ধর্মঘট-সংঘর্ষের মধ্যেই সিরিয়ায় পৌর নির্বাচন-দু'দিনে নিহত ৩২

রকারি বাহিনীর সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষ এবং বিরোধী দল স্থানীয় ডেমোক্রেটিক কমিটির (এলসিসি) ডাকা সাধারণ ধর্মঘট ও বয়কটের মধ্যেই দেশটিতে পৌর নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। নির্বাচনে ভোটারের অংশগ্রহণ ছিল অপেক্ষাকৃত কম। এদিকে বিরোধীরা জানিয়েছে, সোমবার সেনাবাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে কমপক্ষে ছয়জন এবং রোববার কমপক্ষে ২৬ জন নিহত হয়েছে। খবর : আলজাজিরা, বিবিসি, এএফপি।


সোমবার স্থানীয় সময় সকাল ৮টায় ভোটগ্রহণ শুরু হয়। তবে আসাদবিরোধীদের বয়কটের কারণে ভোটকেন্দ্রে উপস্থিতি ছিল কম। বিবিসি জানায়, সহিংসতার আশঙ্কায় অনেকেই ভোটকেন্দ্রে যাননি। পৌর নির্বাচনে ১৭ হাজার ৫৮৮টি আসনের জন্য ৪২ হাজার ৮৮৯ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এক নির্বাচন কর্মকর্তা জানান, রাজধানী দামেস্কে ভোটারের উপস্থিতি কম লক্ষ্য করা গেছে। নির্বাচন কমিটির কর্মকর্তা খালাফ আল এজ্জাবি জানান, সিরিয়ায় নতুন নির্বাচন আইন অনুসারে সরকারের বিকেন্দ্রীকরণের নীতি অনুসরণ করেই ভোট অনুষ্ঠিত হচ্ছে। তিনি বলেন, নতুন আইন অনুযায়ী একটি সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য প্রয়োজনীয় সব পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। অতীতের যে কোনো সময়ের চেয়ে নির্বাচন অবাধ হবে বলে কর্তৃপক্ষ দাবি করলেও নির্বাচন বর্জনের ডাক দিয়েছে বিরোধীরা। দামেস্কে ভোট দিয়ে আসা জেইনা জানান, তিনি ভোট দিয়েছেন, কারণ প্রেসিডেন্ট আসাদের প্রতিশ্রুত সংস্কারে অবদান রাখতে চান তিনি।
সেনা-বিক্ষোভকারী সংঘর্ষে গতকাল ছয়জন এবং রোববার সরকার ও বিরোধীদের মধ্যে নতুন করে সংঘর্ষে কমপক্ষে ২৬ জন নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছেন মানবাধিকার কর্মীরা। এদিকে দেশটির বিরোধীরা রোববার রাজধানী দামেস্কসহ বিভিন্ন শহরে প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদবিরোধী সাধারণ ধর্মঘট পালন করেছে। বিরোধীরা দাবি করেছে, স্বতঃস্ফূর্ত ধর্মঘটে ব্যবসা-বাণিজ্য ও স্বাভাবিক কাজকর্ম বন্ধ ছিল। এ ধর্মঘট প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদ সরকারের প্রতি বেসামরিক সিরীয়দের ক্ষোভের নতুন ইঙ্গিত। রোববারের সংঘর্ষে হোমস শহরে নয়জন, হামায় ছয়জন, দেরায় তিনজন, ইদলিবে দু'জন এবং দামেস্কের বাইরে দু'জন নিহত হয়। এ ছাড়া গতকাল আসাদ অনুগত পাঁচ সেনাও নিহত হয়। এদিকে ফ্রান্সের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যালেন জুপে রোববার অভিযোগ করেন, লেবাননে গত শুক্রবার ফ্রান্সের শান্তি সেনাদের ওপর হামলার পেছনে সিরিয়ার হাত ছিল বলে তারা মনে করছেন।
তবে সিরিয়া গতকাল এ অভিযোগ অস্বীকার করেছে। ৯ মাস ধরে সিরিয়ায় প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদবিরোধী আন্দোলন চলছে।
জাতিসংঘের হিসাবমতে, ৯ মাসের সহিংসতায় দেশটিতে ৪ হাজারেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে। এর মধ্যে ৩০৭টি শিশু। আন্তর্জাতিক চাপ সত্ত্বেও সরকারবিরোধীদের বিরুদ্ধে আসাদ দমন অভিযান অব্যাহত রেখেছেন।

No comments

Powered by Blogger.