্প্রদায়িক বৈষম্য প্রমাণের জন্য চাকরিতে নিয়োজিত লোকের সম্প্রদায়ভিত্তিক পরিসংখ্যান পরিবেশনের উদ্দেশ্য ছিল সম্পূর্ণ রাজনৈতিক।'(২৪)
দুই. বিশের দশকে চিত্তরঞ্জন দাশের নেতৃত্বে মুসলমানরা কলকাতা করপোরেশন ও সরকারের শতকরা পঞ্চাশ ভাগ চাকরি সংরক্ষণের আন্দোলন করে। বেগম রোকেয়াসহ অনেক মুসলমানের আত্মসম্মানে তা আঘাত করে। রোকেয়া ক্রুদ্ধভাবে লেখেন (রানী ভিখারিনী), "৬০-৭০ বৎসর আগে পুরুষের পক্ষেও ইংরেজি শিক্ষা নিষিদ্ধ ছিল। ইংরেজি পড়লেই লোকে কাফের হইত। এখন কর্তারা তাহার ফল ভোগ করিতেছেন। স্বাস্থ্য, অর্থ, শক্তি, সামর্থ্য, শিক্ষা প্রভৃতি সব বিভাগের দ্বারই মুসলমানদের জন্য 'অযোগ্যতার' অজুহাতে রুদ্ধ হইয়া পড়ে। কলিকাতা করপোরেশনে শতকরা ৫০টি চাকরি লাভের জন্য চেঁচামেচি করিয়া মুসলমানগণ ভারতের নিকৃষ্ট শ্রেণীর (Depressed class) তালিকাভুক্ত হইয়াছেন। আমি বলি, তাহারা নিশ্চয়ই 'অযোগ্য'। মুসলমানরা স্বীকার করুন বা না করুন_তাহারা যে অযোগ্য ইহাতে বিন্দুমাত্র সন্দেহ নাই।" (রচনাবলী-২৬৬)। মুসলমানদের এই অযোগ্যতার কারণ কী? কবে থেকে মুসলমানদের এই অযোগ্য হওয়ার প্রক্রিয়া শুরু? বিশ্বের মুসলমানদের এই অযোগ্যতার শুরু প্রায় এক হাজার ৩০০ বছর আগে। যখন মুসলমানরা মুতাজিলাবাদ অর্থাৎ মুক্তিবাদের পথ ছেড়ে নিজেদের বিচ্ছিন্নতাবাদের দিকে ঠেলে দেয়। আর বাংলার মুসলমানের অধঃপতনের শুরু উনিশ শতকের প্রথম থেকে, যখন হিন্দু সম্প্রদায়ের একটি ক্ষুদ্র অংশ নিজেদের আধুনিক পশ্চিমা জ্ঞান-বিজ্ঞান শেখার পথে পরিচালনা করে আর মুসলমানরা 'অতীত-স্বর্ণযুগের' স্বপ্নে বিভোর হয়ে কেবল প্রাচ্য জ্ঞানের (সামন্ততান্ত্রিক) মধ্যে মুখ গুঁজে পড়ে থাকে।
তিন. সিরাজুল ইসলাম ও রোকেয়ার এই বিষয়ের ওপর গবেষণা করে পরিসংখ্যানের সাহায্যে প্রমাণ করেছেন ডেভিড পেজ তাঁর বিখ্যাত থিসিসে- Prelude to Partition. দেশভাগের আগে বাংলার হিন্দু ও মুসলমান সম্প্রদায়ের মধ্যে অনেক বিষয়েই পার্থক্য ছিল। বাঙালি হিন্দুরা ছিল ধনসম্পদে, শিক্ষাদীক্ষায়, জ্ঞানে-পাণ্ডিত্যে, সংস্কৃতি নির্মাণে বাঙালি মুসলমানের চেয়ে অগ্রসর। অর্থনীতি ও শিক্ষাব্যবস্থা ছিল তাঁদেরই নিয়ন্ত্রণে। ১৮৩৫ সালের মেকলের প্রস্তাবের, বিশেষ করে ১৮৫৪ সালে উড সাহেবের ডেসপাচের পর বাঙালি হিন্দুরাই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠায় মুখ্য ভূমিকা পালন করেছিল। বাংলাদেশের প্রাচীন স্কুল-কলেজ এখনো তার সাক্ষ্য বহন করছে। কিন্তু বাংলায় মুসলমানদের যে দৈন্য, উত্তর-পশ্চিমে তা অতটা প্রকট ছিল না। সেসব এ দেশের, বিশেষ করে পাঞ্জাব ও উত্তর প্রদেশের মুসলমান