পাকিস্তানে আগাম নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে পিপিপি

পাকিস্তানের ক্ষমতাসীন দল পাকিস্তান পিপলস পার্টি (পিপিপি) আগাম পার্লামেন্ট নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে। বিষয়টি নিয়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে তারা আলোচনা করবে। মতৈক্যের ভিত্তিতে পার্লামেন্ট নির্বাচনের তারিখ নির্ধারণ করাই হবে আলোচনার মূল লক্ষ্য। পাকিস্তানের শীর্ষস্থানীয় সেনা ও গোয়েন্দা কর্মকর্তাদের সরিয়ে দিতে মার্কিন সহায়তা চেয়ে প্রেসিডেন্ট আসিফ আলী জারদারির ‘গোপন চিঠি’ কেলেঙ্কারির বিষয়টি প্রকাশ হওয়ার পর থেকে দেশটিতে আগাম
নির্বাচন হতে পারে বলে বিভিন্ন মহলে আলোচনা চলছে। পিপিপির গত কয়েকটি দলীয় বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন এমন কয়েকজন নেতা জানান, বৈঠকে আগাম নির্বাচনের ব্যাপারে বিভিন্ন দলের সঙ্গে আলোচনার বিষয়টি উঠে এসেছে।
পিপিপির জ্যেষ্ঠ একজন নেতা ও পার্লামেন্টের জাতীয় পরিষদের সদস্য জানান, সব দলকে আগাম নির্বাচনে আনা যায়—এমন একটি সম্ভাব্য রূপরেখা নিয়ে দলের ভেতর কাজ চলছে।
প্রধান বিরোধী দল পাকিস্তান মুসলিম লীগ (পিএমএল-এন) আগাম নির্বাচন চায়। দলটির অন্যতম নেতা খুররম দস্তগীর বলেন, তাঁর দল আগাম নির্বাচন চায়। তাঁরা মনে করেন, বর্তমান সংকট থেকে উত্তরণের একমাত্র উপায় আগাম নির্বাচন।
বিরোধী দল জামায়াতে ইসলামিও (জেআই) আগাম নির্বাচন চায়। জেআই গত সাধারণ নির্বাচন বর্জন করেছিল। দলটি গত মার্চে পার্লামেন্টের উচ্চকক্ষ সিনেটে থাকা তিনটি আসনও হারিয়েছে।
পাকিস্তানের নতুন রাজনৈতিক শক্তি হিসেবে আবির্ভূত সাবেক ক্রিকেটার ইমরান খানের তেহরিক-ই-ইনসাফও আগাম নির্বাচন চায়। তবে তা আগামী সেপ্টেম্বর-অক্টোবরের আগে নয়। তেহরিক-ই-ইনসাফের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য উমর চিমা বলেন, তাঁর দল আগাম নির্বাচনের পক্ষে। তবে তার আগে ভোটার তালিকায় নতুন ভোটারদের অন্তর্ভুক্তি নিশ্চিত হবে।
পিপিপির নেতৃত্বাধীন ক্ষমতাসীন জোটের শরিক পাকিস্তান মুসলিম লীগ (পিএমএল-কিউ) এবং খাইবার পাখতুনখাওয়া প্রদেশে ক্ষমতাসীন দ্য আওয়ামী ন্যাশনাল পার্টি চায় সংবিধান অনুযায়ী সরকার পাঁচ বছর মেয়াদ পূর্ণ করুক। আগামী বছরের মার্চে এই মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা। তবে গত নির্বাচনে ২৩টি আসন পাওয়া মুত্তাহিদা কওমি মুভমেন্ট (এমকিউএম) কিছুই বলছে না।
পিপিপি আগাম নাকি মেয়াদ শেষ হওয়ার পর নির্বাচনে আগ্রহী, এমন প্রশ্নের জবাবে পিপিপির জ্যেষ্ঠ ওই নেতা জানান, সব পরিকল্পনা ঠিক থাকলে আগামী সেপ্টেম্বর বা অক্টোবরে নির্বাচন করতে আগ্রহী পিপিপি। তবে এ জন্য রাজনৈতিক মতৈক্যে পৌঁছাতে হবে।
পিপিপি ও ক্ষমতাসীন জোটের শরিক দলগুলো মধ্য ফেব্রুয়ারি সিনেট নির্বাচন অনুষ্ঠানের ব্যাপারে একমত হয়েছে। সংবিধান অনুযায়ী ওই সময়ই এ নির্বাচন হওয়ার কথা।
পাকিস্তানের তথ্যমন্ত্রী ফেরদৌস আশিক আওয়ান বলেন, ‘আমরা প্রথমে ক্ষমতাসীন জোটের শরিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করব। তাদের সঙ্গে একটি মতৈক্যে পৌঁছানোর পর অন্যান্য রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনা করা হবে।’ ডন নিউজ।

No comments

Powered by Blogger.