ম্যানিলায় হিলারির গাড়িবহরে হামলা

ফিলিপাইনের রাজধানী ম্যানিলায় প্রেসিডেন্ট প্রাসাদের কাছে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিনটনের নিরাপত্তায় নিয়োজিত বাহিনীর সদস্যদের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষ হয়েছে। এ ঘটনায় হিলারির গাড়িরবহর ভিন্ন পথ ধরতে বাধ্য হয়। বার্তা সংস্থা এএফপি গতকাল বুধবার এ কথা জানিয়েছে।ম্যানিলা সফররত হিলারি গতকাল প্রেসিডেন্টের সরকারি বাসভবন মালাক্যানাং প্রাসাদে প্রেসিডেন্ট বেনিনিয়ো অ্যাকুইনোর সঙ্গে বৈঠক শেষে ম্যানিলার মার্কিন দূতাবাসে যাওয়ার পথে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
তবে এ ব্যাপারে ফিলিপাইন পুলিশ ও ম্যানিলার মার্কিন দূতাবাস কেউই মন্তব্য করতেরাজিহয়নি।বামপন্থীআনাকবায়ান গোষ্ঠী ঘটনার দায় স্বীকার করেছে।
একদিনের রাষ্ট্রীয় সফরে গত মঙ্গলবার বিকেলে ম্যানিলায় পেঁৗছেন হিলারি। ফিলিপাইন ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যকার দ্বিপক্ষীয় সামরিক চুক্তির ৬০তম বার্ষিকী উপলক্ষে সেখানে যান তিনি। পাশাপাশি দক্ষিণ চীন সাগরের দুটি দ্বীপপুঞ্জের মালিকানা নিয়ে চীনের সঙ্গে দেশটির চলমান উত্তেজনাকর পরিস্থিতিতে ম্যালিনার পাশে মার্কিন কূটনৈতিক সমর্থনের কথা জানাতে হিলারির এ সফর।
নিজেদের এক ফটোসাংবাদিকের বরাত দিয়ে এএফপি জানায়, প্রায় ৫০ জন বিক্ষোভকারী নিরাপত্তাকর্মীদের গাড়ির ওপর চড়াও হয়। তারা গাড়িতে লাথি মারে এবং লাল রং ছুড়ে দেয়। এ সময় ফিলিপাইনের নিরাপত্তাকর্মীসহ অন্তত একজন মার্কিন নিরাপত্তাকর্মী বিক্ষোভকারীদের দিকে স্বয়ংক্রিয় আগ্নেয়াস্ত্র তাক করে। তবে গুলি ছোড়ার কোনো ঘটনা ঘটেনি।
এএফপির ওই ফটোসাংবাদিক জানান, হিলারির গাড়িবহরের সামনে থাকা ফিলিপিনো পুলিশের মোটরসাইকেল প্রেসিডেন্ট প্রাসাদের বাইরে বের হওয়ার পর বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে সংঘর্ষ বাধে। বিক্ষোভকারীদের হটাতে দাঙ্গা পুলিশ তাদের লাঠিপেটা করে। এ অবস্থায় মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে বহন করা গাড়িসহ ওই বহরের মূল গাড়িগুলো ভিন্ন পথ ধরে গন্তব্যে যায়। ওই ফটোসাংবাদিক জানান, বিক্ষোভকারীদের হামলায় নিরাপত্তাকর্মীদের বেশ কয়েকটি মোটরসাইকেল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
বামপন্থী তরুণদের আনাকবায়ান গ্রুপের ম্যানিলা শাখার মুখপাত্র দিয়ানে ম্যারি সোলমেয়র এ ঘটনায় তাঁদের কর্মীদের সংশ্লিষ্টতার কথা স্বীকার করে বলেন, 'আমরা এ সফরের প্রতিবাদ জানিয়েছি। প্রেসিডেন্ট প্রাসাদ থেকে হিলারির গাড়িবহর বের হওয়ার পর আমরা এর প্রতিবাদে দ্রুত সমাবেশের আয়োজন করি।' ঘটনার সময় কয়েকটি গাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার ব্যাপারটি এড়ানো অসম্ভব ছিল না দাবি করে সোলমেয়ার জানান, এতে কেউ গ্রেপ্তার হয়নি।
এ ঘটনার কিছু সময় পরে সাধারণ মানুষের সঙ্গে হিলারির নির্ধারিত একটি সভাস্থলে হাজির হয় একজন বিক্ষোভকারী। সে হঠাৎ মার্কিনবিরোধী একটি ব্যানার হাতে সভাস্থলে দাঁড়িয়ে দুই দেশের মধ্যকার সামরিক চুক্তি বাতিলের দাবি জানায়। সে 'ভিএফএ বাতিল কর' বলে চিৎকার করতে থাকে।
ভিজিটিং ফোর্সেস এগ্রিমেন্ট (ভিএফএ) চুক্তি অনুযায়ী যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক উপনিবেশ ফিলিপাইনে মার্কিন সেনারা সফর করার সময় আইনগত সুরক্ষা পায়। বিতর্কিত এ চুক্তির ফলে মার্কিন সেনারা সেখানে অনেক অপরাধ করেও পার পেয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে। তবে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ বিক্ষোভকে আমলে না নিয়ে বলেন, 'জনগণ নির্ভয়ে যে তাদের মত প্রকাশ করতে পারে'_এটি তারই উদাহরণ।

No comments

Powered by Blogger.