উচ্চবিত্তরা ধনে-সম্পদে, শিক্ষা-জ্ঞানে, ব্যবসা-বাণিজ্যে অমুসলিমদের চেয়ে খুব একটা পেছনে ছিল না। ব্রিটিশ শাসনের কেন্দ্র কলকাতা, মাদ্রাজ ও মুম্বাইয়ে বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের পর ইংরেজি ও পাশ্চাত্য শিক্ষার যে সুযোগ সৃষ্টি হয়, মুসলমানরা সেখান থেকে তেমন কোনো সুবিধা আদায় করতে পারেনি। যেটা হিন্দুরা পেরেছিল। তার ফলে বাংলায় মুসলমানরা ক্রমেই পিছিয়ে পড়তে থাকে। মুম্বাই ও কিছুটা মাদ্রাজে মুসলমানদের হাতে যথেষ্ট সম্পদ ছিল। কিন্তু সে সম্পদ খরচ না করে ব্যবসা-বাণিজ্যে নিয়োগ করে। ব্যবসার জন্য ইংরেজি ভাষা ও পশ্চিমা জ্ঞানের কোনো প্রয়োজন তখন হয়নি। সেখানেও অমুসলিমরাই আধুনিক শিক্ষা গ্রহণে এগিয়ে আসে। সুতরাং যখন চাকরির বাজার সম্প্রসারিত হয়, তখন অমুসলিমদের পাশাপাশি মুসলমানরাও চাকরির বাজারে প্রতিযোগিতায় নামে এবং অবশ্যম্ভাবীভাবে তারা প্রতিযোগিতায় টিকতে পারে না। চাকরির বাজার এখনো এতটা সম্প্রসারিত হয়নি যে সব শিক্ষিত অমুসলিমরা চাকরি পেয়ে গেছে। বিপুলসংখ্যক শিক্ষিত হিন্দু চাকরি না পেয়ে ক্ষুব্ধ হয়। সেই সঙ্গে ইংরেজ সরকারের চাকরিনীতির ফলেও তারা চাকরি পায় না। ফলে তাদের মধ্যে গড়ে উঠতে থাকে একটা সর্বভারতীয় জাতীয় চেতনা_যা একসময় জাতীয়তাবাদে রূপ নেয় এবং স্বাধীনতাসংগ্রামে নেতৃত্ব দেয়। অপরপক্ষে মুসলমানরা দেখে যে হিন্দুরা (নিষ্ঠার শক্তিতে) চাকরি পাচ্ছে_তখন তাদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়, যা ইংরেজরা ব্যবহার করতে সক্ষম হয় জাতীয়তাবাদী শক্তিকে দুর্বল করার কাজে। উত্তর-পশ্চিম প্রদেশগুলোয় মুসলমানদের হাতে সম্পদ ছিল বেশি। অন্যান্য প্রদেশের চেয়ে আধুনিক শিক্ষার প্রতি আগ্রহও ছিল বেশি। বিংশ শতকের শুরুতেই দেখা যায়, উত্তর প্রদেশ শিক্ষাক্ষেত্রে চালকের আসনটি দখল করে নিয়েছে। তবে বাংলার বিশিষ্ট হিন্দুদের চেয়ে তাদের অবস্থান তখনো ছিল অনেক পেছনে।
বিভিন্ন প্রদেশের স্কুল ও কলেজে পাঠরত মোট ছাত্রসংখ্যা (ক), মুসলমান ছাত্রের সংখ্যা (খ) এবং মুসলমান ছাত্রের শতকরা সংখ্যা (গ)।
১৯১১ সালে বঙ্গভঙ্গের ফলে বাংলা থেকে পূর্ব বাংলা আলাদা করা হয়। পূর্ব বাংলা তখন আলাদা প্রদেশ। ১৯১২ সালে বঙ্গভঙ্গ রদ করলে আবার বাংলা একটি প্রদেশে পরিণত হয়। আমরা দেখছি, পুরো বাংলায় মোট কলেজের সংখ্যা ছিল ১৪ হাজার ৭৭৬ এবং স্কুল তিন লাখ ৫২ হাজার ৫৭২টি। সে সময় বাংলার কলেজগুলোতে মোট এক হাজার ১৭৩ জন এবং স্কুলগুলোতে ৭৯ হাজার ৮০৩ জন মুসলিম ছাত্র পড়ত। কলেজে মুসলিম ছাত্রের শতকরা হার ছিল ১৮ দশমিক ৬ জন এবং স্কুলে ৪১ দশমিক ৬ জন। কিন্তু এককভাবে পূর্ব বাংলায় মুসলিম ছাত্র ছিল কলেজে ১২ শতাংশ ও এবং স্কুলে ৩১.