চরাচর-মিনি কক্সবাজার by বিশ্বজিৎ পাল বাবু

প্রকৃতিপ্রেমীদের জন্য আরেকটি অন্যতম বিনোদনকেন্দ্র হয়ে উঠেছে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইলের ধরন্তী নৌঘাট। সূর্য ডোবার মনোরম দৃশ্যের সঙ্গে তুলনা করে এরই মধ্যে জায়গাটি 'মিনি কক্সবাজার' নামে পরিচিতি পেয়েছে। প্রতি বৃহস্পতি ও শুক্রবার বিকেলে এখানে হাজারো মানুষের ঢল নামে। এবার ঈদের দিনে হাজার সাতেক মানুষের সমাগম হয়েছিল 'মিনি কক্সবাজারে'।


দুপুর ২টার দিকে গিয়ে দেখা যায়, কেউ নৌকায়, কেউবা মিনি ট্রাকে বাজানো গানের সঙ্গে তাল মিলিয়ে নাচছেন। আবার কেউ খালি গলায় গান গেয়ে আনন্দ বিলাচ্ছেন। প্রখর রোদে পানিতে গা ভাসিয়ে দেওয়াদের আনন্দের মাত্রাটা ছিল বাঁধ ভাঙা। তাঁরা একে অপরের গায়ে পানি ছিটিয়ে ও সাঁতার কেটে যাচ্ছিলেন ঘণ্টার পর ঘণ্টা। কেউবা আনন্দ নিচ্ছিলেন ঘোড়ার পিঠে চড়ে। বড়শি দিয়ে মাছ ধরায় ব্যস্ত কেউ কেউ। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাড়তে থাকে মানুষের ভিড়। শেষ বিকেলে প্রায় পাঁচ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে ছিল মানুষ আর যানবাহনের জট। সরাইল-নাছিরনগর সড়কের পাশেই ধরন্তী নৌঘাট। মাঝ দিয়ে সড়ক আর দুই পাশে পানি। কোথাও কোথাও যতদূর চোখ যায়, পানি ছাড়া আর কিছুরই দেখা মেলে না। চারদিক জনমানবশূন্য। এমনকি সড়কের দুই ধারে একটি গাছও নেই। স্থানীয়রা জানান, এলাকাটি আকাশি হাওড় নামে পরিচিত। বর্ষা এলেই হাওড়টি পানিতে থৈথৈ করে। কেউ নৌকায় ঘোরেন, কেউবা পানিতে নেমে গোসল করে প্রকৃতির স্বাদ নেন। পর্যটকদের আসাকে কেন্দ্র করে এলাকায় অন্তত ২৫টি ভ্রাম্যমাণ দোকান বসে। পর্যটকদের আনন্দ দেওয়ার জন্য ঘোড়া নিয়ে আসেন স্থানীয়দের কেউ কেউ। তবে সব সময় ডাকাতের ভয় তাড়া করে পর্যটকদের। স্থানীয় লোকজন জানান, সন্ধ্যার পর ওই এলাকার সড়ক ও নৌ_দুটি পথই চলে যায় ডাকাতের দখলে। এ ছাড়া বসার জন্য নূ্যনতম সুযোগ-সুবিধা না থাকায় মানুষের ক্ষোভের শেষ নেই। এই এলাকাকে দ্রুত পর্যটন এলাকা ঘোষণা করার দাবি সবার। সরাইল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. হেলাল উদ্দিন জানান, এলাকাটি অন্যতম বিনোদনকেন্দ্র হয়ে উঠেছে। এটিকে পর্যটন এলাকা হিসেবে গড়ে তোলার জন্য ইতিমধ্যেই প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে।
বিশ্বজিৎ পাল বাবু

No comments

Powered by Blogger.