শেয়ারবাজার উন্নয়নে আরও ঋণ সহায়তা দেবে এডিবি

দেশের শেয়ারবাজারের উন্নয়নে আন্তর্জাতিক দাতা সংস্থা এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক (এডিবি) আরও একটি ঋণ প্রদানের পরিকল্পনা করছে। গতকাল রোববার প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) পরিদর্শনকালে সংস্থার কান্ট্রি ডিরেক্টর দিবা কুমার কান্দিয়া এক প্রেস ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান। প্রেস ব্রিফিংয়ে অন্যদের মধ্যে এডিবির বাংলাদেশ কার্যালয়ের প্রধান অর্থনীতিবিদ জাহিদ হোসেন, ডিএসইর সভাপতি শাকিল রিজভী, জ্যেষ্ঠ


সহসভাপতি আহসানুল ইসলাম, পরিচালক রকিবুর রহমানসহ অন্য পরিচালকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। বর্তমানে এডিবির ২০ কোটি টাকারও বেশি 'টেকনিক্যাল অ্যাসিস্ট্যান্স লোন_ ইমপ্রুভমেন্ট অব ক্যাপিটাল মার্কেট অ্যান্ড ইন্স্যুরেন্স গভর্নেন্স প্রজেক্ট' নামের একটি ঋণ প্রকল্পের মাধ্যমে সরকার শেয়ারবাজারের স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে নিয়ন্ত্রক সংস্থা এসইসি ও রাষ্ট্রায়ত্ত বিনিয়োগ সংস্থা আইসিবির দক্ষতা বৃদ্ধির কাজ করছে। ২০০৭ সালে এডিবি থেকে ঋণ অনুমোদন করা হয়। প্রকল্পটি এখনও বাস্তবায়নাধীন। এ প্রকল্পের মাধ্যমে বাজার পর্যবেক্ষণে এসইসির দক্ষতা বৃদ্ধির বিষয়ে পরামর্শ দিচ্ছে এডিবি। এছাড়া এ প্রকল্পের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ এবং আধুনিক সার্ভিল্যান্স সফটওয়্যার ব্যবস্থা চালু করা হবে।
গতকাল দুপুরে ডিএসই প্রধান কার্যালয়ে প্রেস বিফ্রিংয়ে এডিবি কান্ট্রি ডিরেক্টর বলেন, আমরা বাংলাদেশের শেয়ারবাজারের উন্নয়নে দ্বিতীয় ঋণ দেওয়ার জন্য কাজ করছি। শেয়ারবাজারের সার্বিক উন্নয়নে এডিবি সর্বাত্মক সহযোগিতা করছে। এ দেশের শেয়ারবাজারের লেনদেন ব্যবস্থাসহ সার্বিক মান উন্নয়নে নীতি-পরিকল্পনা বিষয়ে আরও কী ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া যেতে পারে, সে বিষয়ে এডিবির পরামর্শক দল কাজ করছে। আশা করছি, আগামী ফেব্রুয়ারির মধ্যে এটি প্রকাশ করা হবে। ব্রিফিংয়ে শাকিল রিজভী বলেন, দেশের শেয়ারবাজারের উন্নয়নে এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক (এডিবি) অনেক আগে থেকেই সম্পৃক্ত রয়েছে। শেয়ারবাজারের সার্বিক সক্ষমতা অর্জনে এ উন্নয়ন সংস্থা সব সময়ই সহায়তা দিয়ে আসছে। ডিএসইর স্বয়ংক্রিয় লেনদেন ব্যবস্থা প্রবর্তন ও সেন্ট্রাল ডিপোজিটরি ব্যবস্থা চালুর ক্ষেত্রে তাদের উল্লেখযোগ্য অবদান রয়েছে।
ডিএসই পরিচালনা পর্ষদের সঙ্গে এডিবি কান্ট্রি ডিরেক্টরের আলোচনা বিষয়ে ডিএসই সভাপতি বলেন, দেশের অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে পঞ্চবার্ষিক উন্নয়ন পরিকল্পনা বিষয়ে এ সংস্থাটি সরকারকে বিশেষ পরামর্শ দেবে। এতে শেয়ারবাজার বিষয়ে এডিবি তাদের মতামত প্রদান করবে বলে আমাদের জানিয়েছে। এছাড়া স্টক এক্সচেঞ্জের ডিমিউচুয়ালাইজেশন বিষয়ে আমাদের কথা হয়েছে। তারাও এ বিষয়ে সরকারকে তাদের পরামর্শ দেবে বলে জানিয়েছে।
ডিএসইর সভাপতি জানান, দেশে আন্তর্জাতিক ও সমৃদ্ধশালী শেয়ারবাজার প্রতিষ্ঠার জন্য ডিএসই কাজ করছে। তিনি বলেন, শেয়ারবাজারের মাধ্যমে অর্থনীতিতে সাধারণ মানুষের অংশগ্রহণ বাড়ানোর জন্য আমরা চেষ্টা করছি।

ইতোপূর্বে ১৯৯৭ সালে ক্যাপিটাল ম্যার্কেট ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রাম (সিএমডিপি) নামের আট কোটি ডলারের সহায়তা দিয়েছিলো। ছিয়ানব্বই সালের শেয়ারবাজার ধসের পর শেয়ার লেনদেনে কারসাজি প্রতিরোধে আইন সংশোধন ও পর্যবেক্ষণ ব্যবস্থা উন্নয়ন, অবকাঠামোগত অর্থাৎ লেনদেন ব্যবস্থা আধুনিকায়ন, শেয়ারবাজার উন্নয়নে সহায়তা কার্যক্রমে আধুনিকায়ন কাজে ওই অর্থ ব্যয় হয়। এডিবির সহায়তায় দেশে সংয়ক্রিয় লেনদেন ব্যবস্থা ও সিডিবিএল প্রতিষ্ঠিত হয়। সম্প্রতি সংস্থাটি সিডিবিএল থেকে তার মালিকানা প্রত্যাহার করে নিয়েছে।

No comments

Powered by Blogger.