৮ শতাংশ। কিন্তু পাঞ্জাবের কলেজ ও স্কুলে মুসলিম ছাত্রের সংখ্যা যথাক্রমে ২৪.৫ ও ২৪.৯ শতাংশ এবং উত্তর প্রদেশে ওই সংখ্যা যথাক্রমে ২৩.২ ও ১০.৮ শতাংশ। বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠ পূর্ব বাংলা প্রদেশে কলেজে ও স্কুলে মুসলমান ছাত্রসংখ্যা যথাক্রমে ১২ ও ৩১.৪ শতাংশ। ১৯৫১ সালে সেনসাস রিপোর্ট অনুযায়ী বাংলায় মুসলিম জনসংখ্যা ৫২.৭৪ শতাংশ। কিন্তু কলেজে মুসলিম ছাত্রের সংখ্যা ১৮.৬ এবং স্কুলে ৪১.৬ শতাংশ মাত্র। যা লোকসংখ্যার তুলনায় অনেক কম। পাঞ্জাবের মোট জনসংখ্যার ১০.৪৮ শতাংশ শিখ। তারা ব্যবস্থাপক পদের ১০.৩ এবং বিচার বিভাগীয় পদের ৬.২ শতাংশ দখল করে আছে। সূত্র : Report of the Public Service commission 1912 vol. i (calcutta 1917), P. 191, David Page Introduction P. 8. দেখা যাচ্ছে যে বাংলার মোট লোকসংখ্যার ৫২.৭৪ শতাংশ মুসলিম অথচ তারা ওই সব পদের মাত্র ১০.৬ শতাংশ অধিকার করে আছে, অথচ উত্তর প্রদেশ ও পাঞ্জাবে মুসলমান জনসংখ্যা যথাক্রমে ১৪.১১ ও ৫৪.৮৫ শতাংশ। কিন্তু ওই সব পদের ৩৪.৭ ও ৩৮.৬ শতাংশ তাদের দখলে। এই চমকপ্রদ তথ্যের প্রধান কারণ আগেই বলেছি শিক্ষায় বৈষম্য। তবে তুলনা করার জন্য আমি বেছে নেব বাংলা ও উত্তর প্রদেশ। বাংলার ৫২.৭৪ শতাংশ মুসলমান ওই সব পদের মাত্র ১০.৬ শতাংশ দখল করেছিল; কিন্তু উত্তর প্রদেশের মাত্র ১৪.১১ শতাংশ মুসলমান দখল করেছিল ৩৪.৭ শতাংশ। দেখা যায়, বাংলায় কলেজপড়ুয়া মোট ছাত্রের মাত্র ১৮.৬ শতাংশ ছিল মুসলমান অথচ উত্তর প্রদেশের কলেজে মুসলমান ছাত্রের সংখ্যা ২৩.২ শতাংশ। অধ্যাপক সিরাজুল ইসলামের সিদ্ধান্তের পক্ষে এটা একটা জলজ্যান্ত প্রমাণ। তাই তিনি সিদ্ধান্ত দেন, 'বৈষম্য আলোচনায় শিক্ষাকে একটি গুরুত্বপূর্ণ ফলক হিসেবে ব্যবহার করা উচিত। হিন্দু এবং মুসলমান সম্প্রদায় যদি সমহারে শিক্ষিত হয়, শুধু তখনই সম্প্রদায়ভিত্তিক চাকরি-সারণি অর্থবহ হতে পারে, নচেত নয়।'(২৫)। সিরাজুল ইসলাম আরো লিখেছেন, '১৯৪৭ সালের দেশ বিভাগের পর থেকে পণ্ডিতরা একটি সমস্যার ওপর বিস্তর আলোকপাত করেছেন। সেটি হচ্ছে সাম্প্রদায়িকতা ও বিচ্ছিন্নতাবাদ। কিভাবে হিন্দু-মুসলমান সুসম্পর্ক পরিহার করে সাম্প্রদায়িকতার জালে জড়িয়ে গেল, কিভাবে মুসলিম সম্প্রদায় বিচ্ছিন্নতাবাদী হয়ে উঠল, এ নিয়ে অনেক লেখালেখি হয়েছে, কিন্তু যতই এ বিষয়ে নিরপেক্ষ ও বস্তুনিষ্ঠ গবেষণা হচ্ছে, ততই একটি বিষয় আমাদের কাছে পরিষ্কার হয়ে আসছে।
লেখক : শিক্ষাবিদ ও সমাজ বিশ্লেষক

No comments

Powered by Blogger.