রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতার আশঙ্কা এ বছর বেশি-সংবাদ সম্মেলনে ঢাকা চেম্বার

ব্যবসায়ীদের সংগঠন ঢাকা চেম্বার বলেছে, চলতি ২০১২ সালে দেশে রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতার আশঙ্কা সবচেয়ে বেশি। আগামী জাতীয় নির্বাচন তত্ত্বাবধায়ক সরকার, না অন্য কোনো সরকারের অধীনে হবে তা নিয়ে এই অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি হতে পারে। এটি ব্যবসাসহ সমগ্র অর্থনীতির জন্য একটি উদ্বেগের বিষয়। রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে দেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি ব্যবসা-বাণিজ্যকে ক্ষতিগ্রস্ত করে। তাই ব্যবসায়ী মহল জাতীয় অর্থনৈতিক ইস্যুতে রাজনৈতিক


সমঝোতা প্রত্যাশা করে। রাজধানীর মতিঝিলে ডিসিসিআই মিলনায়তনে গতকাল রোববার দেশের সার্বিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতি ও ঢাকা চেম্বারের কর্মকাণ্ড নিয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে আসিফ ইব্রাহীম এসব কথা বলেন। সংবাদ সম্মেলনে ডিসিসিআইয়ের সিনিয়র সহ-সভাপতি হায়দার আহমেদ খানসহ নতুন পরিচালনা পর্ষদের নেতারা উপস্থিত ছিলেন। আসিফ ইব্রাহীম বলেন, 'আজকের (রোববারের) যে রোডমার্চ বিরোধীদলীয় নেত্রীর নেতৃত্বে করা হচ্ছে, রাজনৈতিক আন্দোলনের ক্ষেত্রে হরতালের পরিবর্তে এ ধরনের কর্মসূচি তুলনামূলক ভালো। ভবিষ্যতে প্রয়োজনে রাজনৈতিক দলগুলো হরতালের পরিবর্তে এমন কর্মসূচি দিলে ব্যবসায়ীরা স্বাগত জানাবেন।'
লিখিত বক্তব্যে আসিফ ইব্রাহীম বলেন, ব্যাংক থেকে সরকারের ঋণ নেওয়ার পরিমাণ বাড়ছে। লক্ষ্যমাত্রাও ছাড়িয়ে গেছে। এ অবস্থা চলতে থাকলে বেসরকারি উদ্যোক্তাদের ঋণ পাওয়া অসম্ভব হয়ে পড়বে। বেসরকারি খাতে অর্থায়নও দুর্বল হয়ে পড়বে। এজন্য তিনি সরকারের ব্যয় কমানোর জন্য বিভিন্ন রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠানের লোকসান কমানোর পরামর্শ দেন। তিনি বলেন, বিমান ও রেলের মতো সরকারি খাতগুলোর লোকসানে
থাকার কোনো কারণ নেই। কিন্তু দুঃখের বিষয় হচ্ছে, গণতন্ত্র আসার পর অদক্ষ প্রশাসনের কারণে সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর লোকসান কমানো হচ্ছে না। এগুলোকে লাভজনক প্রতিষ্ঠানে পরিণত করে ব্যয়ের চাপ কমাতে হবে। তিনি রাজস্ব আয় বাড়ানোর জন্য করজাল সম্প্রসারণের কথা বলেন। পাশাপাশি তিনি প্রকল্প বাস্তবায়নে সক্ষমতার ওপর জোর দেন। নইলে বিদেশি সাহায্য ছাড় করা কমে যাবে বলেও সতর্ক করেন।
মূল্যস্ফীতিকে আশঙ্কাজনক উল্লেখ করে ডিসিসিআইর সভাপতি বলেন, মূল্যস্টম্ফীতির কারণে অর্থনীতির অন্যান্য সূচক থমকে গেছে। আমদানিনির্ভর দেশ হওয়ায় উচ্চমূল্যস্টম্ফীতির কারণে দেশের অর্থনীতিতে ভয়াবহ বিপর্যয় আসতে পারে। একদিকে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, অন্যদিকে জ্বালানি তেলের দাম বাড়ায় যানবাহনের ভাড়া বৃদ্ধিতে সাধারণ জনগণের অবস্থা খুবই শোচনীয়। আসিফ ইব্রাহিম আরও বলেন, এক বছরে ডলারের দাম ১৮ শতাংশ বেড়েছে। এর প্রভাব পড়ছে নিত্যপণ্যের দামের ওপর। ডলার সংকট ও মূলবৃদ্ধির কারণে আমদানি করা পণ্যের দাম বাড়বে। এটা মূল্যস্টম্ফীতিকে আরও বাড়াবে।
ভারতকে ট্রানজিট দেওয়ার পরিবর্তে ট্রান্সশিপমেন্ট দিলেই দেশ লাভবান হবে মন্তব্য করে তিনি বলেন, বাংলাদেশি যানবাহন ব্যবহার করে ট্রানজিট দিলে পণ্য পরিবহন মাসুলসহ আনুষঙ্গিক সেবার জন্য বাণিজ্যিকভাবে মাসুল আদায় করা যাবে। ব্যাংক ঋণের সুদের সর্বোচ্চ সীমা তুলে দেওয়ার সমালোচনা করে তিনি বলেন, এর ফলে আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো সুদ ব্যবসার দিকেই ঝুঁকে পড়ছে। চড়া সুদের কারণে শিল্প খাতে বিনিয়োগকারীরা ঋণ নিচ্ছেন না।

No comments

Powered by Blogger.