ধরায় এলো শরণার্থী ট্রুডো

শরণার্থীদের পক্ষে কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর অবস্থান নিয়ে নতুন করে বলার কিছু্ নেই। যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা বিশ্ব যখন মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে, তখন তিনি শরণার্থীদের তার দেশে আশ্রয় দিয়ে চলেছেন। এমনই এক শরণার্থী দম্পতি মুহাম্মদ ও আফরা বিলান গতবছর কানাডায় আশ্রয় পান। যুদ্ধবিধ্বস্ত সিরিয়ার দামেস্কের এই দম্পতি মেয়ে নায়া ও ছেলে নায়েলকে নিয়ে কানাডার মন্ট্রিলের শরণার্থী ক্যাম্পে নতুন জীবন শুরু করেন। অন্যান্য শরণার্থীদের স্বাগত জানাতে জাস্টিন ট্রুডো স্বয়ং বিমানবন্দরে হাজির হয়েছিলেন। মুহাম্মদ-আফরা দম্পতির বেলায় সেটা ঘটেনি। তাতে কী, আশ্রয় দিয়ে কানাডার প্রধানমন্ত্রী এই দম্পতির মনের মণিকোঠায় ঠাঁই করে নিয়েছেন। এরই সম্মানস্বরূপ দ্বিতীয় ছেলে দুনিয়ার মুখ দেখলে তার নাম রেখেছেন জাস্টিন ট্রুডো। গত বৃহস্পতিবার ক্যালগরি শহরে আফরার এই সন্তান ভূমিষ্ট হয়। তার পুরো নাম জাস্টিন ট্রুডো আদম বিলান। নামের প্রথম অংশ শুধু জাস্টিন নয়, জাস্টিনট্রুডো। ২৯ বছর বয়সী মুহাম্মদ দামেস্কে নাপিতের কাজ করতেন। সিরিয়ার সেনাবাহিনী তাকে আটক করেছিল। মুক্তি পাওয়ার পর কাজের সন্ধান করতে গিয়ে তিনি আবারও আটক হন। এরপরই কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো শরণার্থী নেয়ার ঘোষণা দিলে মুহাম্মদ সুযোগ কাজে লাগান।
পাঁচ বছরের যুদ্ধের ভয়াবহতা পেছনে ফেলে সপরিবারে রওনা দেন কানাডায়। মন্ট্রিলে কিছুদিন থাকার পর তারা আলবার্টার ক্যালগরিতে যান। কানাডার জীবন সম্পর্কে আফরা বিলান বিবিসিকে বলেন, 'এদেশ অনেক নিরাপদ, এখানে যুদ্ধ নেই। সবকিছুই ব্যতিক্রম, ভালো। সিরিয়ার মতো নয়।' শুরুতে তীব্র শীতের সঙ্গে মানিয়ে নিতে আফরার বেশ সমস্যা হয়েছিল। তবে এখন এসব অঅর তার কাছে কোনো সমস্যা না। স্বামী মুহাম্মদ এবং তিনি নিজে অনর্গল ইংরেজিতে কথা বলতে পারেন। একটি মুদি দোকানে পার্টটাইম কাজ করছেন। সব মিলে ভালো আছেন। এই দম্পতির প্রত্যাশা, একদিন কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো তাদের ছেলে আরেক জাস্টিনট্রুডোকে দেখতে আসবেন। আফরা বলেন, 'তিনি (জাস্টিন ট্রুডো) খুবই ভালো মানুষ। অনেক সহায়তা করেন। কানাডায় আসার সুযোগ করে দেয়ায় তাকে ধন্যবাদ। একই সঙ্গে আমরা কানাডার সব নাগরিককে ধন্যবাদ জানাই।' ২০১৫ সালের নভেম্বরে নির্বাচনে জিতে প্রধানমন্ত্রী হন তরুণ জাস্টিন ট্রুডো। চলতি বছরের জানুয়ারিতে তিনি ৪০ হাজার শরণার্থী নেয়ার ঘোষণা দেন। এদের মধ্যে এক হাজার শরণার্থীকে ক্যালগরি শহরে স্থানান্তর করা হয়েছে। চলতি বছরের জানুয়ারিতে ক্ষমতা গ্রহণ করে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সাতটি মুসলিম দেশের নাগরিকদের দেশটিতে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করেন। সে সময়ে জাস্টিন ট্রুডো ঘোষণা দেন, এসব দেশের নাগরিকরা তার দেশে এলে তিনি স্বাগত জানাবেন।

No comments

Powered by Blogger.