রংপুর চিড়িয়াখানায় সিংহ সম্রাটের পর লাইলীর মৃত্যু by মানিক সরকার,

রংপুর চিড়িয়াখানার পশুরাজ সিংহ স্বামী সম্রাটকে ছয় মাস আগে হারানোর বেদনা আর নিঃসঙ্গতায় অবশেষে স্ত্রী লাইলীও গতকাল বুধবার মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে। এদিকে ছয় মাস আগে বাবা আর গতকাল মাকে হারিয়ে তাদের দুই সন্তানও কিছুটা নিশ্চুপ হয়ে যায়। লাইলীর মৃত্যুর খবর পেয়ে গতকাল দুপুরে সাংবাদিকরা মৃতদেহের ছবি তুলতে গেলে দেখা যায় দুই শাবক ফ্যাল ফ্যাল চোখে তাকিয়ে আছে মৃত মায়ের দিকে।


মাঝেমধ্যে শাবকরা যেটুকু গর্জন করেছে, তাও শোনা যাচ্ছিল বিলাপের মতো। তাদের রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে নিয়োজিত (কেয়ারটেকার) বেলাল হোসেন জানালেন, এটা তাদের স্বাভাবিক গর্জন নয়, কান্নার বহিঃপ্রকাশ।
এদিকে বিকেলে সদর উপজেলা পশু সম্পদ কর্মকর্তা ডা. মীর ফারুক হোসেনের নেতৃত্বে ময়নাতদন্ত শেষে সন্ধ্যায় চিড়িয়াখানার অভ্যন্তরেই লাইলীকে মাটিচাপা দেওয়া হয়।
সম্রাট ও লাইলীর মৃত্যুকে চিড়িয়াখানার ডেপুটি কিউরেটর আবুল কাশেম 'বার্ধ্যকজনিত কারণ' বলে দাবি করলেও নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কর্মচারী এবং স্থানীয় বাসিন্দাদের অনেকেই অভিযোগ করেছে, চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষের অযত্ন, অবহেলা আর পর্যাপ্ত পরিমাণে খাবার না দেওয়ার কারণেই এখানকার পশুগুলো অল্প বয়সে নেতিয়ে পড়ে একপর্যায়ে মৃত্যুবরণ করছে। অভিযোগ রয়েছে, খাদ্য সরবরাহকারী ঠিকাদারের সঙ্গে কর্তৃপক্ষ যোগসাজশ করে পশুর জন্য বরাদ্দের অনেক খাবারই (গো-মাংস) কর্তাদের বাসায় পাঠানো হয়। পশুকুল বঞ্চিত হয় তাদের পরিমিত খাবার থেকে। স্থানীয় লোকজন জানায়, রংপুর চিড়িয়াখানায় অনিয়ম ও দুর্নীতি এখন অনেকটাই ওপেন সিক্রেট। গেটের প্রবেশ মূল্য পাঁচ টাকা হলেও ঈদের সময় ইজারাদার দ্বিগুণ মূল্য ১০ টাকায় টিকিট বিক্রি করায় গত ১২ নভেম্বর ঠিকাদারের দুই কর্মচারীকে গ্রেপ্তার করে ডিবি পুলিশ।

No comments

Powered by Blogger.