রাজস্ব আদায়-ভেট নয় ভ্যাট

ব্যবসায়ীরা ভেট নয়, আইন-কানুন মেনে সরকারকে ভ্যাট দিতে উৎসাহী_ এমন সংকল্প ব্যক্ত করা হয়েছে এক আলোচনা অনুষ্ঠানে। খসড়া ভ্যাট বা মূল্য সংযোজন কর আইন-২০১১ নিয়ে শিল্পপতি ও ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই শুক্রবার এর আয়োজন করেছিল।


আইনের খসড়াটির প্রণেতা জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যানসহ পদস্থ কর্মকর্তারাও এ সময় উপস্থিত ছিলেন। আলোচনায় ব্যবসায়ীদের কেউ কেউ রাজস্ব বিভাগের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে নানাভাবে হয়রানি ও ভয়ভীতি দেখিয়ে ঘুষ আদায়ে ব্যস্ত থাকার অভিযোগ করেন। ধরে নেওয়া যায়, বিনিময়ে ব্যবসায়ীরাও নির্ধারিত পরিমাণের চেয়ে কম কর প্রদানের সুবিধা আদায় করে নেন। এক হাতে তালি বাজে না_ এটাই যে নিয়ম! এভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয় সরকার। রাজস্ব আদায় যা হতে পারত তার একটি অংশ বাইরেই থেকে যায়। পরিস্থিতির উন্নতি ঘটানোর জন্য আইন ও বিধিবিধান সহজ করার প্রয়োজন রয়েছে। আইনের জটিলতায় অনেক সময় সরকার ন্যায্য পাওনা থেকে বঞ্চিত হয়। করদানে ইচ্ছুক ব্যক্তিরাও ঝামেলা এড়াতে অসাধু সরকারি কর্মকর্তাদের ফাঁদে পা দেয়। সম্মেলনে আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় এসেছে, যা গভীর মনোযোগ দাবি করে। রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান সভায় জানান, গত ২০ বছরে সরকারের রাজস্ব আয় ১৫ গুণ বেড়েছে। এর একটি কারণ অর্থনৈতিক ও উপার্জনমূলক কর্মকাণ্ড বৃদ্ধি। ব্যবসায়ীদের মধ্যে কর প্রদানে আগ্রহও বেড়েছে। আলোচনা অনুষ্ঠানে তারা বলছেন, সরকারের কাজে স্বচ্ছতা এবং জনগণের কাছ থেকে আদায় করা অর্থ নাগরিক সুবিধার জন্য ব্যবহার হতে থাকলে কর প্রদানে উৎসাহ আরও বেড়ে যাবে। এটা নিশ্চিত করা কেবল জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের একার কাজ নয়। সরকারের প্রতিটি ব্যয় হতে হবে স্বচ্ছ; থাকতে হবে জবাবদিহিতা। দুর্ভাগ্যজনকভাবে, বাংলাদেশে সরকারি ব্যয় বরাবরই প্রশ্নবিদ্ধ এবং তাতে যথেষ্ট অনিয়ম ও দুর্নীতি থাকে। এ ধরনের পরিস্থিতি জনগণকে কর প্রদানে নিরুৎসাহিত করে থাকে। সুশাসন নিশ্চিত করা সম্ভব হলেই কেবল এ অবস্থা থেকে নিষ্কৃতি লাভ সম্ভব। এ জন্য জনগণের প্রত্যাশার শেষ নেই। রাজনৈতিক অঙ্গীকারও রয়েছে। কিন্তু বিড়ালের গলায় কেউ ঘণ্টা বাঁধতে যে এগিয়ে আসছে না!
 

No comments

Powered by Blogger.