বনের জমিতে প্লট-বেপরোয়া ভূমিদস্যু

টাঙ্গাইলের বিভিন্ন স্থানে বন বিভাগের জমি ভূমিদস্যুরা দখল করে নেওয়ার খবর নতুন নয়। তবে বহেড়াতৈল রেঞ্জের ডিবি গজারিয়া বিটের আওতাধীন বেতুয়া গ্রামের বিলপাড়া বাজার এলাকার দখল করে নেওয়া বন বিভাগের জমি প্লট বানিয়ে বিক্রি করার পর সংশ্লিষ্ট বিভাগের কর্মকর্তাদের টনক নড়ে। তারা প্লটের সীমানা খুঁটি উপড়ে ফেলে সেখানে সরকারি সম্পত্তির মালিকানা জানান দিয়েছে বলে গত সোমবার সমকালে খবর প্রকাশিত হয়েছে।


রিপোর্টে দেখা যায়, সরকারি সম্পত্তি জবরদখলকারী সেলিম ও ওয়াদুদের কোনো অনুশোচনা নেই। তারা রিপোর্টারের কাছে বলেছে, আরও অনেকেই বন বিভাগের জমি দখল করেও পার পেয়ে গেছে। আসলে এসব জবরদখলকারীর কাছে বন বিভাগের সম্পত্তি দখল করা তেমন কোনো গর্হিত কাজ নয়। অতীতে আরও অনেকেই এভাবে বন বিভাগসহ সরকারের বিভিন্ন বিভাগের সম্পত্তি দখল করে পার পেয়ে গেছে। এমনকি নদী, খাল-বিল দখল করেও অনেক ভূমিদস্যু সমাজে উচ্চ আসনে সমাসীন। ফলে এসব সম্পত্তি কেনার লোকের অভাব পড়ে না। তবে যারা এসব সম্পত্তি ক্রয় করেন তারাও কোনোভাবেই সুবিবেচনার পরিচয় দেন না। বিলপাড়া বাজার এলাকায় বন বিভাগের জমি যারা কিনেছেন বা কেনার জন্য লাখ লাখ টাকা বায়না করেছেন তাদের অর্থ ভূমিদস্যুরা ফেরত দেবে তার নিশ্চয়তা কোথায়? তাই জমি কেনার আগেই এর প্রকৃত মালিক কে বা কারা তা নিশ্চিত হওয়া উচিত নয় কি! টাঙ্গাইলের আরও কয়েক স্থানে বন বিভাগ বা সরকারি সম্পত্তি বেহাত হওয়ার খবর প্রশাসনের অজানা নয়। এসব সম্পত্তি স্থানীয় প্রভাবশালী মহল, প্রশাসনের এক শ্রেণীর স্বার্থপর কর্মকর্তা-কর্মচারীর যোগসাজশ ছাড়া বেহাত হয়নি। সে কারণে উচ্চ পর্যায় থেকে কড়া ব্যবস্থা না নিলে এসব জবরদখল করা সরকারি সম্পত্তি পুনরায় সরকারের জিম্মায় ফিরিয়ে আনা অনেক ক্ষেত্রেই সম্ভব হবে না। টাঙ্গাইলের বাহেড়াতৈল রেঞ্জের ডিবি গজারিয়া বিটের আওতাধীন বেতুয়া গ্রামের বিলপাড়া বাজার এলাকার জবরদখল করা জমিতে পুনরায় বন বিভাগের কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করায় আমরা সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের অভিনন্দন জানাই। তবে পদক্ষেপ নিতে এত বিলম্ব হলো কেন তার জবাব অবশ্যই ওই বিভাগের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদেরই দিতে হবে। টাঙ্গাইলে বন বিভাগের আর যেসব সম্পত্তি ইতিমধ্যে বেহাত হয়ে গেছে সেগুলো উদ্ধারের জন্যও যেন ব্যবস্থা নেওয়া হয়। সরকারি সম্পত্তি জবরদখলকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থাই কাম্য।

No comments

Powered by Blogger.